টিপ

 

দেহে জেগে আছো জেনে শীতঘন বনে
অতি বিনয়ের সাথে তাকাতে হয় গোপনে
তোমার ভাষ্যমতে চোখের তৃষ্ণা দেহমনে
বশ এনেছি পুণ্ড্রবর্ধনের কাছে

দ্বিধায়-ত্রিধায় পুণ্ড্রহাওয়ায় চাপা দিতে দিতে
তাকেও নজরানা দেব রাত্রিগণকের হাতে

নিরলে তাকালে গোপনে তার ব্যাখ্যা, অদ্ভুদ সুন্দর!
সবই তো নিয়ম ভুলে যাওয়া কৃতি...স্থির প্রতিকৃতি
একদিন তোরও কপালে টিকলি পরাবো চিহ্ন... যতি
সোনালি রূপালি-গোলাপি টিপ পরাতে চাই সম্মতি

বাতিঘর


যতই স্পষ্ট ছিল বাতিজ্বলা ঘর, বাকিটুকু ছিল শুধু রাতের নীরবতা
তারচে
রহস্যঘেরা ছিল তোমার হাসিঝরা মুখ আর আড়ালে থাকা
আনকোরা মায়া, কথা।কতবার নতজানু ভাব নিয়ে ঝরাপাতার মতো
ঝরেছে রাতের প্রত্যাশা। তাই বৃষ্টির অন্তরালে চোখ পাতা ছিল

সহেছি বিজন ব্যথা

 

অশ্রু তুলে নেয়া যায় না


সাঁতার শেখোনি তাতে কী, ডুবে যাও জলে
ঢোকে ঢোকে গিলে ফেলো সবটুকু জল
শুকিয়ে ফেলো ডোবা-নালা দীঘির ও পুকুর

শুনেছি অশ্রুতে ভেজাতে পারো বুক,শাড়ির আঁচল
আমি জানি অশ্রু দিয়ে রুমাল ভেজানো যায়
রুমাল থেকে অশ্রু তুলে নেয়া যায় না
সময়ের বিবর্তনে সবকিছু হারায়, হারিয়ে যায়
স্মৃতিরা কখনও সখনও দূরে যেতে পারে

কখনও হারাতে চায় না

তাই বলি সাঁতার শেখোনি তাতে কী, জল তুলে নিতে পারো
কিন্তু তোমার জলের কাছাকাছি
যেতে মানা

 ...........................................................................................

ধ্যান


তাকাও তুমি? চেয়ে থাকো ফুসফুস
তুলে রাখো কোষ
থ্রম্বোসাইটে
আমি মাইটোকন্ড্রিয়ার ধ্যানে আবদ্ধ
তুমি
প্রোটোপ্লাজম হয়ে বিচরণ করো ফুসফুসে

একত্র হবে দেহকোষ, জেনে নেবে মাইটোসিস-মিয়োসিসের
চতুরতা। কত প্রশ্ন জমা হলো ডিম্বকে, আমি যৌবনে শিখেছি
বাইশ জোড়া ক্রোমোজোমের অজানা কথা। আর
একজোড়া
ক্রোমোজোম আজো তোমার জন্য একপায়ে খাড়া

 
শেষ জীবন ছায়া

নিরিবিলি কথা চুপচাপ থাকা, হাসি কান্নার ভেতর শরীরকে রাখি ঝরঝরে; তরতাজা।

সে আমার তৃতীয়জীবন।

দ্বিতীয়জীবন সুখে-দুঃখে বেঁচে থাকা। আর প্রথমাজীবনানুভূতির জায়গাটা কি হবে না তোমার ছোঁয়া? এই তিন পায়ের শেষচাপ এতো বেশি ভাবায়, আত্নগরিমায় নয়, মন-মানসিকতাই আমাকেই দেখায় শেষজীবনছায়া।

 

শেষজীবনটাকে আমি বেছে নেব,  কোন জীবন তোমার কাছে প্রিয়
নিরিবিলি কথা চুপচাপ থাকা তোমাকে কি মানায়? আমার সত্তায়

 

আবছায়া


জলে ভাসে জল, চোখ হয় লীন
রহস্যে ঘিরে রাখো সব, স্থির থাকে মায়া
রাত্রি গভীর হলে ঘুরে আসে যে মুখ
সে কি তুমি?

দক্ষিণে সমুদ্রমহাল,
উত্তরে আবছায়া...

একা দাঁড়িয়েছি আমি আর যৌব

 

কুড়ানো মাশুল


কুড়িয়ে যদি নাও আর্তচোখে
কিছু তো হালকা হবে
-
অন্ততঃ একদিন পাহারা দেবে
হৃদয়হীন মনের জোর
বাকিতে আপাত একদিন হলেও হৃদয় সম্বল
আর যা হবে সবই ভাববো ইচ্ছামৃত্যু কিংবা
ভুলের মাশুল


 

জল কুড়ানো দীর্ঘশ্বাস


একাকী বাড়ি ফিরিনি কভু বৃষ্টিপাত হলে
তুমি বলতে ভাদ্রমাসে শান্ত পুকুরের জলে
শুয়ে পড়ি এসো; লাজ শরম ভুলে

দীর্ঘ অপেক্ষা তোমার; দীর্ঘশ্বাস কুড়াও জলে

সংকট


রোদ সংকট পুড়ছে ছায়া তাই আমার দু-হাতে জমেছে খরা
তোর দু-চোখ বিভোর সোনালি স্বপ্নে; আমি আজো স্বপ্নহারা

আজ মুঠো ভরে রেখেছি অশ্রু -তোর চোখে পরাবো কাজল
তুই দাঁড়ালে না পাশে মুঠো খুলে দেখি অশ্রুতে ফুটেছে কান্নাজল

১১সেপ্টেম্বর


চোখ বুঁজে যা কিছু দেখি ভালো লাগে খুব

আহ! কি সুন্দর দেহ-লতা রুগ্ন নাভিখানী

পঁচিশ তো পার হয়ে গেলো কে তা জানে
হাড়ে ফুটেছে যন্ত্রণা, তাই কুঁজো হয়ে বসি
দিবারাত্রিমধ্যদুপুর

কার নাম ভালোবাসাবাসি; বাকিটুকু সে শুধু জানে
বৃষ্টিপাত হলে কেন? কেনো জানি বুকে জ্বালাতন বাড়ে

যা দেখি ভালো লাগে খুব, ভালো; আরো ভালো রাত্রিদ্বার
গুনে রাখা স্মৃতিগুলো মনে হয় রূপকথা হারানো সংসার

শেষটান ছেড়ে দেখি বুকে ব্যথা বেড়েছে দ্বিগুণ; চোখ ঢাকা ঘন অন্ধকারে
ঘোর কেটে গেলো কবে জেগে দেখি তুমি মুগ্ধ করেছো দেহ চুপিসারে


 

একশ্বাসে দীর্ঘশ্বাস

স্মৃতির করাঘাতে অসংখ্য মুখ দেখে
চাপা ক্রোধে নিজেই পুড়ি, কিছুই জানলে না
পাঁজরের নিধি
শেষ অংশে পরাজিত করে বললে- এভাবে
চলতে পারে না;
তারচে
বসো একশ্বাসে
দীর্ঘশ্বাস শুনি

আমাকে ব্যবহার করো চঁওকি;
দিবস রজনী

চি্ন


কত আগেই তো বন্ধক রেখেছো শরীর
শুধু দ্রবণের ক্ষরণটুকু বাকি, মুঠোভর্তি খাম
তাই রক্তে লবণ চুষে খায়; মুঠো খুলে দেখি
আমার স্বপ্ন আঁকা পাখিদের ঠোঁটে

গাছ গোপনে রস টেনে নেয়
পাতা মেলে ধরে তার করুণ স্মৃতি
স্বীকার করি
আপত্তি যত সময় আর সুতোর ধারে
অনিদ্রায় আঁধার ঘনালে তুমি দেখি বহুক্রোশ দূরে

অন্যস্বাদ


যদি আড়াল হতো পর্দা আর জানালার কাচ
তবে ভ্রমণ শেষে আঁকা যেতো দূরের স্মৃতি
দূরাগত বাতাসে ডুবতে ডুবতে শিখতাম নাচ
কথার ভেতর হারাতাম নিজাধীন মোহদ্যুতি

সুযোগ বুঝে ঝাঁপ দাও; দাহে-প্রদাহে
আমি 'ধাই ধাই' নাচি... ফেরার ভাবনায়
কোন দিকে দাঁড়িয়েছো আর্দ্রমোহ?

ছুঁয়েছো দেখেছো কি আয়নার আড়ালে নিজের ছায়া
জলের নিচে জেগে ওঠা কোলাহল; রহস্যদানা...
তোমার জন্য দেহের চারপাশে ছিটিয়েছি বিস্তর মায়া

অভিমান


শীতল বাতাসে শিহরণ তুলে অশ্রু জমেছে দীর্ঘরাত, তবু নিদ্রা জাগেনি
ঘুরতে -ঘুরতে কিনারে ঠেকেছে বাতাস; সহস্র রাত্রি কুড়োনো স্মৃতি শুধু বৃষ্টির জন্য কিনি

বাতাসে শরীর ছুঁলে কপালের ঘাম মুছে নাও পাশাপাশি বসে
আমার শরীর জুড়ে গ্রামের গন্ধ; মনে করো জমেছে তোড়া-তোড়া দীর্ঘশ্বাস

দূরে তাকালে রোদে পুড়ে চোখ; তুমি দূরে রাখো ঠেলে
বাতাসে শরীর ছুঁলে উড়ে যায় স্বপ্নফুল এই তো দলে-দলে
আমি তো বাঁধা পড়েছি বৃষ্টির জলে নয়, তোমার ঘনকালো চুলে

ভয় ছিল তবু ছুঁয়ে দিতাম ডানাওয়ালা চুল
চুলের পরিখা, তুলে নিতাম গোছা-গোছা ঘ্রাণ
হাত ফসকে গেলে মনে হতো কার বুকে জমা রাখা
চাপা অভিমান

পরিতাপ


পরিতাপের ভাষা জানা নেই; তুমি দাঁড়িয়েছো কপাট খুলে
তাই বলে কি স্পর্শদোষে দীর্ঘশ্বাস ছুঁড়ে ফেলা যায়
কারো প্ররোচনায়
একা ঝুলে আছি চিরতার ডালে দু-জনের স্বপ্ন খুলে
তুমি পায়ের পাতায় গেঁথেছো কন্টকফুল; ক্ষতহাত
সবই জানে তুমি কি জানো, তোমার চোখের সৌন্দর্য
কীভাবে ঢাকা পড়ছে এক্সট্রা চশমার ফাঁকে
দূরত্ব কতটুকু জমা রেখেছো বলো ঘূর্ণন বাতাসে

পরিতাপের ভাষা তালুবন্দি করো; কপাট খুলে ওইখানে
আমি তুলে নেবো বুকে জমা যত অস্থিরতা রাত্রিবেলায়; অতি গোপনে

 

রাত্রির ফাঁকে আনমনে ভোর


তোমার পায়ের কাছে রাত্রি হেলে গেলে
আমি রাত্রি কুড়োতে যাবো তোমার পাশে

বার বার বলি একবিন্দু জল স্পর্শ করো না উজবুকে
সাবধানে ফিরে এসো, চেয়ে দেখো আনমনে
চাঁদের গায়ে কিভাবে উষ্ণরাত্রিকে শুষে নেয় ভোর
যেভাবে পাশ দিয়ে শুয়ে ছিলো বৃষ্টির শরীর
তোমার নভোমুখে

তুমি তো শুঁকে ছিলে অনায়াসে জ্যোৎস্নারাতের নিঃশ্বাস
এবার বলো তো দেখি

চাঁদ তারা একত্র হলে- কিভাবে ঠোঁটে ঠোট চাটে
 

অচল মুদ্রা


নিরবধি শূন্যতার সত্তাকে অযথাই কাঁপায়
এ প্রশ্নগুলো দাঁড়ানো মধ্যবর্তী কালের কথায়
তোমাকে নিয়ে কিছু লিখতে চাইনি তবুও ভাবনায়
তুলে রাখতে চেয়েছি সব কথা দিনের কল্পনায়
অতঃপর ছবিগুলো বোবার মতো বারংবার উঁকি দ্যায়
ছুঁ
তে চেয়েছি শ্রাবণের বৃষ্টি কিংবা তোমায়

যত ডুবে থাকো জলমালতি নিদ্রাজলের কথায়
দেখতে দেখতে বয়স বাড়ে, কত স্মৃতি অনিচ্ছায় হারায়
হারাবে না আমাদের স্বপ্নগুলো অচল মুদ্রায়

যদি চাও বলো
কাল প্রাণটি পোষ্ট করে দেবো তোমার ঠিকানায়

অস্থিরতা


অস্থিরতা কেন এত বেশি তাতায়
আমি লুকিয়ে রাখি মুখ
অচেনা ঠোঁটের ধারে; লতা-পাতায়
তুমি এলে অস্থিরতায় ঠোঁটে জল পোড়ে
ফেনা থেকে যায়

ওইখানে আলোকরশ্মি রঙধনু মেখে
তুলে নিচ্ছে ঘ্রাণ, তোমার দ্বিধায় রোদ আজ
ত্রিশফুট নিচু হয়ে খুলে ধরছে আলোর বিচ্ছুরণ
আমি রোদের তিক্ততা পান করে তৃষ্ণা মিটাই
কেউ তো জানে না আসলে অস্থিরতা কেন এত বেশি
হিসাব মেলাতে শুধু তুমি দোটানায় স্বপ্ন পোড়াও


 

কাগজ কলম পাশাপাশি; আমিও বসে আছি। শব্দজট খুলছে না মাথায় সিগ্রেট শেষ হয়ে যায়।

নীলকালি-শাদাকাগজের ভেতর দিলাম লম্বা একটি টান কি হল এখন?সরলরেখা! সরল রেখার

ভেতরকাই গাঁথছি বন্ধন; হেফাজতে রাখছি শরীর রেখায় অবশ-করা কামরঙাদিন।ঐ ভাবে আর কত?...

ধরে রাখা বন্ধন! ব্যক্তিক জীবন? লম্বা টানের ঠিক মাঝামাঝি আঁচড় ফোটালাম দুইরেখা মিলে হলটা কি?

মন বলছে সন্ধি, আমি বলি মিলন

দুই রেখায় মিল ভাল; একা দাঁড়িয়েছি আমি আর যৌব
বয়সটা দড়িদড়ার শেষটান;
জীবন সিগ্রেট-চায়ের মধ্যক্ষণ

 

গোপন স্পৃহাগুলো প্রকাশ করিনি

আমাকে বিদ্রুপ না করাই ভালো; তারপর বলো কতটুকু বুঝলে হেলানো দেয়াল ভুলে?

বিদ্রুপ ছুঁড়ে দাও, দেখো; কে বেশি দুঃখে মিশে থাকে; কে বেশি খুঁজে হারানো পদচিহ্ন।আমি তো আছি;

 না  -চাইলেও পাশাপাশিযতদিন রোদফল হাঁটাহাঁটি করবে  দেয়ালে জানালায়  -দরজায়- সেদিন,

তাকানোর ফাঁকে লুকানো রবে চাওয়া-পাওয়ার গ্লানিমার কিছু কাঙ্খা ছিল গোপন রাখিনি

এ জীবন! খুবই প্ররোচনাময়; গোপন স্পৃহা প্রকাশ করিনি
করাত কলের পাশে একাই ধরে রাখি জল; আঙুলের গ্লানি

 

চোখের শর্টরেঞ্জে জল-
 

 

শিকল পরালে কি সকল অধিকার জল গলে নদী হবে? কিংবা নদী গলে জল? মৃতআত্নার গ্রহণ হউক চুপচাপ

তোমাকে পাবার কাঙ্ক্ষা কাটতে গিয়ে ক্ষুধার্ত আমি সহ হাতের রাশি; একা বসে থাকলেই সেও ভালোমানুষের রূপ

ধরে ! আর তুমি ওই মুখে রেখে যাও কল্পনা শব্দের ডালে বাজে হাতের চুড়ি;  আমি কেনো বাজি না, আমার দোষে?

তুমি কিছুই জানলে না রহস্যময় পাতা

চোখের শর্ট-রেঞ্জ জল ফরওয়ার্ড হলে, আমিও চোখে শিকল টেনে ধরি
শিকলপরা সব অধিকার কি হারানো চাবিসিন্দুক?... ভেবে ফিরি বাড়ি