রোদের পুড়ছে শরীর


আমি শুষ্ক হতে গিয়ে আর্দ্রতা খেয়ে ফেলেছি কুয়াশায় দিনে।রঙধনুর সাতরঙা বাহার তখনও ঠিক মনে

পড়েনি তবু তুমি রৌদ্রে শুকাতে দিয়েছ জামা।চেনা সেই গোলাপি জামা চুয়ে চুয়ে নামছে জল, চুয়ে চুয়ে নামছে দিনের দহন ও জ্বালা।

সেসব কথা ভাবতে গেলেই ভেঙে পড়ে আমাদের গ্লোবাল স্মৃতির পুরাণ সূর্য্যমুখী ফুলের মতো দাঁড়িয়ে দেখছি রোদ আর রোদনের কথোপকথন।

চুয়ে চুয়ে নামছে আরো কিছু জল, দেখো রৌদ্র চুষে নিয়েছে সব জলজামার আদর। রৌদ্রে সবকিছু দেখো কেমন সুনসান

সে-কথা স্মরণে রেখে কতবার শরীর পোড়াতে গেছি রোদে

 

সত্য ১০০ ভাগ : ১

 

এসব বললে তুমিও কুলকুলে হাসো; বলো না-হেসে পারি না; তোমার মতো কুলকুলিয়ে হাসে লাউপাতা,কচুপাতা,সর্ষেদানা।

লাউ-কুমড়ার পাশে অসহায় আলু-পটল সুপারীসহ পানপাতা।

তারচে ভালো ছিল বালু সিমেন্টের পাশাপাশি বাজুক দেহসমর্পণ; ইটগাঁথা দেয়ালপিঠ দেখুক স্পর্শবেদনা...

তোমার পায়ের ছাপ গুনে যেতে যেতে দেখি এই তো

পরবাসে জীবন বাস্তবতা!

ক্যাবিজ,কলিফ্লাওয়ার,ক্যারটের ঝাঁঝে পুড়ে
বাঁধাকপি,ফুলকপি,মুলা নাক সিঁটকে মরে
গুল মরিচের ঝাঁলে কি-কুম্বার স্বাদ; বলি স্পর্শগাছ!
দেহফুল প্রণাম করো, বরফের আঁচ

বিশ্বাস করো এভাবেই দিনের শুরু
লতাপাতা ডাঁটাশাকের খোঁচাখুঁচি
কাঁচা টমেটোর সাথে লাইশাক,লালশাক
নালিশাক নাচে কাঁচামরিচ ধনেপাতার মতো
সহসা তোমাকে পাই না কাছে

 

অপূর্ণ ফুল

 

একটি সময়কে গুনে রেখে চলছে নিস্কাম

থোড়া
লাজ খোলা হাসির জোড়-ই ছিল মনস্কাম

খাড়া
অপূর্ণফল তোমার জন্য রাখছি না-আসা প্রেম

ছাড়া
কুড়াই এসো দেহকাবা ছুঁয়ে; কোথায় লুকানো হৃদয়কাবা!
একটি সময় গুনে রাখছি, ভাবছি গেছে যতদিন

আমাদের
স্মৃতিফুল মরে যাচ্ছে তো যাবেই-- জীবন

পরপার
শীতপ্রিয়ঋতু হউক আমার মৃত্যুদিন... যেমন

কবর

ভুলমন্ত্র পাঠে যন্ত্রণাকোমল... আরো দাও, সব দাও, যতসব ভাবা

বিবিধ


ওইখানে গোটাও অভিপ্রায় যত
পাঠ করো দু-হাত নেড়ে... যতদিন মিশে-থাকা যায়
রোদের তীব্রতা গিলে

তুমি আর আসবে না-
ফিরবে না কভু একথা বলোনি যে আগে
তাই কতটা অপেক্ষা করতে পারে বলো বহমান স্রোত

মেঘে মেঘে এখনো ভাবনা জাগে তবু মনে পড়ে না
এত যে মিশে-থাকা কার জন্য অস্পষ্ট বেড়াজালে

রঙ


আমি অকারণে আঙুলের ফাঁক থেকে
ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রেখেছি জল ছোট-বড় পাতায়
এতে প্রকাশিত হতে দেখি বহু বিষয়, নানান কথা
তাই ফানকচুর পাতায় রেখেছি অশ্রু, আরো কিছু গ্লানি
ফলে নীরবে প্রতিশ্রুতিতে ফুটছে অস্থিরতা, স্বভাব সংকেতে

তাতে দুঃখেরও যদি বহুবিধ আকার থাকে, পরিতাপের
আকার ধরে দূরে চলে যাও, তবে দুঃখের কি নাম দেবো?
জানি না;
এখনও পরিতাপের নাম দেয়া যেতো অনেক

আর আমি যে-জল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রেখেছি পাতায়
তার কোন রঙ নেই বলে অশ্রুর রঙও কখনো পরিবর্তন হয়নি
পরিবর্তন হয় না

অনুকরণ


যাবার যে রাস্তা দেখছো
সে পথ ধরে হাঁটো
আর শেখো
চেয়ে দেখো হয়তো কারো পদচিহ্ন
রয়ে গেছে পথে
যদি খুঁজে পাও তাকে তুমি থাকে অনুসরণ করো
বাকিটুকু মনোবলে রাখো, চোখ ভরে দেখো

তুমিও তো অতীতে ফেলে এসেছো কত পদচিহ্ন
যদি পারো পেছন ফিরে দেখো;
আস্তে-আস্তে খুঁজো

কণ্টকফুল

হাততালি দিয়ে দেখো খেয়াল-খুশির
অন্য-নাম কি হতে পারে না? আলাপ
চোখের ভেতর যে রকম চর্চা হয়
গোপন-পরিচয়

আমার তাড়া দেখে সেও বলছে 'নিজস্বঝগড়া'য়
খুলে দেখো; জোড়া চোখের ভেতর তিনটানে
লটকানো স্মৃতি পুরো অন্দরমহল...

খেয়াল-খুশির ভেতর কাকে তাড়া দিচ্ছো
সাত-সতের সেন্টিগ্রেটে কাঁপছে সুতো ও জাল

তাকে তাড়া শেখাতে এসে আন্তরিক ফুলগুলো
দোটানায় বড় হতে হতে আমাকে শেখাচ্ছে কৌশল
কারিকুলাম: যেমন কণ্টকফুল

 

বরফজল


জল কেন তবে বরফ হয়ে যায়
আবার দেখি বরফ জলে ভেসে থাকে
বরফ-জলের কি এমন সম্পর্ক যে,
বরফ গলে-গলে জলে মিশে যায়


সে-প্রশ্নের উত্তর জানা নেই বলে
জলের দিকে হাত বাড়ায়ে দেই,বোধে নির্বোধে
জলের ভাঁজে-ভাঁজে স্পর্শের দানা, মায়া
তুমি ঠিক দেখে নিও আমাদের দেখা হবে
কথা-টথা হবে জলের কাছাকাছি এলে

সম্ভাবনা


চৈত্রমাসে পলাশ ফোটে পাতার বর্ণ হয় ধূসর
ভ্যাপসা গরমে তৃষ্ণার্ত আমি কামনা করি বৃষ্টির
আশায়-আশায় স্বপ্ন জাগে তাকানো যে দৃষ্টিকাতর

ড়ের গতি বেড়ে গেলে গাছগাছালির করুণ সুর, মর্মর
বৃষ্টিতে কার না ভালো লাগে, ভাবনা জমা অষ্টপ্রহর
ছায়াকে যখন কামনা করি
হেসে ওঠে রোদের প্রখর

আবার যখন তৃষ্ণার্ত হবো ঢেলে দিও জলের আদর
চোখের জল শুকিয়ে গেলে জমা পড়বে লবনের স্তর

জল ও গুহামুখ


জল তুমি গড়িয়ে পড়ো চৈত্রদাহ রোদে
দেখো আমার চিবুক রাখা বৃষ্টির ঠোঁটে
আরো কিছুদিন তোমার চোখের গোপনতা
দেখতে যাবো যে যা-ই বলুক, অত-শত বুঝি না

জল তুমি উড়ে এসো শ্রাবণধারায় বাধা দেব না
 

২.


তুমি যাও দূরে ওই দূর বনস্পতির দেশে
আমি তো বেশ আছি,
ভালো আছি

ডুমুর সেজে
স্মৃতি যত পাথর চাপায় দুলছে ডালে-ডালে
তবু স্মৃতির নিকট হয়ে গেছি বিমর্ষ তালগাছ
তাই প্রতি মুহূর্তে মুখ লুকাই গুহার ভেতর

অন্ধ


চোখ বুঁজে অন্ধের ভান ধরে থাকি
দেখি অন্ধ হলে, চোখ কোথায় পালায়
হাতের আঙুলগুলো প্রসারিত হলে দেখি
নিশ্চুপ তুমি
দাঁড়িয়ে থাকা গাঁদাফুলের টবে

অন্ধকার নিরবতায় ঢাকা! দূরে রঙ-তুলি
ফলে
জলে কাটে জল ডরভয় জাগে, শরীর মৃদু কাঁপে
চোখে খুলতে ভয় হয়
চোখ যদি ফেটে যায় জলের তাপে

.....................................................................................