মনবাড়ি

বিকেলটা একাকি হলে কেনো জানি প্রেরণামাখা চাপা ক্রোধ গুলো অদৃশ্য বিশ্বাস জপে বনপথে হাঁটে, পাতা ছিঁড়ে!  কিভাবে বুঝাই বলো? পিপাসা এতো অধিক প্রিয় ছিল যে, তার চোখের ভেতর ঢুকে পড়ে ভ্রমণস্পৃহা... আফালি হাওয়ার দেশে যাব বলে রহস্যগল্প এতো ভয় জাগালো যেন আহত রক্তজবা কাঁটাদাগসহ দূরত্ব মেপে আর আমি চোখ টেনে, বুক টেনে, মনবাড়ি ফিরি তার চাপা ক্রোধ মেখে

কিছুটা থেকে গেলো জানার, আমাকে থামাতে হচ্ছে অধিকার
চোখ টেনে, বুক টেনে, মনবাড়ি কি ফেরা হবে না তোমার?

 

 

ঝরাকাঁটা


না-ছুঁলে প্রশ্নবিদ্ধ হবে ইঞ্চি দশেক দূরে
আঁকা-বস্ত্রবালিকা
ছায়ার পাশে খাড়া স্পর্শগাছ দু-দুটি কাঁটা
ঝুলা ডালে, ঝরা পাতায় পাখির বসবাস
এমন বেদনাহত রাতে তোমার কাছে
শরমিন্দা হবার ভয় কি ছিল একার
দ্বিধা কি ছোঁব একা? নাকি উল্টে রাখবো দেহের বোয়াম
খরায় পুড়ে না তাই ছলে খুলেছি জলের বোতাম

 

মিনতি


আমাকে শাস্তি দিয়ো যত পারো
তার আগে ক্ষমা করো এবারের মতো
ভালোবাসা তরাজ জেনে রজঃস্বলা কালে
বৃষ্টিকাঙ্খা ভালোবেসে কোন পাপ করিনি

যতটা পাপ করেছে তোমার মাকড়িসহ
পুরোটা শরীর

তুমি ভুলে গেছ ইকড়ি-মিকড়ি খেলা স্বল্পস্মৃতি
নখ দিয়ে কেটে ফেলি অনভিপ্রেত যত অসঙ্গতি
সরে যেতে যেতে যাবার ভেতর তাড়া খেয়ে ফিরি

 

 

স্বপ্নহীন


তৃষ্ণা যদি জলের কাছে হার মানে... ভেবো না ধ্যানে
গালের বিন্দু-বিন্দু জল ফুটেনি দেহসন্তরণে

আমি তো বলিনি, তোমার চোখ আমার দেহ পোড়ায়
শূন্য আয়োজনে স্বাদগন্ধ পাবে না, তোমার ক্লান্তিটুকু অন্যায়

স্বপ্ন একমুঠো মাটি... দু
মুঠো জল... পোড়াকয়লা, তারপর জানি না
পুরোনো কষ্টগুলো ভালো থেকো, মৃত্যু হলে শেষকৃত্য হবে না
পৃথিবী যত সুন্দর,
তারচে সুন্দর চোখতোমার হাসি
যদি ইচ্ছে ধ্বংস করো,
যতদূরে মরে-পচে-ভাসি

.........................................................................................................

 



বৃষ্টি বিষয়ক

 

চারিদিকে স্ফূরণ, অবিরত ক্ষরণ বিস্ফোরণ
কার লাগি লিখি এই রাত্রি বরিষণ


মূলত সুখটাই বাস্তব জেনে এগোলে পথ পদতলে পিষ্ট হলো
বরষাক্রান্ত রাত আমি প্রলম্বিত হয়ে কেবল দূরত্ব আঁকি

আর তুমি ক্রমশ ঘোর রাত্রিতে স্বপ্ন বুনে যেতে চাও অবিরত
মোহে; ফলে ধনরত্নে গুঁজে দিলে মাথা কাল মুষলধারে বৃষ্টি
হয়নি বলে ফিরে এলে তুমি
গতিপথে এঁকে দিলে সব স্তব্ধতা



অবিরত খুলে নিতে দেহের শরম তুলে নিতে ঘ্রাণ যেন শস্যদানা
অসময়ে গেয়ে যেতে শ্রীকান্ত-মৌসুমীর গান(আবার যেদিন তুমি
সমুদ্র স্নানে যাবে
বৃষ্টি তোমাকে দিলাম) এখন সুরের মূর্ছনা
অন্য পথে চলে
তাই রোদে গড়িয়ে পড়তো জল, কল্পনা যেন
সমুদ্রস্নান; হেসে উঠতে তুমি স্বপ্ন নিয়ে বুকে, জ্বলে ওঠে ক্রোধ যেন
তোমারই নিজস্বতা। দেহ থেকে খসে পড়ে ঘাস; বেদনাগুচ্ছ
বুকে হেঁটে চলে অবিরাম-দেহ ছুঁয়ে দেখো কীভাবে চৈত্রে ঝরাপাতার মতো
দেহ থেকে উড়ে যায় মর্মর সুর, তুমি না ছুঁলে দেহপোড়াযান



রঙিন স্বপ্ন নিয়ে আকাশে উড়বে সে কথা বলনি কভু;
ভালো নেই আমি

তবুও ভয় জাগে মনে, কেননা চেয়ে দেখো দূরে তোমার জন্য আকা দূরের
বনে;
স্বপ্ন নয়
নীরবতা। আকাশ ভর্তি কালো মেঘ কার চোখে ফোটে;
তোমার চোখে ফোটে তাই বাতাস ভর্তি ছায়া। মাতাল আমিই সেজেছি
তাই গাঢ় জলে পুড়ছে বুক জ্বলছে ঝাউবন। অপেক্ষা কেবল ফিরে আসা
নিয়ে, সুতো ছিঁড়ে গেলে তো মুছবে না কভু কারো আঙুলের পোড়াক্ষতদাগ



স্মৃতিঘোরে উড়ে যেও যদি দূরে ভাসে স্পর্শরীতি শুধু বুকের কাপড়টুকু বাদে সবটুকু উড়াতে করো না মানা
ক্ষ্য রাখো তোমার বুকে জমা রাখো আমারই স্পর্শে আঁকা পূর্ণিমার চাঁদ কেননা ঘনঘোরে নির্ঝর বনে অধিকার অধিকার শুধু আমার; একার। তাই জলপূর্ণ কাঙ্ক্ষায় কেঁপে ওঠে দিঘীর পাড় দীর্ঘরাত্রির অপেক্ষা কেবল ক্ষয়ে-ক্ষয়ে যায় তবু তুমি খুঁজি ফিরো কালো চশমার ফাঁকে শূন্যতার ছায়া।
তাই দুরত্বে গেলে দেখো শংকিত দেহের ভাঁজে ফুলে ফেঁপে ওঠে দেহের হাজারো দীর্ঘশ্বাস



জানি এগোলে পথ খোলা নেই; চোখে আঁক স্পর্শরীতি বাদে উপেক্ষিত রাত
তাই দূরে দাঁড়ালে তুমি তিন হাত পরে
দূরে গেলে বলে যেও হাত রাখি
কই, আঙুলের পোড়াক্ষত দেখনি আজো সে-কথা স্মরণে এলে তৃপ্তি ভেবে
খেয়ে ফেলি সিগারেটের অবশিষ্ট ছাই। জানি পালাবার পথ খোলা নেই, তাই
ডুবোরাত্রির কাছে তুমি ডুবে গেলে ডুবো সন্ধ্যা আমার। খড় কুঠুরি যাই ভাবি আসলে নির্জনতাই মূল;
তুমি হারালে ভালো চাওয়া র
বেনা কভু স্বপ্ন একাকী পড়ে রবে দুর্বায়



আমি লুকাবো বৃষ্টিপাত হলে কত আগেই বলেছি সেসব কথা ফলে
তুমি লক্ষ্য রেখেছো হাতের স্বপ্ন; তাই গতিপথে কোথায় লুকিয়েছে
তোমার দুটি পা।আমি স্মৃতি কুড়নোর আগে খুঁজেছি তোমায়; তুমি
ভান ধরে হেসেছিলে দূরে
তাই ফের তাকালে দেখি তোমার বুকের
বিষণ্ণতা এখনও কাটেনি
সহজ-সরল চোখ যেন শূন্যতায় ঠাসা।
আর এখন যতসব ঘটে মনে হয় সবই ছিল বির্বতন স্মৃতি তবু;
তবুও তোমার চোখে নেই জল বৃষ্টিপাত হলে আমিও আর কাঁদবো না



বার-বার বলতে আমার আর সহ্য হয় না;
আজোবধি জানা হলো না

কে কার কাছে বাঁধা পড়ছি আগে;
কতটুকু হয়েছি ঋণী
একটু বলো
সে-কথা শুনতে ভালো লাগতো খুব; কখনো বিব্রত বোধ করিনি
বলতাম প্রশ্নের রহস্য কী খোলাসা করো
হেসে বলতে এই মনে করো
সকাল-সন্ধ্যা; দুপুর কিংবা রাত জোক করে বলতাম তবে বাজি হয়ে
যাক্ তুমি তা মানতে বার-বার নারাজ। অপারগ হলে বলতাম সবার
অধিকার একই রকম; সবাই একই বৃত্তে ঘুরে ফেরে চলে কিংবা মনে করো
স্পর্শ পেলে লোভ বেড়ে যায়
দেহে কম্পন তুলে সমান-সমান



মেঘের গুঞ্জনে সোজাসুজি বসি তাই মৃদুকম্পনে হাসছে রোদ, কাঁপছে জানালা কাচ,
উড়ছে নিমপাতা পুড়ছে দেহ জাগা গাছ
তোমার স্বপ্নে ডালে ডালে দুলছে আধাপাকা আম। কারণ ছাড়াই বলে উঠতে হঠাৎ আমার শরীর ছুঁয়ে দেখো কাঁচা মাংশের গন্ধে ভাসছে বৃষ্টি বর্ষারাত। আমি তো রাত্রিকে জড়িয়েছি দেহের ভাঁজে; দেখবো পুরোটা মেঘে তবু যদি লোভাতুর চোখে কখনো জল তৃষ্ণা জাগে



আমি কি জানতাম বৃষ্টিফোঁটায় জ্বলে যাবে স্মৃতি-লিখে নেবো চোখে
যত বদনাম। ডাল-পালায় উড়ে যাবে কথা; পাতায়-পাতায় ঝুলিয়ে
দেবে দ্বিধাদ্বন্দ্ব যত সাথে তুলে নেবে মান-অভিমান। তবু রাগ করো
না;
ধুলোয় মিলেমিশে থাকো
হয়ত একদিন বৃষ্টিও রোদে ফেটে যাবে
আমিও সে-দিন জল কেটে লিখে নেবো রাত্রিকাহন



চোখের শরম কি খেয়ে নিল কেউ একবার বুকে হাত রেখে বলো
ওজন করো; দেখো কার দেহে কত আছে ঘূর্ণিপাক। দেখো কার স্বাদ
কেমন লাগে; কার দেহে ফুটে আছে পোড়া ক্ষতদাগ। তাই তুমিই বলো
এবছর কি ফিরে আসা ভালো
ফিরবে কি কেউ আমার মতো করে
ব্যর্থ অভিযোগ নিয়ে; তুমিও তো সব ছেড়ে চলে গেলে দূরে; পুড়ছি
তাই চৈত্রের তাপদাহ রোদে আমাকে ঘুমুতে দেয়নি তোমার বধু বেশে
বেজে ওঠা বিয়ের সানাই



আমি গোপনে ধূপ জ্বেলে রাখি; স্মৃতি সব পোড়াই
ফলে খরস্রোতে মিশে পড়ো তুমি
আমি শুধু বাতাসের
শব্দ জপে বৃষ্টিকাঙ্খায় একা বসে থাকি। জানি স্বপ্ন
সাজাতে কেউ আসবে না আর
তোমার জন্য প্রতি রাতে
একটি করে মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখি

 

অন্ধঘড়ি

গতি টেনে পাশাপাশি বসে গেলাম, হউক না সে দীর্ঘ অবসর; অন্ধঘড়ির কাঁটার মতো ঘুরে ফিরে আসুক; রাত্রি গুনতে শিখুক মৃতসময়। জলঠোঁটে জমা পড়ুক ঘুমবালিশেরপাঠ আর অন্ধঘড়ির ভেতর আসা-যাওয়া ভালো কিন্তু রতিগন্ধা শাদাতীর কেনো যে স্মরণ রাখে মনের ফিকির। এই শীতে কোথাও যাব না জেনে, আশা বালিকাটি কুয়াশামাখা রোদে মাপজোক নিচ্ছে ঘনত্ব জেনে; অথচ শীতরাত্রিরাও আমাকে জাগিয়ে রাখছে ঘুমপাহাড়ের দেশে...।

গতি টেনে পাশাপাশি বসে গেলাম, আকাশটায় দেখছি বৃষ্টির রজঃস্বলা
আশা বালিকাটির রহস্যকাহিনী অন্ধঘড়ি মতো অবিরাম ঘুরছে একে

মনচুরি-ভয়চুরি

মৃতসঙ্গ দূরে থাকা ভালো আমাদের মাঝখানে; চুক্তির কানাকড়ি এবার দেখি চুম্বনেচ্ছা কি করে টের পায় মনচুরি-ভয়চুরি! টেনে রাখা একদিনের দৃশ্য আর কত দিন ভাবাবে সেকথা ভাবলেই আমার সকল বিশ্বাস আলাদা প্রাণ পায়, আর আমাকে ফুরফুরে রাখে পুরনো সময়। এসো মৃতসঙ্গ হাত ধরাধরি শিখি; শিখি দূরে থাকার চৌহাদ্দি... মন ফুরালে কি হয়? মনভয় কেনো এতো রহস্যের ভেতর খুঁজে অস্থিরতা, ভয়। ভয়ের কি শব্দ হয়?

মৃতসঙ্গ দূরে থাকা ভালো, আমি গুনে নেবো পুরনো সময়
মনের রহস্য তুমি স্বস্থি পরে নাও,
আমি পরি তৃষ্ণার্তহৃদয়

বৃষ্টিবন্ধু

আজ এই উৎসবের দিনে সাতসকালে পূর্বাকাশে সূর্য্যবন্ধুকে ডেকেছি। এসো তোমার জলচুলে সিঁথি-সাঁতার কাটি, গেঁথে দেই একগোছা গোলাপ-চ্যামেলী-জুঁই। শুধু আজকের দিনে পরান খুইল্যা কথা কও...। আর একবার মন খুলে পাঠ করো, আমি যা ভাবি- ঠিক তাই...। কারণ বৃষ্টির পরানিয়া জল আজ মনে ধরেছে খুব, তীব্র শীতের চাপে। এই ঊনত্রিশ যে সামাজিকতা মানে না

অনেক সহজ কথার ভেতর কাকে যেন পাঠ হল জানিনা
বৃষ্টিবন্ধু সে কি জানে?
ঊনত্রিশ যে সামাজিকতা মানে না

যৌথশোক

চোখের নজর ফলাও দূরে, ধরা পড়েনি তো আগে, দিনে দিনে বেড়ে ওঠে ভয়; বেঁচে যে আছি তাও ভয়ে-অভয়ে... আমি এক ভিন্ন পথের মানুষ। এবার যদি প্রশ্ন করো কেউ কি ঠকিয়েছে ভয়ের ভেতর? আস্থায় বলবো আমার কি ঠকানোর ভয় ছিল কোন কালে? সহমত যেন ভরা যৌবনা টেমসের জল... আড়ালে খুলে রাখা যৌথ মনের শোক। বলি যৌথশোক, সব কথার ভেতর সম্মতি চাওয়া কি ঠিক?

বলার অনেক ছিল! কিছুই বলতে পারিনি, থাক্ না মনে
সে ক্ষমতা দেয়নি যৌথশোক,
জমাতে পারিনি কলমে...

মনচরাচর

তিনদিনের বেশি রাগ ধরে রাখতে পারি না বলে মন তুমি স্বস্থিতে থাকো, তবে কেনো গোপনে এতো এতো দুঃখ পাও; তার ব্যাখ্যা করো; একবার জানতে দাও দিনের পর দিন কিভাবে বশ করে রাখো এতো বেশি রাগ! না-কি আমার ধারণাটুকু মিথ্যা ফলাবে আজ। সময় কিন্তু ফুরায় না আমার, কষ্ট হয়, দুঃখ হয়, মন খারাপ থাকে বন্ধুটির তার-সম্পর্ক না পেলে...

চাই তার-বন্ধুর সাথে যোগাযোগ হউক আরো নিবিড়
আমি তাঁর কন্ঠের ভেতর মনচরাচর,
হারাই অষ্টপ্রহর...

বৃষ্টিভণিতা
 

বাসস্টপে বসে থাকার মানে মুঠোফোনে সময় গুনা নয়, সুযোগ পেলে তাকে মনে রেখে পাঠ করে যাই দু-চারটি কবিতা;  মনে আসে ফেরার তাড়া; বসে থাকার মানেই তো কঠিন অপেক্ষা... সে আমার অতীত বেলার কথা; কি যেন মিস্ করে এলাম কি যেন চাওয়ার ছিল ভীষণ বেহায়া। সেসব বলতে মানা তারপর ভিন্নকথা রাত পেরুলেই আবার রুটিন মেনে কাজে রওয়ানা.. নাহ্ এই সব আমাকে দিয়ে হবে না

অন্যকথা বলো- আমিও শুদ্ধ হবো, হৃদয়পাড়ায়
চাওয়া তো ভীষণ বেহায়া-ই হবে বৃষ্টি-ভণিতা

বিশ্বাস চিরকাল বাঁচে না
 

সেদিন আমার সব চিন্তায় মিশে গিয়েছিল সাবলীল ঘুমে, আর সেই ঘুমের ভেতর শোনা হল কথা! যে ভুল করেছো যৌবনের প্রথম প্রহর গুনে; সে ভুল আর কখনো করো না। তাকে বলেছি ভুল তো হয়ে যায় বিশ্বাসের...। যখন ঘুম ভেঙে গেল বিছানায় শোয়ে-শোয়ে ভাবলাম এ-ও ঠিক যে বেঁচে থাকতে হলে কাউকে না-কাউকে বিশ্বাস করতেই হয়। কেনো এ বিশ্বাস জন্মেছিল বুকে, সে প্রশ্নর উত্তর খুঁজছি আজও



বিশ্বাস চিরকাল বাঁচে না; হিংসাও খুঁড়ে তুলে আরো যত কথা
বিশ্বাসের দ্যুতি সর্বত্র ফুটলেই,
আমাদের বিশ্বাসে জমবে ব্যথা

চারদেয়ালের কথা
 

মানুষ যা ভাবে, সে কি ভাবনার পুরোটা বলে... সে কথাটি ভেবে ভেবে আজই প্রথম চোখ গুলিয়ে চারদেয়ালকে একসাথে দেখলাম। আর তাদের বললাম আমাকে ডাক দিলেই পেয়ে যেতে পারো তোমাদের গোপন আড্ডায়। হউক না সে আড্ডা আয়োজনহীন। যতই হউক না অপেক্ষার পালা নিরুত্তাপ ফুলের ঘ্রাণ। আমরা বসে থাকলেই দেখবো আমাদের কথার ভেতর উড়ে যাবে একরাশ শাদাকালো মেঘ। পরিপাটি যত জমানো আবেগ...



মানুষ যা ভাবে, তাঁর প্রথম ভাবনাটি কিন্তু মৃত্যুই হবে হয়ত
আমার চারদেয়াল কালো থাকা চাই... তোমার হৃদয় সহিত

একটুকরো মোম
 

আমার ভয় যথেষ্ট ক্ষমতাবান হয়! আমাকে গ্রহণ করতে চায়; পুরো অধিগ্রহণ যাকে বুঝায়। ভয় তবে চলো আজ না হয় একসাথে গভীরে যাই জ্বলন্ত মোমের ফোটায় আমাদের পরিণাম কি এভাবেই নামতে শিখেছে আঁধার ছায়ায়
 


আমার ভয়, আমার পরিণাম কখনো হবে না ব্যর্থপ্রেম
দাহতা নিভে গেলে তোমার প্রণয়শিখা একটুকরো মোম

বারোমাস নদী পাড়ে হাঁটি
 

কথকতা মনে আসে, অনেক কথা ভুলে গেলেও চলে: যেভাবে বুকচাপায় মনের শুশ্রুষা চলে, চলে স্বতন্ত্র সমর্পণ। তুমি লিখে ফেলতে পারো আমার সহ-নিঃশ্বাস; পতনপ্রয়াস। ও-ভ্রমণবাতাস শোনে যাও? বন্ধুত্বে আমার কোন দংশন নেই। নেই স্মৃতিস্তব্ধতা, কিম্বা পরস্পরাহীন মায়াদর্পণ। শুধু বারোমাস নদীপাড়ে হাঁটি; কান্নানদীর সন্তরণ শেষে খুন হতে দেখি স্মৃতি আর ঈর্ষাচুরি!



মনের কথকতা পুনরায় জাগে বাস্তবতা ছুঁয়েছো কার অছিলায়
ও-ভ্রমণবাতাস?
আমাকে কেনো যে দোলাচ্ছো ধুলোহাওয়ায়

প্রিয় আঙুলের দোলা
 

এই যে একটুকরো মাংসের সাথে মিশে আছে চর্বি; চর্বির রং কোনো শাদা হল? কেনো চর্বি আলাদা করলে মাংস তরতরে কাঁপে! কাটার ফাঁকে ফাঁকে যে রক্ত মিশে থাকে; ওই রক্তের ভেতর হাজারবার খুঁজে ফিরি স্মৃতিকারখানা; দুহাত ভরে আমি তাকে আদর করি। রক্তের সাথে বের করে ফেলি তিনটুকরো মাংসের দীর্ঘশ্বাসসহ পুরো নাড়িভূড়ি। আমার কাটা আঙুলের রক্তের সাথে মিলিয়ে দেখি তারও একই রূপরঙে রক্তারক্তি-টিটকিরি! বলি তুমি আমার নাগাল পাবে না; প্রিয় আঙুলের দোলা
 


রক্তমাখা সারাদিন ফুরায়; মাংস কাটা ফুরাতে চায় না
তোর সঙ্গ দিতে ইচ্ছা আমার দু
টি পা; কিন্তু পারি না

 

রাতকাহন
 

রাত হলে অন্ধ হয়ে যায় চোখ
ঘনালে আমিও চিবোতে থাকি স্মৃতি

রাত্রিগভীর হলে আমিও গর্ভবতী হই
বেদনার বীর্যপাত সেরে চলিষ্ণু বিলাপে
গর্ত খুঁড়ে চোখ
আহ্লাদি তৃষ্ণা যত একে-একে
জাগে
রাত্রি গভীর হলে তুমি পুঁতে রাখো বেদনার ঝুড়ি
জ্যোৎস্নাকে কি কখনো ধরে রাখতে পেরেছো; তাই
ভাবনাকে বারবার ভেঙে দেখি

সহজে ঢুকে যাবার কোলাহল
 

অতিসহজে আমি ঢুকে যেতে পারি যে কোনো কথার ভেতর; কিন্তু সহজে বেরোবার রাস্তা খুঁজে পাই না। আমাকে ক্ষণে ক্ষণে চিনে রাখে দূরের হাওয়া। কথারা অবিরাম উজানস্রোত বেয়ে যায়; আমাকে জড়িয়ে ধরে কারো হালকা-ভারি বেদনা। দুঃখও গুটিয়ে রাখা যায় আপন মহিমায়; যদি জাগ্রত হয় শক্তহাওয়া। এই হাওয়ার ভেতর আমি চোখ খুলতে পারি; স্মৃতি-স্বপ্ন খুলতে পারি না



অতিসহজে যদি খোলা যেত; দেহের ভাঁজ ও ঘ্রাণ
দুঃখ গুটাতো সহসা;
আশাকথা হত না অপেক্ষমান

সান্ত্বনা
 

সব পথ পরিভ্রমণ করেছি বলে নতুন পথ খুঁজি
জল থেকে উঠে ভাবি এ তো ছিল সব আদি অন্ত

অহমের দহন প্রকাশ
গন্তব্যে ফিরছি কলঙ্কী সেজে, কলঙ্ক তো আমারই ঘাড়ে
মল্লিকার কলঙ্কের মালা গেঁথে রেখে দেব শুভ্র পাতায়
সব গ্লানি ধুয়ে নেবে যৌবনের স্রোতধারা জল

 

 

কোণাকোণি সব আয়োজন
 

আনন্দকে পান করা ছাড়া কিছুই ভালো লাগে না।তোমার নিরবতা কাঁধে নিয়ে হাঁটছি অনেক দিন হল।কেনো হাঁটছি? কেনো এতো বোঝাপড়া! ভালোই হতো; যদি না-হতো প্রথমদেখা। এখনও ধ্যানে বসে ভাবি যদি শেষ থেকে শুরু হয়, জড়িয়ে থাকে কোলাহল; হউক না দেরি হয়ে যাবে হাড়ের মিলন; কোণাকোণি সব আয়োজন। আমি তো স্মরণ রাখি যত অবহেলা; ভাঙা-ভাঙা নিঃসঙ্গতা। প্রথমদেখা কিছুই হারানোর নেই তোমার; কিছুই হারাওনি তুমি



কি করে যে মিথ্যে বলি
স্বপ্নে যাকে করি চাষ
মনের প্রতিটি অনুভবে-অভিমানে অদৃশ্য বসবাস

ইচ্ছা
 

জানি পথের ভিড়ে এখন রোদপথ হারিয়ে ফেলেছি
আর আবদ্ধ হয়ে পড়ে থাকি সব সুতোজালে
তবে কেন?
কোন বিলাপের মত্ততায় করিলে কাঙালপনা
হয়তো-বা দীঘল সময় পচা ডিমের খোলস হয়ে
নিরলে কথা বলবো আকাশের প্রান্তে
নয়তো যন্ত্রণায় কুঁকড়াবো চৌদিক কম্পাসের মতো

 

আঙুলফল চাষ
 

বুকের ভেতর আটকে যাচ্ছে দম! তুমি চিন্তা থেকে সরে দাঁড়াও প্লীজ। আমি ট্রাই করে দেখি আঙুলফল চাষে খুলে যায় কি-না দেহের কুণ্ডলি। এমন দক্ষেপ অনাধিকারে খাড়া হতে থাকে; বদমেজাজে। মন খারাপ করে থাকা, হয়ত একদিন এসেছিলে অতি গোপনে; বৃষ্টির পাশাপাশি। আর তুমি কি-না বারবার বলো; অপেক্ষা করো; একদিন ঠিকই তোমার উপলব্ধি জানিয়ে দেবে আমার অনুপস্থিতি



কিছুই শিখিনি আমি
হেঁটে হেঁটে উঠতে শিখেছি শুধু সিঁড়ির ধাপ
ও-আঙুলফল চাষ; আমিকে কি শিখানো যায় না;
দেহ-কুণ্ডলি-আক্ষেপ

পথরেখা
 

পউষের হাড়ি থেকে বেরুলো যে বাতাস, সে কী-না
স্বজনতা পেতেছে শিশিরের সাথে; আমি শিশিরের
রেখায় দাঁড়িয়ে ছুঁতে চেয়েছি বাতাসের তত্ত্ব
তার আগেই রূপ লতার মতো ঢুকে গেছে
আমারই গোপন মাংসের ভাঁজে

রক্তনালী বিক্রিত হলে ভাবালুকথার কলকব্জার
স্রোতজলের বাহারী তিলক পরিয়ে দেবো অই
রোদপথের ঠোঁটে

 

 

দিনের স্মৃতি খুন হয়
 

আমাদের বিষন্নতা অপরাজয়। যার জন্য সারাদিনের স্মৃতি খুন হয়, একই জায়গায়! আমি যদি দুর্বল হতে থাকি পায়ের তলায়। বাঁধা নেই, সময় আমাকে আলাদা ভাবতে শিখিয়েছে; পরিনাম আপন মনের ভেতর মন খুলে ফেলা যায়। শুধু জানতে হয় একটি আদর-চিহ্ন কতদিন বাঁচে, জীবদ্দশায়। আর কতদিন সৌরভ ছড়ায়? আমাদের জীবনগ্লানি যেদিন ছুটি পাবে, সেদিন দেখবো প্রতিশ্রুতি কার নাম লয়...



শুধু জানতে ইচ্ছে হয়; আদর-চিহ্ন কতদিন বাঁচে,
চন্দ্রিমারাতে আমারও জীবনগ্লানি মন খুলে নাচে

স্বপ্ন
 

আর সে পথের নিয়ড়ে কান ধরে শুনেছি ভিন্ন
মৌনতার দ্বীপ ঘিরে ইদানীং ছুটছো চরকির টানে
ছুঁতে ছুঁতে নির্মাণ করেছো হৃদ্যতার কুটির
ড্রাগনের চামড়ায় আবৃত করো স্বপ্নমাখা তুলতুলে শরীর
না হয় পিঁপড়ের কামড়ে কামবেগ হতে পারে
আনন্দ নিয়ে ক্ষতচিহ্ন ভরে যাবে রূপালি মুখ