সম্পাদকীয় ছন্দাবলী -২৭
অরুণকান্তি কে গো যোগী তুমি
তোমার সৃষ্টি মাতায় আজও মাতৃভূমি
বলো কার লাগি মরমে ফাল্গুন কাঁদে
এত গীত হাসি মাঝে দুয়ারে বিষাদে
খ্যাতিসুখ তোমার নয় তুমি ছিলে যোগী ভিখারী
জীবন সমুদ্রের মাঝি তুমি, তুমি মন পারাবারী
চেয়েছিলে মনের কারাগারে বাঁধা মানুষের মুক্তি
লৌহ কপাট ভেঙ্গে আনতে চেয়েছিলে জীবনে দ্যুতি
সৃষ্টির ঐশ্বর্য্য সাথে সমুদ্র গভীর সম্পদ নিয়ে
তুমি কেমন কাটিয়ে দিলে উদাসীন রয়ে
চির বিদ্রোহী তুমি, লেখনী তোমার হূল
অন্তর্যামী তুমি মন ভোমরা, ফুটিয়েছ কত ফুল
ফুলের সঙ্গে চিরকাল প্রেম করে গেলে
বিদ্রোহী প্রেমিক তুমি নীরবে চলে গেলে
বিপ্লবী তুমি আপন চিত্তমাঝে পল অনুপল বিপল
আপোষহীন জীবনে কলমের তীব্রতা কখনও হয়নি নিস্ফল
আগুন ঝরেছে তোমার কলমে মানুষ জেগেছে বারবার
শুখনো পাতার নূপুর তুমিই শুনেছ মন বনের এপার ওপার
জলতরঙ্গে ঝিলমিল ঝিলমিল রংগীন ঢেউ বারবার তুমিই তুলেছ
শাওন রাতে যদি মনে পড়ে নয়নধারা আপন কপোলে নীরবে ঝরেছে
বাহিরের ঝড়কে অবজ্ঞা তুমিই পেরেছ করতে বারবার
কোনও চাঞ্চল্যই উত্তেজনার কারণ হয়নি তুমি নির্বিকার
জীবনের ঘাত প্রতিঘাত হেরেছে বার বার তোমার কাছে
স্থিতধী পুরুষ তুমি লিখেছ নির্নিমেষ আমাদের মনে আছে
দারুচিনি দ্বীপবাসিনী তোমার মন ক্যামেরায় ধরা দিয়েছে
সেই সুমন্দ্রভাষিণী তোমার কলমের আঁচড়ে প্রাণ পেয়েছে
তোমার সুদীর্ঘ নীরবতা
তোমার নির্বাক বিদ্রোহ
তোমার গভীর দৃষ্টি বিদ্ধ করেছে
কত অসমীচীন সামাজিক ঢাল
আজ তোমাকে খুব প্রয়োজন নজরুল ভাই
তোমাকেই আমরা আবার ও বারবার চাই...
নব আলোকে বাংলার এই শ্রদ্ধাপূজা ও সালাম
তোমার পদপ্রান্তে রেখে জানাই শতকোটি প্রণাম...
১১ ই জৈষ্ঠ্য ১৪১৮, ২৫ শে মে ২০১১