তবুও
এখানে
আছি
এখানে টিনের চালে
ঝম ঝম বৃষ্টি নেই।
গলা ছেড়ে গান গাওয়া
ঝম ঝম বৃষ্টি নেই।
নেই।
তবুও আমি আছি।
তাই কি হয়?
এখানে মাঝ পদ্মার ডিঙিজালে
রোদ ঝলমল ছটফটানো ইলিস
দেখিনা কোথাও।
সরষে ইলিসে, তেলের আচারে
হাতমাখা খিচুড়ি
পৃথিবি ভোলায়না আর।
তবুও আমি আছি।
তাই কি হয়?
এখানে বৈসাখি আড়ঙ থেকে
জিলাপি হাতে দৌড়ে ফেরা সিসু
জানালায় দাড়ানো
মায়ের চোখের কোল ভেজায় না।
বাসর রাতে ঘোমটা বউয়ের
সব ভোলানো দৃষ্টিতে
পুরুষ হৃদয়ে সমুদ্র সাইক্লোন
দেখিনা কখনো।
তবুও আমি আছি।
তাই কি হয়?
এখানে রাতের আধার সরিয়ে
সুরেলা আজান
জিবনকে জাগিয়ে তোলেনা আর।
ঠিক সন্ধ্যায় হঠাত,
পাসের বাড়ির সিদুর বধুর হাতে
বেজে ওঠেনা স্মরন-সঙ্খ।
তবুও আমি আছি।
তাই কি হয়?
এখানে ঢলে পড়া বিকেলে
সিড়িতে বসা দাদাজানের
ওজুর গড়ানো পানির স্রোত
ঝকঝকে তকতকে উঠোনে
খোদাই করেনা ব্রহ্মপুত্রের মানচিত্র।
দসমির বিসর্জন সন্ধ্যায়
ঢাক-ঢোলের পাগল মাতনে
দৌড়ে আসেনা কোন কিসোরি
নদির ধারে।
তবুও আমি আছি।
তাই কি হয়?
এখানে একুসের কাক ভোরে
ভেসে আসেনা আর
রক্ত উথলে পড়া সেই সুর
অথবা
পচিসের মধ্যরাতের
গা
ছম ছম করা সময়টাও
ফিরে ফিরে আসেনা আর
আসেনা।
তবুও আমি আছি।
তাই কি হয়?
এখানে রক্তে ভেজা ইটের পাজায়
ছড়ানো ছিটানো লাসের কথা
ভুলতে বসেছি কখন।
মাটিতে দাড়িয়ে থাকা
সাতটি স্তম্ভ
এক বিন্দুতে মিলে মিসে
আকাস ভেদ করেনা কখনো
তবুও আমি আছি।
তাই কি হয়?
এখানে আমাকে সামনে রেখে
নামাজটি পড়া হয়না প্রাঙ্গনে।
একগুচ্ছ সাদা টুপি
এগিয়ে চলে না আমার পাসে পাসে
কলেমার উচ্চারনে।
গন্তব্যে।
কি
আসচর্য,
তবুও আমি আছি।
বাল্টিমোর
ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০০৭
|