দ্বিধা বিষয়ক আরো একটি
আমাকে চূর্ণ করতে এসেছে ডাঙর চোখ নাকফুলজল আর উড়ন্ত চুলের
হাওয়া হাতের কঙ্কন মৃদু সুরে বাজে—
হৃদে কম্পন তুলে নির্বাক চণ্ডাল
সেজে দণ্ডিত হই;
গোপন শ্বাসনালী ফুলে-ফেঁপে
ওঠে চোখ ভরে
দেখি
মনে -মনে
জপি গীতা-বাইবেল—
অসংখ্য সুরা। প্রার্থনা করি আমাকে
স্বর্ণাভ করো প্রভু
***
তবু যদি মিশে যায় স্রোতজল বেয়ে,
যদি লবণাক্ত জল চুষে নেয় কেউ
ক্রমশ ম্লান হবে তুমি। তাই ভয়ার্ত কত চোখ সাগরের জল বেয়ে ওঠে।
আর আমি জলের কাছে লুকাবো বলে স্নান ঘরে আসি মনে সংশয় দ্বিধা;
তবে কি আমি ভুরে যাবো সব ঘুমোবার আগে তুমি আজো বলনি ওই
পথ ধরে হেঁটে গেছে কারা?
আমাদের আগে
***
আমি লুকাবো কি জলে একবার সম্মতি দাও—
স্পর্শ করো না কভু শরীর
গুপ্ত সীমানা। তবে কেনো জড়তা নিয়ে জেগে রবে তুমি ঘোররাত্রি পাড়ে
তাই নৈঃশব্দ
এগুলো হাত তোমাকে ছুঁয়ে দেখার আগে আঙুলের পতন হল
পিচলে স্মৃতি-স্বপ্নসহ
চুম্বনের দাগ,
কপালের ভাঁজে-ভাঁজে
তোমার
অসংখ্য
রোমাঞ্চ
***
আমি তো ওই পথে চোখ খুলিনি,
তুমি তাকিয়ে আছো গভীর ধ্যানে—তাই
নিরবধি জপি যেভাবে শিখিয়েছো প্রেরণা কাকে বলে;
কখনো ভাবিনি কতটা দূরত্বে দাঁড়ালে তুমি
বোবাজলও কাত হয়ে শোয়।
তাই নিজস্ব আগ্রহে লুকিয়েছো মুখ;
মুখের প্রীতি।
ফলে ভাসা ভাসা বিজুলি সংকেতে ফেটে
যাবে
চোখ;
চোখের জ্যোতি।
তুমি ফিরবে না জেনে সবটুকু জল জমা রেখেছি পথের ঠোঁটে
***
অঙ্গগুলো মৃদু দুলে ওঠে জলপথ হেঁটে ছেঁকে নেবো মৌ…
তুমি জলের পাশে খুঁজে ফেরো বাষ্পদানা;
তার আগে শূন্যে উড়ে গেছে ঘ্রাণ বরফের কাছে গলে-গলে
পড়ছে জলস্পৃহা।
তাই নিরবধি জপি
দ্বিধালিপি যত তোমার শূন্যতা জমা রাখো গাছের আড়ালে ওই জারুলের বনে।
আমি তো একাকী জেগে আছি আড়ালে;
সাতাশটি পাতার ফাঁকে। দ্বিধা যত জমা থাকুক বুকে
***
এবার তুমিই বলো রোদ আজ কোথায় দাঁড়ালো;
আলো ফোটালো কার গায়
তুমি আর কতবার শরীর পোড়াবে রোদে। রোদে পুড়িনি কভু তবুও তোমার
রোদের তৃষ্ণা মিটেনি। রোদের তীব্রতা জড়াতে চাও পায়ে,
আমি রোদবিহীন
জ্বলে পুড়ে সেজেছি কয়লা
অবশিষ্ট স্পৃহা যত গেঁথে রেখেছো হাতের রেখায়
***
তবুও জানি মেঘের ঘনঘটা হলে মেঘাচ্ছন্ন দিনে তোমার কাছে বেড়ে যায়
রোদের কদর,
তাই আঁধার ঘনালে পাশ ফিরে দেখো ধ্রুবজল
ছায়া -
জেনে
রাখো ঘোরপ্রবণ রাতের কাছে কারো দায়ভার নেই,কখনো
তাকবেও না
***
হাত ছুঁয়ে দেখো কতটা পাথর হলো বুক,
ফুটে ওঠে জিভ তৃষ্ণার্ত
ঠোঁটে
আর তুমি ঠোঁট ছুঁয়ে দেখার
ভান করে লালা জলে খেলা করো গালভর্তি
দীর্ঘশ্বাস ফেলে
তাই তোমার তো জলের কাছাকাছি যেতে মানা
|
এসো ২
তার পদচিহ্নে হেসে ওঠে মাটি কেঁদেছে ধুলো
ক্রোধে
মেঘে-মেঘে
ঘনঘটা আকাশ যে
পাশে
তাই
তোমার হাতে,
পাশে রাখা কাগজের ফুল
বাদে
জলাতঙ্ক জাগে জল ছুঁতে গেলে,
তোর ঠোঁটে লোনা জন্মে
প্রায়ই
চোখের ক্লান্তি কি শুষে নেবে কেউ,
তারপরে…
তবে
শরীর ছেঁকে নেবে যারা;
পুনর্বার তারা—
তুমি কি পূর্ণতা
পাবে
কতকিছু ভাবি—
কিছু মনে থাকে না,
স্বভাবে
মেঘ বৃষ্টি বরিষণ
যেতে যেতে______________বাঁধা
পথে
________যারা চিনেছি জীবন
জেগে ওঠে _____________তোর
ঠোঁটে
__________ একই সহমরণ
থিতি জনা _____________যত কণা
_______ফিরে আসে যায় চোখে
মানুষ কি ______________বন্য
নাকি
_______এসিড ছুঁড়ছে মুখে
গূঢ় কথা ______________ঝরে পাতা
______ ঝরে যায় যত স্মৃতি
রোদ ছায়া_____________কত মায়া
_______মানুষ আর প্রকৃতি
যত আশা______________চোখে বাসা
_______একা চলে একা উড়ে
বাড়ি ফেরা_____________ভ্রান্ত
যারা
_______চলে গেছে যারা দূরে
যেতে যেতে____________বাঁধা পথে
________থামা হবে একদিন
বহুদূরে ____________ যারা ফিরে
________মেঘ বৃষ্টি বরিষণ
|
যদি হয় ভালোবাসা-বাসি;
হউক
মোমের মতো জ্বলে ও গলে
প্রদীপ
জ্বলে অন্ধকার হারায়
অন্ধবুক
চিতায় জ্বলে কী?
জ্বলে মমপাপ
আমার
শেষ ইচ্ছে তুই বেঁচে থাক্;
কথা ও কবিতায়
যদি
হয় ভালোবাসা-বাসি;
হউক মোমের মতো জ্বলে ও গলে
যদি
একটানা হই চুপচাপ
আমাকে
ফেলে রাখা ভালো গর্ত ও গুহায়
পাথরের
বুক চিরে বেঁচে থাকুক চর;
পথ ও সময়
ওইদিন
আমি ফুল কিনি,
কাঁটা কিনি তোকে ভালোবেসে
যদি
পাল্টানো যায় দৃষ্টি ও আক্ষেপ
আমাকে
খুলে রাখা হউক জমানো হাওয়া
লজ্জায়
দেহের
পাশে এই যে শোয়া আত্নীয়বন্ধন;
সে কি উষ্ণতায়?
অনিচ্ছা
ভ্রমে ওই দিনটির কথা...
বছর ঘুরে দাঁড়ায় মনের ত্রাসে
যদি
সরে যেতে যেতে বাড়ে সন্তাপ
আমাকে
ঘুমের ভেতর ধ্বংস করো অজ্ঞাত
কামনায়
ভুল
যদি হয় পূর্বনির্ধারিত অশুভক্ষণ;
তাতে ক্ষতি কি প্রণয়?
শ্বাসে-শ্বাসে
শুধু একটি দিন তোর জন্য শিকল পরাই উষ্ণশ্বাসে
যদি
শেখানো হয় দেহের পরিমাপ
আমি
খুলতে দেবো তোকে খাঁচার পাখি ও ভয়
আজ
হউক,
কাল হউক হবেই তো একদিন হাওয়া সংশয়
খালি
চেয়ারও তোকে ডাকছে পার্কে;
অপলক চোখের বিশ্বাসে
|
কথকথা ২
অবাধে হেঁটেছি আমি বালুর পাঁজর ঘেঁষে,
বালুকাপথ তার সরুকথাগুলো উড়ে যেতে চায় বলে জানান দিচ্ছে
হৃদপোড়াকথা ক্লান্তি...
আমি
মায়ার আদলে ছুঁয়ে যাই বারি আর তোমার শরীর,
বেদনার্ত রোদশিখায় পুড়ে যাবার
ভয় থাকে,
পুড়ে যায়,
পোড়া
দেহ-সামিয়ানা
তবুও তো
বালির পথ
ধরে
হেঁটে চলি ধুলোময়তা সাথে নিয়ে,
শূন্যতা ঘিরে
বাতিঘর-২
বাতিজ্বলা ঘর আলো ছড়িয়েছিল বলে আমাদের কাবু করতে পারেনি
ঠিকই,
আমি তো দেখেছি তোমার শরীর থেকে উড়ে গেছে
বাতাস,
যেন মৃদু আলোর খেলা। আর আমি আলোর ভেতর রোপন করেছি গোছা
গোছা স্মৃতির চারা-
টের
পাইনি যেন আমার পাশে শুয়ে আছে চেনা সেই রাতের নীরবতা
|