ভাঙ্গা লাটাই, অনেক সূতো
রাজলক্ষী পল্লবন কনষ্টান্টিনো। রাজি। বয়স ২৬। কর্মস্থলে পরিচিত অন্য নামে। কাজ করে এক বিপিও তে দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবান শহরে। ওর স্বামী এম্বরয়ডারী মেসিনিষ্ট। ফ্যাশন টেকনোলজির হার্ডওয়ার এক্সপার্ট। চামড়ার রং কে যদি কোনও মার্ক্স দেওয়া যায় তবে সাদা কালোর ভাল দিকগুলো ওর স্বামীর মধ্যে বিদ্যমান। টল, হুইটি, উইটি এন্ড হ্যান্ডসাম। নাম কনষ্টান্টিনো। ডাক নাম কনী। কনীর বাবা ব্রিটিশ আর মা আফ্রিকান - তাঁরা গত হয়েছেন কনীর কৈশোর প্রাপ্তির আগেই।খুব কষ্ট করে বড় হয়েছে কনী। আজ চার বছর হল ওরা দুজনে প্রেম করে বিয়ে করেছে। রাজির মা কিন্তু এই বিয়ে স্বীকার করেননি। চার বছর হল মা মেয়ের সাথে কথা বলেননা। এই মা না থাকলে রাজি আজ কোথায়! বুকে করে একা এই মেয়ে মানুষ করেছেন আর আজ সেই মেয়ের মুখও দেখেন না!
রাজির জন্ম তামিলনাড়ুর মেট্টুপলায়মে। উটীর কাছে। রাজলক্ষী গোঁড়া তামিল খ্রীষ্টান পরিবারের কন্যা সন্তান। ওর জন্মের পর ওকে নুন দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। ওর বাবা পল্লবন,কাকা সর্বানন ও ঠাকুমা চেরিয়াম্মা চেয়েছিল ওকে মেরে ফেলতে। কন্যা সন্তানের জন্ম সংসারে ঋণের বোঝা বাড়ায়, তাই! এটা তামিলনাড়ুতে খুবই সাধারণ ঘটনা। ভারতের আরও অনেক রাজ্যে এই কুবিশ্বাস স্থায়ী ভাবে বসবাস করে। ওর মা রূকমিণী চায়নি যে মেয়েটাকে মেরে ফেলা হোক। কিন্তু সে কথা সাহস করে বলতে পারেনি। কেবল প্রাণপণে পরমপিতা যীশুকে ডেকেছিলেন রূকমিণী। যীশুর আশীর্বাদ না নাড়ীর বাঁধন, ঠিক কে রাজিকে বাঁচিয়ে রেখেছিল নুনের গামলায় দীর্ঘক্ষণ ছটফট করার পরেও,তা জানা যায়না। কি ভাবে যে বেঁচে গিয়ে ছিল রাজি! সেটা ওর কাছেও এক ধাঁধা। ও জানেনা কে ওকে বাঁচিয়েছিল। চেষ্টা করেছে জানার কিন্তু পারেনি। হয়তো তার নাম গোপন রাখা হয়েছিল যাতে পরিবারের পুরুষ সভ্যদের হাত থেকে সে রক্ষা পায়। আবার এও শুনেছে যে নুনের গামলায় ছাদে রেখে আসার পরই বৃষ্টি নেমেছিল তাই রাজলক্ষী বেঁচে গিয়ে ছিল। আজ আর ওর জানার কোনও ইচ্ছাও নেই যে ও কি ভাবে বেঁচে গিয়ে ছিল। আজ ওর জীবন অনেক বড় পরীক্ষার সামনে দাঁড়িয়ে।
রাজি ওর একবছর বয়স থেকেই থাকে দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবান শহরে। সেখানেই হাইস্কুল পর্যন্ত পড়েছে। ওর বাবা এই শহরে এসেছিলেন তার ছাত্র জীবনে। পড়াশোনা শেষ না করেই দেশে ফিরে এলে মেট্টুপালায়ম গ্রামের মেয়ে রূকমিণীর সাথে তার বিয়ে হয়। পল্লবনের বাবা রামানন কুন্নুরের চা বাগানের লেবার কন্ট্রাক্টর ছিলেন। বেশ স্বচ্ছল অবস্থা ছিল ওদের। পল্লবন কাজ করতে খুব যে একটা ভালবাসত, তা নয়। সুখ, সমৃদ্ধির মাঝে শুধু মজা এই ছিল পল্লবনের জীবনের মোক্ষ। জমা পুঁজি শেষ হতে কয়েক বছর লেগেছিল।
রাজির যখন জন্ম হয় তখন পল্লবনের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। রামানন মারা গেছেন। কুন্নুরের চা বাগানগুলিতে নতুন বাঙ্গালী লেবার কন্ট্রাক্টর এসেছে নারায়ণ মন্ডল। সে এসে প্রায় সব বাগান ধরে ফেলেছে। পল্লবন বেকার বসে সারা দিন দেশি মদ গিলে কন্যা সন্তানের নামে শাপ শাপান্ত করেই দিন কাটাচ্ছিল। একদিন আকণ্ঠ মদ গিলে নারায়ণ মন্ডলের অফিসে ঢুকে খুব অশান্তি করতে গিয়েছিল। নারায়ণের সাকরেদরা একেবারে পেড়ে ফেলে যখন দু’চার ঘা দিয়েছে তখন এক নিস্পাপ শিশুর মত কেঁদে ফেলল পল্লবান। নারায়ণের দয়া হল। নারায়ণ মন্ডল তার শ্যালকের এক কন্ট্রাক্ট লেবার ফার্মে কাজের ব্যবস্থা করে দিল চেন্নাইতে। সেই ফার্মই পল্লবনকে ডারবানে পাঠায়। রাজির জন্মের এক বছর পর আবার ভাগ্যের সন্ধানে পল্লবন আসে ডারবানে লেবার কন্ট্রাক্টর হিসেবে। এসে বছর তিনেক পর চাকরীটা ছেড়ে দেয়। প্রচুর অর্থ উপায় করে পল্লবন। কিন্তু মদের নেশা পল্লবনের! ফাটল বাড়তে বাড়তে ওর সংসারে ধ্বস নামে। রাজি কি পল্লবনের ঘরে রাজলক্ষী হয়ে আসেনি? রাজির জন্মের পরেই পল্লবনের অর্থনৈতিক বাড়বাড়ন্ত! তবে?
ওর বাবা মা আলাদা হয়ে যায় তখন রাজির বয়স আট। খুব ভাল মনে নেই সেই সব দিনের কথা। রাজি গায়ে মাখেনা। ও খুব রোমান্টিক আর আপন ভোলা। জ্ঞান হওয়া ইস্তক রাজি মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে দেখেছে বাবা ফেরেনি আর মা বসে আছে খাবার নিয়ে। একা একা ওর মা নিঃশব্দে কাঁদত। রোজ পল্লবন বাড়ি ফেরেনা সেটা রাজি খুব ছোট্টবেলা থেকেই বুঝত। আর যেদিন রাতে ফিরত সেদিন ও ফিরত মত্ত অবস্থায় আর এসেই চেচামেচি করত, রূকমিণীকে ধরে পেটাত। কোনও কোনও দিন আবার আরেক নতুন মহিলাকেও সঙ্গে নিয়ে আসতো। রাজিকে চুলের মুঠি ধরে তুলতো ঘুম থেকে। ওর মাকে ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিয়ে সেই ঘরেই ওর বাবা আর সেই মহিলা সারা রাত কাটাত। মা আর মেয়ে সারা রাত কাটাত বারান্দায়। কনকনে শীতের রাতেও কোনও ব্যতিক্রম হতনা। সেই কষ্ট রাজিকে আজও কুড়েকুড়ে খায়। ও আজও ভাবে বাবা এরকম কেন!
রাজি উজ্বল শ্যাম বর্ণা। ওর চোখ নিয়ে কালিদাস বা রবীন্দ্রনাথ কাব্য না করে থাকতে পারতেন না। এটা যে ওকে দেখেছে আর কালিদাস বা রবীন্দ্রনাথ পড়েছে সেই স্বীকার করবে। টানা টানা দুই হরিণ চোখে সেই ছোট্ট বেলা থেকে অনেক উত্তরহীন প্রশ্ন নিয়ে রাজি বড় হল। নিতম্ব অতিক্রান্ত লম্বা ঘন কালো চুলের বাহার দেখেই কনী রাজির প্রেমে পড়েছিল। এত সুন্দর শারীরিক গঠন যে রাজিকে সুপার মডেল বলে চালিয়ে দিতে কোনও অসুবিধা হবেনা। নাওমী ক্যাম্পবেল কিছুনা ওর কাছে। রাজি হাইস্কুলে পড়াকালীন একটা দুটো নাম না জানা অন্তর্বাসের ব্র্যান্ডের মডেলিং এর কাজ করেছে। র্যাম্প মডেলিং এর ট্রেনিং ও নিয়েছিল। কনীর সাথে পরিচয়ের পর আর নয়। কনীকে ও কথা দিয়েছিল যে ও আর ওই সব স্বপ্নাবাসে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেনা। রাজিকে কনী ভালবাসে ওর নিজের থেকেও বেশী। কনী ওর জীবনে এসেছিল ওর আঠেরো পূর্ণ হবার আগেই। তখন রাজির চার দিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। কোর্টের অর্ডার থাকা সত্ত্বেও বাবা টাকা পয়সা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ডারবান শহরের মাফিয়া আর পুলিশ পল্লবনের মুঠোয়। ওর মায়ের গভর্নেসের কাজটা টিমটিম করে টিকে আছে। সতেরো বছরের জন্মদিনে বাবার বন্ধু ডেভিড আঙ্কলের স্টুডিয়োতে রিসেপশনিষ্টের কাজের খোঁজে গিয়েছিল রাজি। সেই দিন থেকে প্রায় চার মাস ও দিনের আলো দেখেনি। ডেভিড আঙ্কল দু’তিন মিনিটের মধ্যেই ওর সুডৌল বুকে হাত রেখে ছিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওর স্কার্টের জিপার খুলে দিয়েছিল। বাতের ব্যথায় আক্রান্ত ডেভিডের হাঁটু রাজিকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল। প্রায় অর্ধনগ্ন অবস্থায় রাজি ছুটতে ছুটতে বাড়ি এসে মায়ের বুকের ওপর আছড়ে পড়েছিল। দু'মাস পর রূকমিণী জানতে পেরেছিল আসল ঘটনা। মেয়েকে সুস্থ করে তুলতে প্রায়ই কাউনসেলিং এর জন্য নিয়ে যেতে হত সরকারী হাসপাতালে। সেই হাসপাতালের আউটডোরেই কনী প্রথম দেখে রাজিকে। তার পর লুকিয়ে লুকিয়ে আলাপ। রূকমিণী জানতে পেরে মেয়েকে সাবধান করে দেয়। কিন্তু জীবনের অনেক জটিল অনিশ্চয়তা রাজিকে কনীর আরও কাছে নিয়ে এসেছিল। রাজি ততদিনে তার মন প্রাণ জীবন যৌবন সব কনীকে সঁপে দিয়েছে।
রাজি খুব রোমান্টিক। ওর স্বপ্নের রাজকুমার কনী আফ্রিকান। সে রাজির প্রাণের পুরুষ। কনী রাজিকে খুব ভাল বাসে। কনী দিনরাত পরিশ্রম করে ওদের নতুন ঘর বসাবে বলে। ওভারটাইম করে ফ্যাক্টরীতে। ও শুধু চায় রাজি সুখে থাকুক। চার বছর আগে রাজি নিঃশব্দে ঘর ছাড়ে। চার্চে গিয়ে বিয়ে করে কনীর ভাড়া করা বাসায় ঘর বাঁধা শুরু করে। খুব সুন্দর ছিল সেই দিনগুলো। দিন পনেরো পরে মায়ের কাছে গিয়েছিল ক্ষমা চাইতে। সঙ্গে কনী। রূকমিণী দরজা খুলেও ভেতরে আসতে বলেনি - রাজির পোড়া মুখ আর দেখবেনা, সে কথা জানিয়ে দরজা বন্ধ করে রূকমিণী অঝোরে কেঁদেছিল। খুব কেঁদেছিল সেদিন রাজিও। কনীর সান্ত্বনা আর আদর ওকে শান্ত করেছিল। কিন্তু মাঝে মাঝেই রাজি ভাবে কবে মা আবার ওর সাথে কথা বলবে! রাজি আর কনীর প্রথম সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। কনীকে ডাক্তার বলেছিল রাজি যেন মটর বাইকে করে না ঘোরে। কিন্তু রাজি এত ভালবাসতো কনীর পেছনে বসে ওকে জড়িয়ে ধরে পিঠে মাথা রেখে হারিয়ে যেতে যে সেই নিষেধের কথা মনেই ছিলনা ওদের। মিসক্যারেজ হয়ে গেল। কনীও খুব অপরাধ বোধে ভুগত এর জন্যে। বিয়ের সাড়ে তিন বছর পর আবার যেদিন রাজি অন্তঃসত্ত্বা হবার খবর দিল কনীকে তারপর দিন কনী মটর বাইক বিক্রী করে দিল। এবার ও খুব সাবধানী। বাসে করে কাজে যেতে খুব কষ্ট হয় তবুও কনী ওর সাধের বাইকটাকে বিদেয় করে দিল। রাজির ভাল লাগেনি মটরবাইক বিক্রী হয়ে যাওয়াটা। কিন্তু রাজি এবার মা হওয়ার খুশীতে পাগল হয়ে গিয়েছিল।
ইতোমধ্যে, এই সুখবর পাওয়ার আগেই রাজি এক বিপিও তে চ্যাট অপারেটরের কাজ পেয়েছে। কাঁচা পয়সা। কনী ওকে কাজটা ছাড়তে বলে। বাচ্চার সুষম গঠন ও রাজির স্বাস্থ্যের কথা ভেবে কনী রাজিকে অনেক বোঝাল। কিন্তু রাজি অনড়। ওর বক্তব্য হল বাচ্চা হলে ও আর তখন অনেক দিন কাজে যেতে পারবেনা। কনীর গলা জড়িয়ে ওকে অনেক বোঝাল যে এখন ওদের অনেক র্যান্ডের দরকার। ওদের বাচ্চা যেন কোনও কষ্ট না পায়। রাজির নিজের শিশুকালের কথা মনে পড়ে। জেদ ধরে যে এই কাজ সে ছাড়বেনা। কনীও জানে যে সে এমন কিছু রোজগার করেনা যে রাজির কথার ওপর জোর করবে।
রাজির কাজটা রাতে। ওর বাসায় ফিরতে ফিরতে ভোর হয়ে যায়। আর কনী সারারাত এপাশ ওপাশ করে দুশ্চিন্তায়! দুজনের কাছেই চাবি থাকে মেন ডোরের। ভোরের দিকে চোখটা লাগে কনীর আর তখন রাজি এসে বিছানায় গা এলিয়ে দেয়। অঘোরে ঘুমায়। ক্লান্ত কনী এক মনে রাজিকে দেখে আর ভাবে ওদের সন্তান একটু একটু করে বাড়ছে রাজির শরীরের মধ্যে। রাজির মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে কনী আর মনে মনে বলে ’তুমি সুন্দর, তোমার মতই সুন্দর যেন এক কন্যা সন্তান যেন হয় আমাদের।’ ওদের দিনের রুটিন বিপরীতমুখী হলেও ওদের মধ্যে দিনে অনেকবার ফোনে কথা হয়। প্রতিবারেই কনী জিজ্ঞাসা করে রাজি খাবার খেয়েছে কিনা, ঠিক মত জল খাচ্ছে কিনা, ফল খেয়েছে কিনা! রাজির সাথে ফোনেই রসিকতা করে যাতে ও বেশ ভাল মেজাজে থাকে। এক কথায় কনী এক উদ্বিগ্ন ও ভাল হবু বাবা হওয়ার চেষ্টা করে যায়।
এরই মধ্যে কনী নিজে বুঝতে পারে ও কি রকম যেন একা হয়ে যাচ্ছে! ওর মন শরীরের ভালবাসা চায়। কিন্তু রাজির কাজের পরিশ্রমের পর আর ডাক্তারের সাবধান বাণী কনীকে নিষেধ করে সর্বক্ষণ। কিন্তু ভেতরে এক তৃষ্ণার্ত প্রাণ ও এক অভুক্ত মন কনীকে জ্বালায়। আজকাল কনী রাতে একা থাকে। ঘুম আসেনা। মাঝে মাঝে নেটে গিয়ে বিভিন্ন সাইট ব্রাউজ করে। ভাল লাগেনা। কনীর এক দম ভাল লাগেনা এই জীবন। আজ রাতেও কনীর ঘুম আসছেনা। কম্প্যুটার অন করে নেটে এসে বসেই কনীর মনে হল রাজিকে একটা ফোন করে, কিন্তু ওদের এখন পিক আওয়ার্স চলছে। এই সময় চ্যাটে লোড খুব বেশি থাকে। রাজিই বলেছে ওকে। কালই রাজিকে বলবে যে ওদের দরকার নেই অত বেশি র্যান্ডের। রাজিকে কাল থেকে আর কাজে যেতে দেবেনা কনী। জোর করে নয়, ওকে বুঝিয়ে বলবে যে ওদের সংসারের এই বাঁধুনির সময় ওদের আলাদা থাকা ঠিক নয়।
ঘুম আসছেনা কনীর। নেটে ঢুকে একটার পর একটা সাইট ছেড়ে চলে যায় কনী। একবার ভাবে সেক্স সাইটগুলোতে গিয়ে ঢুকলে কেমন হয়! কোনও দিন যায়নি। কিন্তু কনী এভাবে র্যান্ড নষ্ট করবেনা। ওদের সন্তান আসছে। ওদের সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের জন্যে ওর প্রিয়তমা রাত জেগে কাজ করছে।
কনী গুগলে গিয়ে কিছু ফ্রি সেক্স সাইটের খোঁজ পেল। বেশ মজার লাগল ওর। লোকে কি করে বোকার মত ছবি বা ভিডিও দেখে এত র্যান্ড নষ্ট করে! কনী বেশ মজা পেল। একটা সাইটে বলছে যে ওদের মেয়েগুলো সব বেহেস্তের হুরী পরী। তাদের শরীরের বর্ণনা, তাদের মনের চাহিদার বিবরণ পড়ে কনী ভাবে এরা কি ভদ্র ঘরের মেয়ে! এই সাইটটা বেশ রগরগে। ডবলু ডবলু ডবলু সেক্সস্ট্রীমমেট ডট কম।এখানে ফ্রি গ্যেষ্ট চ্যাট করা যায়। মানে এখানে স্বল্পাবাস উলঙ্গিনি উদ্ভিগ্না পীন পয়ধরা স্ফীত নিতম্বিনী বুবুক্ষু মেয়েরা ভিডিও চ্যাট করে তাদের গ্যেষ্টের সাথে। তারপর তাকে প্রাইভেট শো এর জন্যে আসতে বলে। সেখানে তুমি যা খুশী করাতে পার তাকে দিয়ে। অবশ্যই র্যান্ডের বিনিময়ে। তাও আবার ডলারে পে করতে হয়। ব্যাপারটায় বেশ আদিম মজা পেল কনী। একবার ভাবল রাজিকে ফোন করে বলে যে সে এখন কি করছে। রাজির ফোন এই সময় মিউট করা থাকে। রাজি মিসড কল দেখে ফোন করে। আবার ভাববেনা তো এত রাতে কনী কেন ফোন করেছে! রাজির উদ্বেগ বাড়বে এমন কোনও কাজ কনী করবেনা। সে করতে পারেনা। অনেক ভেবে কনী ফোন না করার সিদ্ধান্ত নিল। কাল সকালে রাজিকে বলবে কনী ওর নতুন অভিজ্ঞতার কথা।
কনী একজন উদ্ভিগ্নাকে বলল - তুমি আমার জন্য কি করতে পার? সে প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তার উর্বর বক্ষচূড়া নাচিয়ে দেখিয়ে দিল ওকে। বেশ! বিনিপয়সায় এত মজা! মজা? কনীর মজা লাগছেনা। তবুও কনী একমুখী গতি পথে চলতে থাকল। চলতে চলতে দেখল একটি মেয়ের কোনও ছবি নেই। লাল সাটিনের সাজানো বিছানার ছবি রাখা আছে হাইপার লিঙ্ক থামব-নেল উইন্ডোতে। লেখা আছে ‘সেক্সিইন্ডিয়ানপোলরাইডার’। কনী ক্লিক করতেই দুই শ্যাম-সুডৌল স্তনের আমন্ত্রণ।
- ’হাই। হাও আর ইউ? ডু ইউ হ্যাভ ক্যাম?
কনী লেখে - আই য়্যাম গুড। নো ক্যাম।
‘সেক্সিইন্ডিয়ানপোলরাইডার’ - টি। ওয়াই। অর্থাৎ থ্যাঙ্ক ইউ -
বেশ ভদ্র মনে হল মেয়েটিকে কনীর।
কনী বলল - তোমার মুখ দেখতে চাই।
‘সেক্সিইন্ডিয়ানপোলরাইডার’ - কাম প্রাইভেট - আমি ইন্ডিয়ান। তুমি আমার কাছে যা পাবে তা আর কোথাও পাবেনা।
কনী- মুখ না দেখে প্রাইভেটে যাই কি করে? মুখ দেখাও আগে-
‘সেক্সিইন্ডিয়ানপোলরাইডার’ - তুমি কি জান তুমি প্রেগন্যান্ট সেক্সশপে ঢুকে পড়েছ?
কনী- সেটা আবার কি? প্রেগন্যান্ট মেয়েদের তো রেষ্টে থাকার কথা। তুমি -?
‘সেক্সিইন্ডিয়ানপোলরাইডার’ - প্রাইভেটে এলে সব বলব। এস হানি।
কনী- না। আমি মুখ না দেখলে তার সাথে কথাই বলিনা আর তুমি সেক্স করার কথা বলছ?
‘সেক্সিইন্ডিয়ানপোলরাইডার’ - তুমি খুব ভাল। আজ প্রথম বুঝি? সব ঠিক হয়ে যাবে আস্তে আস্তে।
প্রাইভেটে এস হানি প্লিজ।
কনী- বললাম না আমি তোমার মুখ দেখতে চাই আগে।
‘সেক্সিইন্ডিয়ানপোলরাইডার’ - তুমি বরং আমার চব্বিশ সপ্তাহের বেবি কে দেখ আমার বেলির ভেতর। আমি কিন্তু সব টয় ইউজ করি। তুমি যা বলবে আমি তাই করব। মেয়েটি কামাতুর ভাবে ওর স্তনের ওপর হাত বোলাতে থাকে আর কনীর হার্টবিট বাড়তে থাকে।
কনী- তুমি যে এই কাজ কর সেটা তোমার স্বামী জানে?
‘সেক্সিইন্ডিয়ানপোলরাইডার’ - প্রাইভেটে এসো, সব বলব। প্রতি মিনিট ২ ডলার। তোমার একাউন্ট আছে?
কনী- না আমার একাউন্ট নেই আর ইচ্ছেও নেই।
‘সেক্সিইন্ডিয়ানপোলরাইডার’ - প্রাইভেটে আসবে, না তোমাকে ব্লক করে দেব?
কনী- তোমার ইচ্ছে। আমি মুখ না দেখে কোনও কথা বলবনা।
‘সেক্সিইন্ডিয়ানপোলরাইডার’ - আচ্ছা আমি যদি মুখ দেখাই তুমি তাহলে প্রাইভেট শোয়ে আসবে হানি?
কনী-কথা দিতে পারিনা।
‘সেক্সিইন্ডিয়ানপোলরাইডার’ - হানি হ্যাঁ বল দেখবে কত মজা!
কনী- তোমার সন্তানের হবু বাবা জানে যে তুমি এই কাজ কর?
‘সেক্সিইন্ডিয়ানপোলরাইডার’ - ও জানে যে আমি কল সেন্টারে কাজ করি। ওকে আমি খুব ভালবাসি। ওকে বলতে পারবনা আমি এই কথা।
কনী- তবে তুমি এ কাজ কর কেন?
‘সেক্সিইন্ডিয়ানপোলরাইডার’ - আমাদের সন্তান আসছে - আমি ওর ওপর আর বেশি চাপ দিতে চাইনা। ও এমনিতেই ওভারটাইম করছে, আমরা দুজনেই চেষ্টা করছি আমাদের সন্তানের ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে।
কনী- এটা তার উপায়? বলেই কনীর রাজির কথা মনে হল। সেও তো এখন কল সেন্টারে ব্যস্ত তবে ওর কাজ হল শেয়ার মার্কেটের তথ্য আদান প্রদান করা। জান, আমার স্ত্রীও অন্তঃসত্ত্বা?
‘সেক্সিইন্ডিয়ানপোলরাইডার’ - তুমি নিশ্চয় ওর খুব খেয়াল রাখ?
কনী- রাখি। ও কাজ করে একটা বিজনেস কল সেন্টারে। আমি ওকে বলব কাজ ছেড়ে দিতে। আমি যাই। বাই-
‘সেক্সিইন্ডিয়ানপোলরাইডার’ - এতক্ষণ কথা বললাম তোমার সাথে, আমার সুপারভাইজার আমাকে লাল দাগ মেরে দেবে আজ এর পর যদি তুমি প্রাইভেটে না আস- প্লিজ হানি-
কনী- আগে মুখ দেখাও-
‘সেক্সিইন্ডিয়ানপোলরাইডার’ - এই নাও দেখ -
কনীর চোখের সামনে স্ক্রীনটা কাল হয়ে গেল। চোখের সামনে হাজার হাজার কাল কাল রিং। কোথাও একটুও আলো নেই। কনীর বুকটা ফেটে যাচ্ছে - সে চীৎকার করে উঠল - অসম্ভব - চীৎকার করতেই থাকল -
ততক্ষণে ‘সেক্সিইন্ডিয়ানপোলরাইডার’ কনীকে ব্লক করে দিয়ে চলে গেছে।
সারা রাত কনী পাগলের মত ভাংচুর করেছে সারা বাড়ি। সারা বাড়িতে একটাও জিনিষ আস্ত নেই।
নিজের সারা শরীরকে আহত, ক্ষত বিক্ষত করেছে।
রাত তিনটে নাগাদ সব সব গুছিয়ে রাখল আবার। দেখে মনেই হবেনা কনী কি মানসিক অবস্থার মধ্যে আছে! দিব্যদৃষ্টিতে নিজের কবরের চার ফুট বাই আট ফুট গর্ত দেখতে পেল কনী। সব যতটা পরিপাটী করে রাখা যায় তাই রাখল কনী। অনেকটা নিষ্ঠাভরে কবরে মাটী দেবার মত।
ভোর চারটেয় রাজি ফিরল। দেখল কনী বারান্দায় পায়চারী করছে। ওর কব্জি থেকে রক্ত ঝরছে।
বিছানা টানটান করে পাতা। 'কি হয়েছে হানি?' রাজির কথা কনীর কানে গেলনা। বলল, কাল সকালে ল’ইয়ার কে ডেকেছি। এখন শুয়ে পড়। ঘুম জড়ান গলায় রাজি বলল - ল’ইয়ার কেন?
কনী বিড়বিড় করে বলল - আমার মূর্খতার শাস্তি পাবার জন্যে।
ডিসেম্বর ১২, ২০০৬
মুম্বাই