ি পরিচিতি

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমি মানসিকভাবে সহস্র বৎসর চলা এক বঙ্গসন্তান। শারীরিক ভাবে আমি সক্ষম কর্মঠ অর্ধ শতক পার করা এক ভারতবাসী। প্রাচীন ঠিকানা শ্রীহট্ট - বাংলাদেশ। পেশাগত অবস্থান ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী - মুম্বাই। হাল সাকিন প্রাণের শহর - কলকাতা। স্বভাবে দক্ষ ভাবুক। বন্ধু অনেক। এই গ্রহের বিভিন্ন প্রান্তে তাদের অবস্থান কিন্তু আমি প্রায় রোজই তাদের সঙ্গে থাকি বা কথা বলে থাকি - ইন্টারনেট আসার অনেক আগে থেকেই। বন্ধুরা বলে কাব্যের ছন্দে পাঠকের হৃদয় হরণ করাই নাকি আমার পেশা। একদম ভুল নয়, কিছুটা ঠিক। মেনে নিই। কারণ বন্ধুরা বলে তো তাই। অবশ্য শুরু থেকেই 'পোয়েট্রী ইন কম্যুনিকেশান' এর প্রবক্তা হিসেবে স্বচ্ছন্দ বোধ করি - লিখি বা বক্তব্য রাখি সেই চালচিত্রের ওপর। নাটক করতাম, নাটক লিখিও। বেশিটাই বাণিজ্যিক কাজে বা বিজ্ঞাপনের কাজে লাগে। গল্প কবিতা সবই লিখি যখন যা মন চায়।  লেখালেখির সময়কাল দীর্ঘ, প্রায় ত্রিশ বছর তো হবেই বা তার ও বেশী। লেখালেখি করছি ভালো লাগে তাই, আনুষ্ঠানিক প্রকাশের অভিপ্রায়ে নয়। লেখা প্রকাশের সংখ্যাটি তাও নগণ্য নয়। এর কারণ ওই বন্ধুরা।তবে সেই নতুন বছর - জানুয়ারী ২০০৭ - যখনই শুরু হল আর আমার কলম থেমে গেল। এই ক'দিন হল আবার শুভলগ্না কবিতা আমায় টেনে এনে বসিয়েছে - লিখতে হবে - আমার প্রেমের নতুন রূপকে স্বীকার করেছি - তাই আবার লিখছি। সংক্ষেপে আমার পরিচয়ঃ
 
সাকিন - জগৎপুর পৃথ্নীপুরম অন্তহীন পথ।

প্রথম প্রেম - নাটক। নাটক করতে গিয়ে নাট্য শাস্ত্রে ডুবে থাকা আর সেই থেকে কবিতার সাথে প্রেম।
বিবাহিত - কবিতার সাথে। লেখা আমার পেশা।

বিবাহান্তর্গত সম্পর্ক - কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধের সাথে।

ভালবাসি - ঘটনার মধ্যে সত্য কে খুঁজতে আর তাকে মনের রসে জারিয়ে নিয়ে বাঁচতে। ভালবাসা কে কাছে টানি স্বার্থের হাত না বাড়িয়ে আর ঘৃণা থেকে দূরে থাকি বা চেষ্টা করি। 

বিজীত বন্ধুর নাম - সোমরস মিত্র।

স্বপ্ন - সহস্রাধিক শিল্পী সমাগমে একটি নাটক মঞ্চস্থ করা যার মধ্যে সব রকমের আর্ট ফর্ম এর পূর্ণ প্রকাশ ঘটবে, যা সারা পৃথিবীতে চলবে আর চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে রেপার্টরী থিয়েটারের উপমা হিসেবে - মানব কর্তৃক সহস্র আলোকবর্ষ ভ্রমণের যে সময় প্রয়োজন সেই সময়ের দৌড় অতিক্রান্ত হয়ে আলোচ্য বিষয় হয়ে রইবে সেই নাটক।

রসদ - একাগ্রতা।

আসক্তি - সীমাহীন গতি।

ভাবে - ধূমকেতু।
 

১. কেন লিখি, কিভাবে লিখি, কার জন্য লিখি?
লিখতে ভালো লাগে তাই আমি লিখি । কিভাবে লিখি তা আমি নিজেও জানি না। লেখা হয়ে যায়। কারো জন্য বিশেষ ভাবে লিখি না, তবে বিশেষ কেউ আছেন যিনি না থাকলে আমার লেখা হয় না। কিছু লেখার প্রেরণা আমার ঘরের চৌকাঠ থেকে আসে বা আমার একান্ত গৃহকোণে লুকোনো পিঁপড়েদের কাছ থেকে।
 
২. সেই বিশেষ জনাটি কে?
ইশ্বর এবং তাঁর প্রদত্ত অসীম কৃপা। আমার ‘হে ঈশ্বর’ কবিতাটিতে যেমন আমি লিখেছিলামঃ

 
দুয়ারে দাড়ায়ে ওই হাসি মুখ
মোর এতো কাছে আজ সুখ
কে জান? সে তুমি
গোধূলীর দিগন্ত পারে
দূরে অতি দূরে
শ্যামলিম কোন মেদুর সুদূরে
চিনে নিই আমি পরাণ বঁধুরে
সেই বা কে জানো? সে তুমি
 তুমি তুমি তুমি হে অন্তর্যামী
গভীর নিশীথে ঝিঁঝিঁ’র ডাকে
মন যখন একা শঙ্কায় কাঁপে
তখন কে আসে মনে, জানো?
বিস্ফারিত চোখের তারায় সেও তুমি
 

৩. প্রিয় কবি, লেখক  এবং তাঁদের লেখা ---
প্রিয় কবি বা লেখকের নাম বলে শেষ করা যাবে না। রবীন্দ্রনাথ দিয়ে শুরু করতে পারি কিন্তু  ভালো লাগার শেষ আছে নাকি? তাই বুঝি ঠিক বলতে পারবো না সবার নাম। ইন্টারনেটের এর পাতায় নতুন অনেক কবি আছেন যাঁরা বেশ সম্ভবনাময় - তাদের জন্য আমার অশেষ ভালবাসা ও শুভেচ্ছা।
 
৪. সাহিত্যের উপর ইন্টারনেটের প্রভাব-
প্রভাব অসামান্য। যত এর সান্নিধ্যে আসব ততই জানব। কিন্তু মৌলিক কিছু সৃষ্টি তখনই হবে যখন পড়ালেখার প্রক্রিয়াটি হবে পদ্ধতিগত। যে কোন সৃষ্টিই কঠিন, তাই তার জন্য সাধনাও কঠিন এবং তার প্রতি ভালবাসা থাকতে হবে আসামান্য। এ’গুলো যদি তত্ত্ব  মনে হয় তবে বলি ইন্টারনেট এর প্রগতিশীল সুপ্রয়োগ আর নিজের চরিত্র বিশ্লেষণ করা ঠিক একই রকম। দু’য়েই একশ শতাংশ সততার প্রয়োজন।
 
৫. বাংলা সাহিত্যের ভবিষ্যত -
আমি খুবই আশাবাদী। ভাষায় আমরা সমৃদ্ধ, তাই এর চর্চায় ভবিষ্যতে বাংলা সাহিত্যের ভান্ডার আরো পরিপূর্ণ হবে। দুই বাংলা এখনও আলাদা ভাবে একই ভাষার চর্চা করে এর থেকে বড় লজ্জা বুঝি আর নেই। রাজনীতিকদের সন্মেলন হয় - সার্ক - বার্ক কবে থেকে শুরু হবে? বার্কটা কি? পাঠক বুঝে নিন। বাংলা ভাষায় অর্ক দেব যেদিন ঢাকা আর কলকাতায় একই সাথে উদিত হবেন সেদিন বার্ক এর জন্ম হবে। এর বেশি বললে ভাবনা চিন্তার গন্ডি টানা হয়ে যাবে যা আমি করতে চাইনা।
 
৬. সাহিত্যের দায়বদ্ধতা-
সাহিত্য জীবনের কথা বলবে, যা থেকে বাস্তবের মুখোমুখি দাঁড়াতে শিখবো । সাহিত্য কল্পনার কথাও বলবে, যা থেকে আরেকটু বেশি কল্পনা মেখে অবগাহন করবো সৃষ্টির রূপসাগরে। যেখানে কল্পনা নেই সেখানে সৃষ্টি নেই আর যেখানে  সৃষ্টি নেই সেখানে যে জীবন নেই। আছে কি?
 
৭. বর্তমান ও পরবর্তী প্রজন্মের কাছে নিজেকে কিভাবে দেখতে চাই?
ওরা আমার লেখা মনে রাখুক তা হয়তো বেশী চাওয়া হয়ে যাবে - চাই অন্তত পড়ুক আমার লেখা। ভাল না লাগলে বলুক যা বলতে চায় পাঠক। কিন্তু না পড়ে যেন কেউ মতামত না দেন।
আমার ‘হারিয়ে’ কবিতাটির শেষ ক’টা লাইন মনে পড়ে গেলঃ


একদিন যেও না হারিয়ে
জোনাকীর আলো জ্বালিয়ে
কাউকে না বলে চুপ করে
বুড়ি চাঁদ তখনও আছে উঠোন জুড়ে
মনের আকাশটাকে কে রেখেছে আধাঁরে মুড়ে
হারাতে চাই নি কিন্তু হারাতে যে হবে
কবিকে মনে রাখে কে কোথা কবে
 

৮. আমার স্বপ্ন ---
আবার আসিবো ফিরে---- এই একই জন্মভূমিতে, একই বাবা মায়ের কোলে । আর কোথাও নয়, আর কারো কাছে নয় ।
 
৯. সম্প্রতি লেখা কবিতার কয়েকটি লাইন -

কষ্টপুরে কবি একা


কবিতা চলে গেছে সুদূর অতীতে
লেখা ছেড়ে গেছে কিছু দীর্ঘশ্বাস
আয়না গম্ভীর মুখে এসে বলল - আমি যাই?
চঞ্চলা কলম কতদিন স্নান করেনি
গায়ে মেখে বসে আছে ধুলো, কাদা, ছাই!
 
সকাল গড়িয়ে বিকেল গড়িয়ে এল রাত্রি
সকালতো হয়না, কবি কি আঁধারের যাত্রি?
কবিতা গেছে চলে, লেখাও তাই
মুখ দেখবে কবি, সে আয়নাও নাই
কবির শ্বাস ফুলছে, দম বন্ধ প্রায়
এত কষ্ট কেন, বিধির কি অভিপ্রায়!


এই লেখা দিয়ে শেষ করলে মনে হবে একজন ফ্রাস্ট্রেটেড কবির নাকাম কলম কি লিখেছে! তাই বলিঃ


 সেই বনমাঝে বকুল বীথির তলে
সেই দিঘি পারে সজল কালো জলে
সেই মাঠ পার করে গলায় মেঘমল্লার
সেই দিগন্তে আমি একা তবু তোমার
গোধূলি বেলায় তোমার কণ্ঠে মিঁয়া কি টোড়ি
চুপি চুপি এসে তোমাকে জড়িয়ে ধরি
তুমি যে আছ শয়নে স্বপনে জাগরণে
তুমি যে আমার প্রেম তব রস আহরণে
কবিতা আমার প্রেম লেখা আমার পেশা
মোর কলমে কালি ভরে রেখ হে চির নেশা
 


এখনও আছেন? তাহলে আবার আসবেন এই পাতায় -
আপনিও লিখুন না আপনার ডায়েরী বা হিসেবি খাতার পাতায়!
 

সুপ্রতীক অরূপ ঘোষ 

জুন ১৩, ২০০৭

মুম্বাই
 
 

আন্তর্জালে প্রকাশিত অন্যান্য বইঃ

১। অরূপ সাহিত্য সংকলন-১

২। অরূপ সাহিত্য সংকলন-২

৩। অরূপ সাহিত্য সংকলন-৩

কাব্য কণিকা সংকলন

নাটক-চান্দশা উপাখ্যান

উপন্যাস- অধরা মাধুরী (বর্ণময় অন্তরালে)

অরূপ কাব্য সংকলন