নারী নবমী


ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞানে নারীর ন'ভাব


ম্যানেজমেন্ট শব্দের বাংলা প্রতিশব্দটি ঠিক জুতসই নয়। ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞান। কেমন যেন
চাঁদসদাগরের বাঁ হাতে মা মনসাকে পূজো দেওয়ার মত। নিরুপায়, তাই ব্যবহার করতে হয়। তবু এই অনাদরের শব্দটি নিয়েই এবার লেখা। এই লেখার উৎস ও উপাদান এসেছে নারী জীবন ও দশভুজার ন'দিন ন'রাত্রির পূজার তত্ত্ব থেকে। বেশ আবিষ্কারী মননে কথাটা বলে ফেললাম। পড়ে ভাল লাগলে পাঠক খুশী। পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচারের মধ্যে না গিয়ে তত্ত্বটুকুর স্বাদ নেবার চেষ্টা করলে আর নারীর ন'ভাব যাঁরা বোঝেন তাঁদের মতামত পেলে লেখক খুশী।
 

নারী চিরকাল সংসারে ও সমাজে সব কর্তব্য ও দায়িত্ব পালন করে এসেছেন বিভিন্ন ভূমিকায়। শাসন করেছেন যত তার থেকেও বেশি শাসিতা হয়েই থেকেছেন। কিন্তু নারী কি সত্যিই শাসিতা না তিনিই আসল শাসক? পুরুষ শাসন করতে ভালবাসে। শুধু তাই নয় শাসন না করতে পারলে তার জৈব অস্তিত্ব প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে পড়ে। শাসক না শাসিত সে এই প্রশ্ন জাগে প্রধানতঃ পুরুষের মনে। একেবারে মেয়েবেলা থেকে নারী জীবনের ধারা পথ ধরে গুরুমায়েরা নানা সামাজিক অনুশাসন শিখিয়ে থাকেন মেয়েদের। নারী তাই পরম্পরানুসারে সামাজিক অনুশাসনের অনুলম্বী। শাসন করার তত্ত্ব পুরুষই আবিষ্কার করে - কিন্তু নারী ছাড়া এক পা ও চলেনা সেই জন্ম লগ্ন থেকে। তাহলে সমাজে বা ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞানে নারী কে? আসলে তিনি কে? চাক্ষুষ তিনি হলেন -
 

কন্যা >কিশোরী > ভগ্নী > তরুণী > যুবতী > বান্ধবী > মাসী > পিসি > বাহিরে কর্মরতা > প্রেমিকা > সহধর্মিনী > গৃহকর্ত্রী > গৃহরচয়িত্রী > শ্যালিকা > ননদিনি > মাতা > বৌদিমাতা > স্রষ্টা > দুষ্টা > রম্ভা > মেনকা > উর্বশী > শশ্রুমাতা > মাতামহী>পিতামহী > প্রকৃতি > আকৃতি > প্রগলভা >প্রবীণা > প্রৌঢ়া > বৃদ্ধা ?


নারী কে? নারী কি? এই নিয়ে লিখতে বসার অভিপ্রায়ে এই প্রশ্নোথ্নান নয়। নারী কে সম্পূর্ণ রূপে জানার সাধ পুরুষের থাকতে পারে কিন্তু সাধ্য তার নেই। প্রাজ্ঞ ঋষি মনু এ নিয়ে কোনও তর্কের অবকাশ রাখেননি। কিন্তু নারীর যে দিকটা আমাদের অনেকের জানা নেই (থাকলে মাফ করবেন এবং আর পড়বেন না এ' লেখা) সেটা হলো ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞান বা ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সের সঙ্গে নারী মনের নয়টি ভাবের ওতপ্রোত সম্পর্ক।
Nine modes of women that makes management science enriched.

 

গবেষকেরা প্রমা করেছেন মেয়েরা কেনাকাটায় কি পরিমান সুদক্ষ। মার্থা বার্লেটা তার - মার্কেটিং টু উইমেন - হাউ টু আন্ডারস্ট্যান্ড, রীচ য়্যান্ড ইনক্রিজ ইওর শেয়ার অফ দ্য ওয়ার্লড'স লার্জেস্ট মার্কেট সেগমেন্ট’ এই গ্রন্থে লিখেছেন, আমেরিকার মেয়েরা একক বা যৌথ ভাবে শতকরা সাতাশি ভাগ (৮৭%) বাড়ির মালিক, তাঁরা শতকরা একষট্টি ভাগ (৬১%) মুখ্য গৃহরচায়ক বা গৃহ শোভাবর্দ্ধক সামগ্রীর কেনার সিদ্ধান্ত নিজে নেন। ছেষট্টি শতাংশ (৬৬%) হোম কম্পিউটার এবং আশি শতাংশ (৮০%) স্বাস্থ্য পরিষেবা কেনার সিদ্ধান্ত তাঁদের। আমেরিকার মেয়েরা পুরুষের থেকে বেশি ক্রেডিট কার্ডের মালিক ও ব্যবহারকারী। আমেরিকার সত্তর শতাংশ (৭০%) সফল নতুন ব্যবসা শুরু করেন মেয়েরাই। আমাদের দেশেও এই ছবির প্রতিফলন বেশ ভাল করে দেখা যাচ্ছে গত দু’দশক ধরে। সফল কিছু সাধারণ মেয়ের নাম রাখছি এখানে। বায়োকন এর কিরণ শ’ মজুমদার, পেপসির ইন্দ্রা নুয়ী, থার্ম্যাক্সের অনু আগা, শা'জ এর শেহনাওয়াজ হুসেন, বালাজী টেলিফিল্মসের একতা কাপুর, ফ্যাশান ইন্ডাস্ট্রীর রিতু কুমার, শর্বরী দত্ত, রীনা ঢাকা বা নীতা লুল্লা বা আমাদের ধারে কাছে আরও অনেক নাম না জানা মেয়ে যাঁরা একেবারে সাধারণ মধ্যবিত্ত জমি থেকে উঠে এসে কিছু করে দেখিয়েছেন। এদের সবার মধ্যে একটা ব্যাপার সমবিদ্যমান। তা হলো সাফল্য। এঁদের মধ্যে সাফল্যের গুণগত মান ও গতি এই দুইই বেশ প্রশংসার যোগ্য।


এদেশে সর্বভারতীয় ক্রেতা গবেষণা বা কনজিউমার্স রিসার্চ বলে সচল কিছু নেই তাই - কিন্তু সাদা চোখে সৎ দৃষ্টি দিয়ে কি এই রকমই একটা চিত্র অন্ততঃ আর্বান ইন্ডিয়ায় আমরা দেখতে পাই না যেখানে নারীই ক্রয়-সিদ্ধান্তের মূলে অবস্থিতা?


মনে রাখতে হবে আটাশ শতাংশ ভারতীয় খাঁটি শহুরে নাগরিক বা আর্বান সিটিজেন। রিসার্চের পক্ষে সেটা আদৌ অবজ্ঞা করার মত নয়। গ্রামী ভারতও এর থেকে পিছিয়ে নেই তার কারণ হলো গ্রাম দিয়েই শহর ঘেরা। স্বাধীনতার পর ১৯৫১ সালে শহুরে ভারতীয় ছিলেন মাত্র ছয় শতাংশ আর ২০০১ এর জনগণনা অনুযায়ী তাঁরা আটাশ শতাংশ। এই বৃদ্ধিই বলে দেয় গ্রামের চিত্রটি খুব আলাদা কিছু নয়। এই পরিবর্তন গ্রাম কে বাদ দিয়ে হয়নি। সামগ্রী এক না হলেও কিছু কেনার সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা চিরকালই মেয়েদের বেশি আর সেটা আকর্ষণীয় ভাবে বেড়ে চলেছে। আর বেশী তত্ত্বের কচকচি না করে যার যার নিজের সুখী গৃহকোণে নজর দিলেই তো একটা কথা পরিষ্কার হয়ে যায়। আপনার ঘরের সারা মাসের প্রয়োজনীয় পদার্থগুলি কেনেন কে? অবশ্যই আপনার গৃহকর্ত্রী। তিনি জায়া, মাতা বা ভগ্নী যেই হোন না কেন - তিনি মূলতঃ নারী। পুরুষ চায় তার সীমিত সামর্থ্যে নারী তার সংসারকে সুজলাং সুফলাং করে রাখুন। আর সেই জন্যেই নারীকে একজন দক্ষ ক্রেতা হয়ে উঠতে হয়। এটাও ম্যানেজমেন্টের শিক্ষা - রিভার্স প্রেসার পয়েন্ট টীচার বলে যাকে আমরা জানি। আর মেয়েরা শপিং করার প্রতিভার সংগে দরাদরী বা বারগেইন করার জিন নিয়েও জন্মায়। ওটা পুরুষের বল গেম নয়।


নারীর সাথে ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞানের সম্পর্ক কি এই নিয়ে কথা শুরু হয়ে ছিল। মনে আছে তো?


ম্যানেজমেন্টের একটা মুখ্য লক্ষ্য হলো উৎপাদনের খরচ তুলনামূলক ভাবে সংকুচিত করা আর অর্থাগম বা রেভিনিউ আর্নিং অতুলনীয় ভাবে বাড়িয়ে তোলা। ওয়াই কার্ভ তত্ত্ব। তাহলে কাঁচা মাল থেকে শুরু করে উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সব সামগ্রী কেনার দিকটা কেন যথাযোগ্যা নারীহস্তে সমর্পিত নয়? সেখানে কেন পুরুষের কর্মসংস্থানের পরম্পরা? ভেবে দেখা যায় কি? কোর কম্পিটেনস এর তত্ত্ব।


নারী কি? আর কি কি তিনি? তাঁকে সাদা চোখে সাধারণত শারীরিক বা জৈবিক অস্তিত্ব হিসেবে দেখেই আমাদের সমাজ - মানে পুরুষ - অভ্যস্ত। কিন্তু নারীর অন্তস্থলে যে নয়টি ভাবরূপ আছে তাকে একবার বিশ্লেষণ করে দেখলে দেখবেন ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞানের কত রহস্য লুকিয়ে আছে তাঁর মধ্যে! বেশ আশ্চর্য লাগছে - তাই না? আশ্চর্য না লাগলে এখানেই ইতি টেনে অন্য কাজে মনোনিবেশ করুন। দুর্গা পূজা বা জগদ্ধাত্রী পূজা বা অন্নপূর্ণা পূজার ন’দিন নয় রকম পূজা হয়ে থাকে। তার প্রত্যেক দিনকে এক একটি
তিথিতে ভাগ করা হয়। প্রতিদিনের পূজায় দেবী বিশেষ রূপে বন্দিতা। প্রতিপদ, দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, চতুর্থী, পঞ্চমী, ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী। দশমী তে বিদায় জানান হয় মা কে। দশমীর কথা এখানে বলার কোনও অবকাশ নেই কারণ বিদায়ের পর সব গোছগাছ করতে করতে পাঁচ ছয় দিন লেগে যায়। আবার কর্ম্মী তিথি শুরু সেই প্রতিপদে এসে! মনে রাখতে অমাবস্যা ও পূর্ণিমা এই দুই পদেই প্রতিপদ আসে আর এই চন্দ্রমাসের সঙ্গে নারীর জীবন অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। পৃথিবীর সব দেশে। এর কোনও ব্যতিক্রম হয়না। এবারে ফিরে আসা যাক আমার দেশ ভারতবর্ষে।


প্রতিপদে অর্থাৎ শুরুতে নারী এক বর্ধিকা-শিক্ষিকা বা নার্চারার। এব্যাপারে কোনও দ্বিমত আছে কি -না নেই। শিক্ষায়, প্রথমে মাতৃ জঠর ও তার পরে মাতৃক্রোড়ই হল প্রথম ক্রীড়াভূমি। সন্তান জন্মের অনেক আগেই সে প্রকাশ ও আদান প্রদান বা কমিউনিকেট করতে শিখে যায় তার গর্ভধারীনির সঙ্গে। কি ভাবে তার খিদে পেলে হবু মাকে খেতে হয় বা তার কোনও অস্বস্তি হলে মাকে জীবন প্রণালীতে অদল বদল করতে হয় তার থেকেই বোঝা যায় যে কমিউনিকেশান শুরু হয়ে গেছে বর্ধিকা-শিক্ষিকা বা নার্চারার এর মধ্যে তার অন্তস্থ অস্তিত্বের সঙ্গে। বেশ মজার না?
 

আর জন্মের পর তো মা ছাড়া এক পাও চলেনা। সন্তান মুখ্যতঃ বুনিয়াদি শিক্ষা পায় মায়ের কাছ থেকেই। সন্তানের কাছে মা হল গিয়ে সত্য ও বাবা এক বিশ্বাস। কারণ মা যাকে বাবা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন তিনিই পিতা। তাই না? গর্ভাধারণেই মা সন্তানের এক কোচের ভূমিকা পালন করা শুরু করেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তা চালিয়ে যান।

সন্তানের প্রথম শিক্ষিকা হিসেবে মা তাঁর সন্তানের কি কি করণীয় আর কি কি নয় তা শিখিয়ে দেন সহজ করে। এবার দেখুন কি সাদৃশ্য? প্ল্যানিং বা পরিকল্পনার স্তরেই নতুন প্রোজেক্টের সঙ্গে যুক্ত মানবশক্তিকে শিক্ষা দিতে বা ট্রেইন করতে হয়। না হলে প্রজেক্ট মুখ থুবড়ে পরবে। প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্টের একটি মূল কাজ হল সংশ্লিষ্ট মানব সম্পদকে শিখিয়ে দেওয়া ও নেওয়া কি করে আগে বাড়তে হবে। SOP ও ফ্লো-চার্ট এর মাধ্যমে তাই করে থাকেন ম্যানেজারেরা। মাতৃত্ব নারীর যত্নশীলা প্রকৃতিকে উন্মোচিত করে। ম্যানেজারকেও যত্নশীল ও এক বর্ধক শক্তি হতে হয় তার মানব সম্পদকে তৈরী করে নিতে।
মা চান তাঁর সন্তান ঘরের শিক্ষা নিক - প্রতিবেশীর নয়। মা চান সন্তান প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বাইরে না থাকুক - ঘরেই থাকুক। ব্যবসায়ীও একই ভাবে কর্ম্মচারী, ক্রেতা ও অংশীদারদের শিখিয়ে নেয় কি করে সেই সংস্থাকে বুঝতে হবে বা তার প্রগতির পথে গতি আনতে তাদের কি ভূমিকা থাকবে।
ব্যবসায়ী চান তাঁর কর্ম্মচারী, ক্রেতা ও অংশীদারদেরা তাঁর সঙ্গেই থাকুন। কি দারু এক সামঞ্জস্য -তাই না?

দ্বিতীয়ায় নারী এক অস্পর্শনিয়ের প্রেমিকা (লাভার অফ ইন্ট্যঞ্জিবল)। প্রেম শব্দটির জন্ম কার হাতে হয়েছিল জানিনা কিন্তু এই শব্দ-বোধের মধ্যে এক পরম নারীত্ব লুকিয়ে আছে বলে আমার মনে হয়।
নারী অনেক স্বপ্ন দেখেন যাকে স্পর্শ করা যায়না। পুরুষ তাকে চঞ্চলা বলে পাশে সরিয়ে বা অনুশাসনের জালে আটকে রাখেন। কিন্তু নারী স্বাভাবিকই এক অস্পর্শনিয়ের প্রেমিকা বা লাভার অফ ইন্ট্যঞ্জিবল। কি রকম স্বপ্ন তাঁরা দেখেন বা সেই স্বপ্নকে কি করে ছুঁয়ে থাকেন সারা জীবন এটা জানা সত্বেও যে সব স্বপ্নই বাস্তবে তিনি সাকার করতে পারবেন না। এর খারাপ দিকটা সবার জানা আছে কিন্তু ভাল দিকটা ম্যানেজমেন্ট সায়েন্স কাজে লাগাতে পারে। আমরা যারা ম্যানেজমেন্ট টীচার তারা বেশ গুরু গম্ভীর কণ্ঠে বলে থাকি - ড্রীম বিগ - জামশেদজী বা জে আর ডি টাটা বা ধীরু ভাই আম্বানীর উদাহর দিয়ে থাকি পড়াতে গিয়ে কিন্তু কি করে 'ড্রীম বিগ’ করতে হবে তা বোঝাতে গিয়ে অনেক কথা বলি কিন্তু সহজ কথাটা বোঝাতে পারিনা। স্বপ্নের প্রেমে পড়তে হয় নতুবা স্বপ্ন ফাঁকি দিয়ে পালায়। অস্পর্শনিয়ের প্রেমিকা নারী স্বপ্নের প্রেমে পড়েন। নারী যা স্বপ্ন দেখেন তার প্রেমে বুঁদ হয়ে পড়েই থাকেন সেটি সাকার না হওয়া পর্যন্ত। কিন্তু বাইরে তার কোনও প্রকাশ ঘটেনা। ড্রীম বিগ তত্ত্বটি বোধ হয় একজন নারীই পারেন তাঁর প্রেমিকা ত্তা দিয়ে বোঝাতে।
আবার দেখুন একটা খুব সুন্দর সাজানো ফুলের তোড়া নারীকে উপহার দিলে তিনি তাঁর ঘরে নিয়ে গিয়ে সেই ফুলের তোড়াকে বেশ কিছুদিন বাঁচিয়ে রাখেন আর তার পর আর অনেক দিন সেই ফুলের তোড়া যিনি দিয়েছিলেন তার সম্পর্কে অনুভূতিকে লালন করেন একান্তে- এটা অস্পর্শনিয়ের প্রেমিকা হওয়ার সুবাদে নারীই পারেন। একজন পুরুষকে বিশেষ কেউ ফুলের তোড়া দিলে সেটা অনুষ্ঠানের পর বাড়ি গিয়ে পৌঁছায় কি? অফিসের কাবার্ডে বা গাড়ির ডিকিতেই তার গংগা প্রাপ্তি হয়ে থাকে। ভেবে দেখুন বুকে হাত দিয়ে। এই অস্পর্শনিয়কে লালন করা বা তার থেকে উদ্ভুত আচরণ নারীকে তার চারপাশের সম্পর্কগুলোকে বেঁধে রাখতে সাহায্য করে - শেখায় আরও নতুন কিছু অস্পর্শনিয়ের স্বাদ।
কোনও মহিলা হিউম্যান রিসৌরস ম্যানেজার এর সঙ্গে তাঁর পুরুষ প্রতিযোগীর পারফরম্যান্সের এর যদি একটা গ্র্যাফিক্যাল তুলনা করা যেত কতকগুলো সাধারণ মাপকাঠির নিরিখে তাহলে আরও ভাল করে বোঝা যেত। লেডি এইচ-আর-ডি হেড বেশি সফল কর্মচারীদের উৎপাদিকা শক্তি বৃদ্ধি করতে, তাদের দীর্ঘ কাল সংস্থায় কাজে ব্রতী রাখতে, নতুন নতুন প্রতিভা সংগ্রহ করে আনতে এটা আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। তথ্য দেওয়া সম্ভব নয় গোপোনীয়তার স্বার্থে। আমি এখনও করে খাচ্ছি - তাই। তবে যদি চোখ মেলে তথ্য জোগাড় করতে চান তবে তাকে বাইরে যেতে হবেনা। নিজের কর্মস্থলেই পেয়ে যাবেন। একটু চোখ কান খোলা রাখুন। এই যে নারীর এক অস্পর্শনিয়ের প্রেমিকা বা লাভার অফ ইন্ট্যঞ্জিবল হওয়ার ভাব-প্রকৃতি একে কাজে লাগালে ম্যানেজমেন্টের এফিসিয়েন্সি বাড়বে বই কমবেনা।
 

তৃতীয়ায় ধৈর্যের উপমা হিসেবে নারীর কোনও তুলনা নেই। চল্লিশ সপ্তাহ বা দশ মাস দশ দিন ধর অপেক্ষা করার থেকে আর কি কোনও বড় প্রমা দরকার? কাজ কর্ম বন্ধ করে দিয়ে বসে থেকে নয়। গর্ভবতী মহিলা কাজ করেন ঘরে বাইরে কিছুমাত্র ব্যাতিক্রম না ঘটিয়ে। আমি প্রচুর কর্মরতা সহকর্মীনীদের দেখি তাঁরা কাজ করেন শেষ পর্যন্ত। সেই বিশেষ দিনটির মাত্র ১০-১৫ আগে মেটারনিটি লীভ এ যান। তাঁদের কিন্তু অফিসের পরে বাড়িতে গিয়েও কাজ করতে হয়।
যুদ্ধে যাওয়া সৈনিকের প্রেমিকা, স্ত্রী, মা বা ভগ্নীর সাথে কথা বলুন জানতে পারবেন ধৈর্যের উপমা কেন বলা হয় নারীকে। কোনও প্রোষিতভর্তৃকাকে জিজ্ঞাসা করুন তিনি বুঝিয়ে দেবেন কেন তিনি ধৈর্যের উপমা হতে পারেন। জীবনের সব সূক্ষ্ম, স্থূল, স্থাবর ও জঙ্গম সব কিছুর কি অসম্ভব আত্তীকরণ এক জনের মধ্যে যে তিনি হয়ে ওঠেন ধৈর্যের পরম উপমা। ছটফট করা নয় চটপট করা। কর্মরতা নারী চটপট করে কাজ করেন কিন্তু ছটফট করে সব ভেস্তে বসে থাকেননা। এটাও আমি আমার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। চোখ কান খোলা রাখুন আপনার নিজের ঘরেই এর প্রমাণ মিলে যাবে যদি না এখনও মিলে থাকে। এর থেকে ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সের কি লাভ? মালটি টাস্কিং। শত অসুবিধা সত্ত্বেও - শারীরিক বা মানসিক - অনেক কাজ একসাথে সুষ্ঠুভাবে করতে হলে ধৈর্যশীল হওয়া দরকার - কুঁড়ে নয়। একজন গৃহবধু বা বাহিরে কর্মরতা নারীর কাছেই মালটি টাস্কিং শেখা উচিত - বিজনেস স্কুলে গিয়ে নয়। মালটি টাস্কিং ট্রেনার করে নিন শিক্ষিতা গৃহবধু বা কর্মরতা মহিলাদের, দেখবেন উৎপাদন বাড়ছে আর কাজের গুগত মানও বৃদ্ধি পাচ্ছে।


চতুর্থীতে সুচারুশীলা সৌন্দর্য বিজ্ঞানী (এস্থেটিক্স)। কি মুস্কিলে পড়েছি যে ব্র্যাকেটের মধ্যে সহজ করে লিখে দিতে হচ্ছে! বাংলা ভাষায় প্রকাশ কর তো আজ কাল অনেক বাঙ্গালী বলেন - বাংলায় বলুন।
তাই সব এর পাশে ইংরেজীতে লিখতে হচ্ছে। ওটাই তো এখন বাংলা ভাষা। নারীর চারুলতা হওয়া তো এক ক্রোমোজোমাল গুণ। ঘর সাজানো বা জীবনকে সাজানো, নতুন কিছুর ডিজাইন থেকে শুরু করে জীবনের সর্বত্রই চারুশীলা নারী বিদ্যমানা। সভ্যতার বিকাশে সৌন্দর্যের আবেদন নারীই এনেছে - পুরুষ এখানে অর্বাচীন। পুরুষ শিখেছে নারীর কাছেই - চারুশীলা মায়ের কথা মনে করুন সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। নারী সুচারুশীলা সৌন্দর্য বিজ্ঞানী - তাঁর এস্থেটিক্স সেন্স সংসার, সমাজে নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে ও বিশেষত পুরুষকে সৌন্দর্যের পূজারী হতে শিখিয়েছে - মানুষকে ভাল বাসতে
শিখিয়েছে। নারী অন্তর্মুখী। তাই সে অন্তরের পূজারিনী। সে নিজেকেও সাজায় অন্তরতম অনুভূতি দিয়ে যা তাঁর চোখে ফুটে বেড়োয়। ঠিক তেমনই বাণিজ্যিক সংস্থা যদি ভেতরে সুন্দর ও নান্দনিক তত্ত্বের দ্বারা গঠিত হয় তবে তার বাইরেও এক সৌন্দর্য ফুটে উঠবে। সেই সৌন্দর্য তার কর্মচারীদের মধ্যেও এক নান্দনিকতা নিয়ে আসে, তাদের আপন কর্মে সুখী হতে সাহায্য করে - তখন সে কাজ করে সুচারুতার লক্ষ্যে। তার উৎপাদন ক্ষমতা হয়ে বেড়ে যায় অনেক বেশী। মনের আনন্দ কাজের মধ্যে গতি আনে আর তাতে উৎপাদন বাড়ে। কর্মচারীরা কর্মী হয়ে ওঠেন। বোঝা নয়। ঠিক কি না?


পঞ্চমীতে সীমাহীন রাগমোচন (আনলিমিটেড অর্গাজম)। নারীর রাগমোচন সংখ্যা তত্ত্বের উর্দ্ধে। বার বার কত বার নারীর রাগমোচন হয় তা সে নিজেই বোঝে এবং জানে - প্রকাশ করেনা সে - বুঝে নিতে হয়। পুরুষের ক্ষেত্রে এটা খুবই জৈবিক ও পরিমাপ্য। এই অসংখ্য রাগমোচন নারীর মধ্যে নিয়ে আসে অপরিসীম ও ক্রমবর্ধমান রূপ ও গুণ। সে ক্রমাগতা ও অসীমা। সে বার বার চূড়ান্ত সীমা ছুঁয়ে ফিরে আসে নতুনের খোঁজে আর ভাবে আরও ভাল হত যদি আরও ভাল হত। এই যে নিজেকে উজাড় করে দিয়ে এক অগম্য চূড়ার শৃঙ্গে পৌঁছাবার ইচ্ছে এটাই নারীকে আরও পরিণত করে তোলে। সে দিতে
পারলেই খুশী। সে যখন পায়না তার কাম্যকে তখন সে আরও পরিণত ও ধৈর্যশীলা। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন নারী পুরুষের থেকে বেশী ডিপ্রেসনে ভোগেন কিন্তু সেই জন্যেই এক অবাক করা নতুন সুখের চূড়ার খোঁজ নারীর জানা আছে - পুরুষের নয়। নারী যখন ডিপ্রেসনে থাকেন তখন এক ইতিবাচক মনন তৈরী করেন তাঁর মধ্যে - তাঁর অন্তঃস্থলে এক ইতিবাচক ক্রিয়া ঘটে যা আবার তাকে আবার ফিরিয়ে আনে নতুন রাগের সন্ধানী হিসেবে। নারী সেই সুখ পায় বলেই সে জানে কি করে দিতে হয়।


নারীর সীমাহীন রাগমোচনের সুফল এর সঙ্গে ব্যবসায়ীক সংস্থার কাজের গুণগত উচ্চতার এক সূক্ষ্ম মিল পাওয়া যায় যদি তা অনুভব করা যায়। ক্রেতা বা অন্তস্থ কর্মীদের ক্রমাগত সুখী রাখার জন্যে সীমাহীন অসংখ্য রাগমোচন সুখ দেওয়া ও পাওয়া যেতে পারে যদি সংস্থার অন্তঃ-স্বাস্থ্যে ইতিবাচক হাওয়া বাতাস চলে আর তা থেকেই অবিরাম রাগমোচন হতে পারে। বার বার রাগ মোচনের সুখভাব যদি ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞানে নিয়ে আসতে চান তবে ছোট ছোট ভাল কাজের প্রশংসা করুন য়্যানুয়্যাল য়্যাপ্রেইজালের জন্যে অপেক্ষা করে বসে না থেকে। সহবাসে পুরুষ সুখী তো বহু রাগমোচিতা নারীও সুখী। কর্মসুখের রাগমোচনে সহকর্মী সুখী তো কর্মকর্তা সুখী। নারী আবার ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সে খুব অস্বস্তিকর ভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠলেন। কর্মস্থলে কাজ করে পাওয়া সুখ যদি রাগমোচনের সুখ এর সমকক্ষ হতে পারে তবে ব্যবসায়ে নিযুক্ত কর্মীদের উৎপাদিকা শক্তি আরও কতগুন বেড়ে যাবে -একবার ভেবে দেখুন!
 

ষষ্ঠীতে নারী অতি সূক্ষ্মতার পূজারিনী (সাবটিলিটি)। নারীর মধ্যে সব ব্যাপারেই এক সূক্ষ্মতার ছাপ পাওয়া যায় সেই আদিকাল থেকে। স্থূল আঙ্গুলের ডগা দিয়ে চালের গুড়ো জলে গুলে আলনা দেয় নারী কিন্তু তার মধ্যে এক সূক্ষ্মতার ছাপ চির বিদ্যমান। ঘর সাজান, নিজেকে সাজান, কিছু না সাজান বা একেবারে হেলায় থাকা এই সব রাগেই নারী সূক্ষ্মতার ছোঁয়া রেখে যান। আপনার দপ্তরে কোন একটা কাজ দিন নারীকে এবং সেই একই কাজ দিন পুরুষকে। কাজ শেষে দেখে বলে দিতে পারবেন কোনটা নারীর আর কোনটা পুরুষের কাজ। আমি নিয়মের কথা বলছি ব্যতিক্রমের নয়। আমি আমার তিরিশ বছরের কর্ম্ম জীবনে দেখেছি বার বার বিভিন্ন প্রোজেক্টে অনেক নারী এবং পুরুষ এসেছেন কাজ করতে - এখানেও আমি সেই একই নিয়মের পুনরাবৃত্তিই দেখেছি। এর কারণ কি? মেয়েরা সব ব্যাপারেই একটু খুঁতখুঁতে হন। মানে বেশ পরিপাটি থাকতে ভালবাসেন, অত্যন্ত সংবেদনশীল ও স্বাভিমানী আর সেই জন্যেই বোধ হয় নারী সব কাজেই তিনি অতি সূক্ষ্মতার পূজারিনী। সূক্ষ্মতর ত্রুটিও তার নজরে পড়ে যায়। নারীর এই বিশেষত্ব কে আমরা ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সের খুবই সহায়ক বলে মনে করি। তা সে অফিস য়্যাডমিনিষ্ট্রেশানই হোক বা সফটওয়ার তৈরীই হোক নারীর কাজে সূক্ষ্মতার ছাপ মিলবেই আর তা কর্পোরেট এক্যুইটিকে সমৃদ্ধ করবে নিশ্চয়ই। ব্যবসা শুরু করতে চান? ষষ্টীতেই অর্থাৎ শুরুতেই নারীকে সঙ্গে নিন। দেখবেন শুরুর ভুল ভ্রান্তি - যাকে আমরা টীদিং ট্রাবল বলি -সেগুলো অনেক কমে যাবে বা একেবারে থাকবেনা নারীর অতিসূক্ষ্মতার পূজারীনি রূপের দ্বারা।
 

সপ্তমীতে নারীর অসীম প্রাণশক্তি (একজুবারেনস) জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যায়। 'নারীর প্রাণ কৈ মাছের মত'। গ্রাম বাংলায় এরকম একটা প্রবাদ আছে। মানে অসীম জীবনী শক্তি নিয়ে তাঁরা সংসারের হাল ধরে থাকেন। প্রায় প্রত্যেক ঘরেই একজন নারী এই সত্যের প্রমা বাহিকা হয়ে আছেন। নারীর প্রাণশক্তিকে কর্ম্মচারীদের মধ্যে যদি সঞ্চালিত করা যেত তাহলে আর আমার মত ম্যানেজমেন্ট শিক্ষককে ডেকে 'এমপ্লয়ী মোটিভেশন' এর ওয়ার্কশপ করতে হতনা। মানে তাঁর সৃষ্টিশীলতা ও অসীম প্রাণশক্তি দিয়ে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন পুরুষের থেকে দ্রুত গতিতে। ভূরিভূরি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। আমেরিকার সত্তর শতাংশ নতুন ব্যবসায় মেয়েরাই সফল ভাবে বাড়িয়ে চলেছেন দ্রুত গতিতে।
 

মেয়েরা আড্ডা দিতে বসলে প্রগলভতার ঝরণা বয়ে যায় - পুরুষ সেটা বেশ উপভোগ করেন যতক্ষণ না সেখানে পুরুষের নিন্দা হচ্ছে। এর একটা খুব ভাল গল্প আছে সত্য মিথ্যা জানি না - একবার পাঁচজন মহিলা একটা ষ্টেশন ওয়াগনে চেপে নায়াগ্রা জল প্রপাত দেখতে যাচ্ছেন সঙ্গে পুরুষ গাইড সামনের সীটে বসে। পাঁচজনের কলতানে আর কিছুর আওয়াজ শোনার কোনও উপায় নেই। বেশ মশগুল পঞ্চপ্রমীলা। গাড়ী অনেকক্ষ চলার পর এঁদের মধ্যে একজন বাইনোকুল্যার সরিয়ে বললেন আরে ওই তো নায়াগ্রা - ব্যাস যেই না বলা - ওমনি একজন মহিলা প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ে গাইডকে এই মারেন কি সেই মারেন - তারস্বরে তিনি বলে চলেছেন - ‘আপনিই না বলেছিলেন যে নায়াগ্রার দু’
কিলোমিটার রেডিয়াসের মধ্যে কানে তুলো গুঁজতে হবে - এত্ত আওয়াজ যে কানে তালা লেগে যেতে পারে আর আমরা এখন নায়াগ্রার দু’শ মিটারের মধ্যে অথচ কিছুই শুনতে পাচ্ছিনা - এর মানে টা কি?'
- গাইড খুব ধীরস্থির কণ্ঠে বললেন - ‘পাবেন ম্যাডাম পাবেন - নায়াগ্রার শব্দ শুনতে পাবেন - আপনারা একটু চুপ করুন' - নারীর অসীম প্রাণশক্তি নায়াগ্রার গর্জনকেও ম্রিয়মান করে দিতে পারে।
কি বুঝছেন? অফিসে বা কর্ম্মক্ষেত্রে কাজের আবওহাওয়া আনতে চান - প্রাণশক্তির জোয়ার আনতে চান তো মহিলা কর্ম্মচারী নিয়োগ করুন। ব্যবসার শ্রীবৃদ্ধি হবেই হবে।


অষ্টমীতে নারী সংযোগসূত্রী (নেট ওর্য়াকিং)। এ ব্যাপারে নারীকে ছুঁতে স্বয়ং ভগবানও সাহস করবেন না। নতুন ফ্ল্যাটে এসে এক বছর হয়ে গেল সংসারের পুরুষটি এখনও তাঁর পাশের ফ্ল্যাটে কে কে থাকেন তা জানেন না - প্রতিবেশীর নাম তো দূরের কথা! কিন্তু তাঁর সহধর্মিণী অনেক আগেই জেনে গেছেন চৌষট্টিটা ফ্ল্যাটের কোন কোনটি খালি আছে - ভাড়া বা রিসেল এর জন্যে, কার মেয়ে কার ছেলের সাথে বিলডিং ইন্টারকমে প্রেম করছে, কার ছেলে বা মেয়ে জয়েন্ট দিয়েছে - তার রেসাল্ট কেন ভাল বা খারাপ হয়েছে আরও অনেক সংবেদনশীল খবর নারীর নখদর্পণে। এটা সম্ভব হয় নারীর ক্রমবিকশিতা সংযোগসূত্রী প্রতিভার দৌলতে। নারী নেটওয়ার্কিং খুব ভালবাসেন এবং পারেন। সেই জন্যে য়্যাময়ে বা হিন্দুস্থান লিভার মেয়েদের বেশী প্রাধান্য দিতে থাকেন তাদের নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় বৃদ্ধি করার জন্যে। খুবই সফল তারা। অফিসের ভেতরে ও বাইরেও মেয়েরা সমগুণ ম্পন্না নেটওয়ার্কিং এর কাজে। খুব বড় প্রমালো বুশ য়্যাডমিনিষ্ট্রেশানের বিদেশ সচিব - কন্ডোলীজা রাইস। বেশ অনেকটা সামলেছেন তিনি কলীন পাওয়েল এর ব্যাটন হাতে নিয়ে।

নবমীতে নারীর গুঢ় মাহাত্ম্য (মিস্টিক)। এই এক জায়গায় এসে আবার ঋষি মনুর কথা মনে পড়ে যায়। স্ত্রীয়াশ্চরিত্রম দেবা নঃ জানন্তি, কুতঃ মনুষ্যা? নারীকে তার সৃষ্টিকারী ভগবান স্বয়ং বুঝতে পারেননি, মানুষতো তুচ্ছ প্রাণী! এটা যে সত্যি এ নিয়ে কোনও তর্কের অবকাশ নেই। এটা সম্ভব নারীর গুঢ় মাহাত্ম্য বা মিষ্টিসিজমের জন্য। কিছু না সাজলেও কি যেন এক আলগা রূপের টান থেকে যায় সব নারীর মধ্যেই যার মধ্যে লাস্যের ছাপ মাত্র নেই তাকেই কি বলব নারীর গুঢ় মাহাত্ম্য বা মিষ্টিসিজম! নারীর প্রতি পুরুষের অদমনীয় আকর্ষ এই অজানা গুঢ় মাহাত্ম্যের জন্যই। এই মিষ্টিক ভাবের রাগ ও রূপকে কর্ম্মস্থলে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায় প্রগতি আনা যায়। জীবনের যে কোনও ব্যাপারে সব কিছু জানা হয়ে গেলে আর কোনও চার্ম থাকেনা তাই অফিসের বস যদি নারী হন তবে তাঁর মিষ্টিসিজম কে তিনি ভাল কাজে লাগাতে পারেন কর্ম্মচারীদের উৎপাদিকা শক্তি বাড়িয়ে তুলতে, কাজের পরিবেশ উন্নত করতে, কর্ম্মচারীদের মধ্যে নতুন উদ্যম আনতে। একজন নারীই পারেন এর ভাল দিকগুলো নিয়ে কাজ করতে। সম্পূর্ণ কর্ম পরিবেশেই একটা মিষ্টিসিজম তৈরী করা যায় যার মধ্যে থাকবে আরও বেশী করে জানার ও করার অদম্য আকর্ষণ। প্রয়োজনীয় গুণান্বিতা নারীর হাতে সঁপে দিন য়্যাডমিন ও এইচ-আর-ডি’র দায়িত্ব - দেখবেন মিষ্টিসিজম কি করে ব্যবসা বাড়াতে সাহায্য করে।
 

নারীর নবমী পূজা এখানেই শেষ করছি। যদিও এর শেষ নেই। নারীর এই ন’ভাবকে যদি বৈজ্ঞানিক ভাবে ব্যবসায়ের কর্ম্মক্ষেত্রে কাজে লাগান যায় তবে প্রগতির নৌকা জাহাজে পরিণত হবে বলে আমার আশা। আর সেই সুবাদে এতদিনের সামাজিক অবিচার কমবে। হোম মেকার হবেন বিজনেস বিলডার।
আমি হলফ করে বলতে পারি পুরুষের এতে ভয় পাবার কোনও কারণ নেই। কারণ কাজের পর নারী হোম মেকার হতে ভালই বাসেন - প্রয়োজন শুধু একটু সম মনোভাবাপন্ন সহানুভূতি ও সহযোগিতার হাত।
আসুন, নারীর স্বভাব নিয়ে না ভেবে তাঁর ন'ভাব নিয়ে ভাবি আর ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞানের প্রগতির পাখায় জুড়ে দিই সেই গতিময়ী ডানা, যার নারী যে রবে চির অজানা।

মুম্বাই

জুলাই ২৮, ২০০৭