৩রা মার্চ, ২০১০
কাছের চার্চ; কাছের আঘাত ধরে রাখতে পারি না
এ-বেদনায় মিলিয়ে যাচ্ছে আমাদের সকল প্রস্তুতি
এসো ভুলে যাই; দেনা-পাওনা এ-বুকের সান্ত্বনা...
বহুরূপি ভাব ধরে কেনো হাসো তুমি- দেহবিবৃতি
ইচ্ছের চূড়ায় উঠতে কবিতা বুঝার প্রয়োজন পড়ে না। তুমি যা বুঝেছো ততটুকুই কবিতা।
শুধু এটুকুই বলি, জল আর লবণ...
ইচ্ছের শেষ বিন্দুতে পৌঁছে যাবার আগে করো না
আহবান। নামো: তুমি নেমে এসো 'শ্রম তপ্ত ঘাম' এই মন- এই শরীর;
সে তো জন্মাবধি
ডানার উড়াল; তবে আমাকেও কেনো যে উড়াও তোমাদের হাওয়ার ভরে। আমাক
ডাকো না আক্ষেপ;
আড়াল চোখও শিখেছে বিস্তার
হাসির ভেতর জমছে কি প্রত্যাশা? শুশ্রূষা মনের
ঋতি
কাছের চার্চ; কাছের আঘাত অবশিষ্ট ভালোবাসা ক্ষতি
|
ছায়াস্বপ্ন
পুনরায় ফেরার আগে কি এমন
ছোট্ট-ছোট্ট কথা বলার থাকে যে
তোমাকে বারবার বলতে ইচ্ছে করে
অর্ধেক হৃদয়!
হিয়ার ভেতর আমাকেও জাগাও কান্নায়
হারানো দিনে পুরনো কথাও সন্দেহ জাগায়
পথে ঘুরিফিরি সহস্র মুখ ভালো লাগে ছায়ায়
পুনরায় ফেরার আগে তুমি বলো
সব ছায়া কি আর একসাথে ভালোবাসা যায়?
|
কে হতে
চায় বলো ব্যথার দোসর
আমার এ-দুটি চোখের ছোট্ট জমিখানির যে ক্ষীণ ঝরনাধারা সেখানে এখন আর জল নেই;
স্তুপ বেঁধে বসে আছে লবণের স্তর; ব্যথার বেদিতে আর পোড়াবে না অঙ্গুলি তুমি হও
ছাইহীন ওম! আমাদের প্রস্তুতি পাঠ শেষে একা একা হাঁটে এখন ভাঙনের সুর
প্রসাদ গড়েছো এতটা দূরে, যেখানে অপেক্ষা পুষে রাখার ছলে সাহস কুড়াই। ও-মন,
সেলাই করে নাও খোলা-ঠোঁটের আদর!
না-হলে কী করে খুঁজে পাবো বিষণ্ণকথা... ব্যথার
দোসর
তবে কী ছিল ভুল এতকাল... অতঃপর চিরকাল কি করে যাব-- শুধু ভুল-ই সাধন। হৃদয় গহীনে
যে কন্টক গাঁথা তার-তো
উদ্ধার নেই; স্মৃতির অলিন্দে কেনো দাও বার-বার হানা;
নির্জন ক্ষণে তাহার স্পর্শ আঁকা সব পথে-পথে; তবে কী আমি আর কোন পথে হাঁটবো না!
|
মন
মন কেটে কেটে মুখস্থ করছি লঘুশোক
তাকে মনে রেখে উড়তে দিয়েছি
আকাশের ওপারে
কতটা ওজন ওই আর্ত-বাতাসের!
জানা হলো না হিমালয় পাড়ে
বলছি সম্ভাবনা-দ্বিধা-ক্ষুধা আঁকার ভেতর
নিজের জন্য গোপন রাখছি কিছু
ঘূর্ণন, ঘর্ষণ
কাঁটা মনে কল্পনা, ঠিক সন্ধ্যায়
আমার জন্য ঝুলিয়ে রাখুন ভাবনায়
|
ভালো
থেকো হারানো কান্না
শেষঅব্দি আবেগ বাড়ালাম কপালে হাত রেখে;
জীবন আর প্রকৃতির রূপরঙ বলতে আলাদা কিছু নেই;
কখনো ভাবিনি।
তাই জলহীন চোখের ভয় হাওয়ার পালকের উড়ে
যাচ্ছি; নীরব তাকানোর ফাঁকে
গলানো চাওয়া-পাওয়ার গ্লানি;
আমার কিছু কাঙ্খা ছিল গোপন রাখিনি;
কারণ—
ব্যাধিকষ্ট দু’চোখে
রবে,
চুপচাপ আমি চোখের পলকে তুলে নেবো জলফল,
হাসির টোল দেহফুলসহ লুকানো বকুল,
আরো...আরো কত কি! দেখবো সেদিন তুমি কি, না বলতে পারো
আবেগ বেড়ে গেলে, কেনো যে
বেড়ে
যায় হৃদকম্পন ধারণা
নিরবতা ভালো থেকো আমিসহ,
ভালো থেকো হারানো কান্না |
অশ্রুকথা
নিজের ভেতর হরদম ওঠা-নামা ফ্রকের ছায়া
তাকে চিনতে পারিনি, তুমি রক্ত
নিয়ে এসো খামাখা
দেখো আমি ক্রমাগত গুটিয়ে নিচ্ছি নিজেকে
সারারাত জেগে থাকল ঘুম... দেখে যাও
সঙ্গ দাও
ওহো তিরিশের সুপ্তকাঙ্খা শোকার্ত!
বলছি মমতাবশত
দৃষ্টি মেললেই দেখি বুকপকেটে কম্পন কুড়াচ্ছো
কথা বলার আগে অধীর বুকে জমিয়ে রাখছো
কী কথা! কার কথা
গোপনে যত আনন্দ-ব্যর্থতা
আসক্তি একই রকম প্রায়;
দেহসুদ্ধ
অশ্রুকথা
|
ভাগাভাগি করে নাও মনকাহিনী
মনকাহিনী বারবার আমাকে স্মরণ করিয়ে দেয়,
কিভাবে ইশারাকথা বুঝে নিতে হয়।আমার অক্ষমতা করুণাশ্রয়ে
যতোবার পেতেছে হাত, তিন
ঘন্টার অনুতাপ। আজ না-হয় কমিয়ে নেই। সে কথাগুলির আঘাত।
‘এগোতে-পেছোতে’
গেলে দেখি মাটির ঘ্রাণে মিশে থাকে গুঁড়ো গুঁড়ো জলের দাগ!
সান্ত্বনা, তখন তোমাকে মনে পড়ে যায় খাবার টেবিলে,
ঘ্রাণ ওঠা ভাতে…
সাজানো বিষের থালায়
ইশারাকথা মন ফিরিয়ে নিস্ না,
যতক্ষণ না-মিটে জলের দাগ
আমার সাজানো কথার ভেতর তোর সতর্ক
চোখের অর্ধেকভাগ |
বিষদাঁত
সে দিনের পর বলছি লঘু-শোকে
অনেক দূরে দাঁড়ালেও নেই নিষ্কৃতি
সব নিষেধ ভেঙে সঙ্গ দাও
দিনশেষে বিষদাঁত নাড়াও
আজ তবে পাঠ হউক,
অন্য কিছু
অন্যান্য কথা
উত্তরে খুলছো অসহায়,দক্ষিণের
বাতাসে আমি তত ভাল নয়
আজ তবে কিছু রোদ ঝড়ুক
ছদ্মবেশে
জড়িয়ে থাক্ সদাসর্তক সূর্য ওঠার আগে
|
দেহাকর্ষণের পূর্ণদুপুর আমাদের
মনের সাথে কিছু স্নেহ
রঙিনকথা দাঁড়িয়েছে চুপচাপ,
দৃষ্টিগ্রাহ্য করোনা প্রিয় অপরিচিত কথা;
খুলে ধরো যত সন্দেহ; খুলে পড়ুক
যত গ্লানিবোধ দেহ
ঘেঁষা পুরো দাগ। স্নেহ-রঙিনকথা আমাকে খুন হতে বলো না তোমাদের
লজ্জায়। ও-ডানার হাওয়া; ও-দূরের আবদার!
কেনো তবে নিতে
চাও ধ্বসে পড়া তিনখানা ভাব! কি দরকার,
কেনো যে মাপতে বলো কঠিন অনুতাপ!
প্রতিটি আঙুলই আমাকে শিখিয়েছে
অনুভবের আলাদা ভাষা…
ও-ডানার হাওয়া; ও-দূরের আবদার!
আমাকে পুড়াবে না আর
শুধু আঙুলের ভাষা বাদ দিলেই
দেহাকর্ষণের পূর্ণদুপুর আমাদের… |
পাথর-স্মৃতি
আমি পাথর কুড়াতে জানি
পাথর খোদাই করতে জানি না
পাথরের মতো দুঃখকে শক্তপোক্ত করে রাখি
দুঃখকে পাথর বানাতে পারি না
শুনেছি পাথর ঘষলে নাকি পাথরও ক্ষয়ে যায়
কিন্তু পাথর থেকে আগুন তুলে নেয়া যায় না
পাথর-অন্তরে আছে অগ্নি নিরবধি—
যারা অগ্নিভীত, ভুলেও যেও না
তারা পাথর-খনিতে
আমিও যাব না আর পাথর কুড়াতে
|
শরীরের তিন-ভাঁজ-ঘাম
দৃষ্টিভঙি বদলাতে চাও ক্ষণে ক্ষণে…
নিতান্ত এই যে আমি দুলছি মায়ার সুতোয়;
তোমাদের চোখ খুললেই পরে নিতে পারি সকল
কামনারশ্মি…
আমার সহায়ক কারা?
কার সাথে এতো
মিশে থাকা-থাকি!
এতো দিন তার সাথে থেকে কিছুই হলো না আমার।
মন খারাপে হয়েছি রোগা;
শুনেছি যারা আমার মতো মন খারাপের রোগে ভুগিতেছো,
তারা আমার সাথে আপস করবে না—
কারণ, যতই
ঢালতে চাও ডেটল সাবান,
শরীরের তিন-ভাঁজ-ঘাম
আমার পাঠানুতাপ ডেটল সাবান,
শরীরের তিন-ভাঁজ-ঘাম
দৃশ্যফেরা মানুষ কাঁধ ভরে হাটে…
আমার ঘাড়ে শুধু দুর্নাম |
বুকটান
একা পড়তে চেয়েছি বোঝাপড়া; সারকথা
ভীতি ও প্রলাপ
একটি বাকরুদ্ধ-কথা আমি লিখে রাখলেই কৌতূহল
যারা আমাকে দেখে গেছে পরজন্মে পরশু-তরশুদের
বাড়ি
যদিও ঘটনাচক্রে তেমন কিছু পাওয়ার নেই
আজ শুধু এসো, পাশাপাশি বসি
আঙুলফুল গুনে আমার পতন ঠেকানো যাবে না
কারণও খোলাসা; বলছি আঙুলফল
চাষে সমাসবদ্ধ-আমিও
আত্মজীবনী
বহুদিন যে তাকে বুকে টানিনি।
|
যে পোড়াবিষে আমার ধ্বংস অনিবার্য
দীর্ঘরাত্রি জেগে থাকি; দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার আশায়। সব কিছুতে আশা করা কি ঠিক?
আশা যে কেবল রক্ত ঝরায়।
অলসভাব যাই বলতে নেই; বলো আসি— আশায়-আশায় ফেরি করো আবেগি
ইতিহাস। ইন্দ্র
ইঙ্গিত তোর শ্বাসের ভেতর
মিশে যেতে যেতে লুকাই পোড়াবিষ।
হারানো
মুদ্রার মতো কেনো যে সরে দাঁড়াও তুমিসহ নতুন জামার ঘ্রাণ; যে ঘ্রাণে আমার ধ্বংস
অনিবার্য। আমি কি জানি— সেসব : আমাকে কেনো নিতে হবে অপেক্ষার দায়ভার। ঘ্রাণ
তুমিও চিনে রাখো; ছুঁয়ে দাঁড়াও; একসাথে গুনে নেবো সব অধিকার
অপেক্ষায় নয়; দীর্ঘরাত্রি জেগে থাকি; দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার আশায়
যে পোড়াবিষে আমার ধ্বংস অনিবার্য; তা কি তোমাকেও পোড়ায়? |
বৃষ্টি,
বৃষ রাশির বালিকাটি
বৃষ্টিপর্ব
জল ফুটছে করতলে, ঠোঁট ছুঁয়ে
উড়ে গেছে মেঘ— সুন্দর! মনে করো
আমরা যে পথ ধরে হেঁটেছি তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে দৃশ্যাবলি
যত
বোবাস্মৃতি সেজে। তবু কেন যে ছুঁয়ে দেখার আগে
বৃষ্টিপর্ব শুরু হলো
না সজল চোখে
পাত্রের গায়ে লেগে আছে তৃষ্ণা,
বাকিটুকু শৈবালে-তোমার মুগ্ধতা
আড়ালে-আবডালে মেঘের কালে…
অবাক হবার কিছুই নেই
বেদনার্ত চোখে, ভোররাতে হাত
বাড়ালে যদি ঝড়ো হাওয়া
ফিরে আসে পুর্নবার ডালে-ডালে। পাতায় তুলে রাখি ছায়া
শুকনো জল দেই ঢেলে সামনে দাঁড়ালে জলে ঘাম পুড়ে করতলে
তোমার চোখে শ্রাবণের ঢল নেমে এলে
কার স্পর্শে যেন মিশে যেত হাত;
চুষে নিতে জল ম্লান চোখ দু’টি
মিশে যেত হাওয়ায়-আবহাওয়া
পাড়ায়। উড়ু হাওয়া বলুক রোদের
তীব্রতা খেয়ে গেল কে? আর্দ্র
হাত দুটি কার আয়ু গুনে রাখে মনে-
রোদ কুড়ানোর ছলে তুমি লুকোবে আজ কার খোঁপায়। যদি ফিরে
আসে ওই দুটি হাত কলঙ্কফুল গেঁথে আমি গুনে নেবো স্মৃতি
একা পেলে
জলে স্বপ্ন লুকানো বলে ভাবিনি এতসব জল অবলম্বনে জেনেছি
স্বপ্নফুল
কবে ফুটেছে ঝরেছে তুমি জেগে ওঠার আগে- তাই জল ছুঁতে ভয়
হয়,
বসে থাকি পেখম মেলে— আমি জল
কখনো জমতে দেব না আর্তচোখে
ঢল নেমে এলে শোকগাঁথা যতসব ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেবো
ছত্রাকে-শৈবালে
|
সরে যেতে যেতে স্পর্শ বরাবর রক্তাক্ত হই
হতবাক ফুলের কাছে দুঃখ
তুলে রেখে তোমার স্পর্শ বরাবর দাঁড়াতেই রক্তাক্ত হয়ে উঠে
দশানন। চুপচাপ ভাগাভাগি করি দশ আঙুলে ফোটে থাকা হতাশ ফুলের সঙ্গতাড়না। আপন মনে
জোড়া চোখে চিরকাল বেদনায় রঙমাখা, জোর করে দূরে ঠেলে রাখা কিংবা হঠাৎ ছুটে আসা
মেঘকান্না বেশিদিন ধরে রাখা যায় কি সহজে! সময় ছিঁড়ে বাড়াই সহযোগিতার হাত। শোবার
ঘরে করি পায়চারি। চোখ বিব্রত হলে ভয়ে বাড়াই পা...
হতবাক ফুলের কাছে দুঃখ তোলে রাখার কৌশল; নিজেরই দীর্ঘপ্রত্যাশা
আপন মনে চিরকাল বেদনার রঙমাখা- সহজকীর্তি, জলবোনা পিপাসা |
কথা ও বাতাসের গতিবেগ
কথা বলছি একাকি; বালিশের বুকে চোখ ঘষে-ঘষে বদলাচ্ছি চার চোখের স্বাচ্ছন্দ; দেখি
কতটুকু উচ্চতায় তুই দাঁড়াতে পারিস্; কতটুকু দূরে দাঁড়ালে দূরদৃষ্টিও বলবে অসহায়।
ঘুম-না আসা ঘড়ির কাঁটায়।ছিছি অপেক্ষা একি তুই বলিস্; চুপচাপ কেনো এতো-এতো দুঃখ
দিস!… কেনো যে বাতাসের বেগে গতি বাড়াস; আমাকেও রোজ শিখাস— পুলকস্পর্শ! তেরো বছর
কেটে গেল! সবই কি খেলার ছলে দুঃখ দিলো; হলো প্রিয় অবহেলা। কথা ও ঘৃণা ফ্রাই হতে
হতে নিজেকে বদলে ফেলা; বেশ হল স্পর্শচিকিৎসা
ছিছি অপেক্ষা; এতো এতো দুঃখ দিস! কতই আর সইবো একা
খাবনামা দেখে স্বপ্ন কি মনে রাখা ঠিক? বুকবালিশটাও বোকা
|