নব আলোকে বাংলা

উত্তরাধিকার। অঙ্গীকার। দূরদৃষ্টি।

Humaira Haroon, Aroop Ghosh, Nauba Aloke Bangla

সম্পাদক

সুপ্রতীক অরূপ ঘোষ

পাঠক পরিষদ

চঞ্চল চৌধুরী, শুভলগ্না শোয়ারা

 

 

সম্পাদকীয় ছন্দাবলী-১

 

তোমার সাথে দেখা দীর্ঘ কুড়ি বছর পরে
দেখা হয়ে গেল ভাষা গোধূলীর জংলা পাড়ে
ভাষা বনমাঝে কাকঁড়ে বিথীর শব্দমলে
বন্ধু হয়েছে অনেকে ভিন্ন নীল মালা গলে
দীর্ঘ নীরব পাত্রাধার ভিন্ন বিষের জ্বালাতে
খুঁজেছি তোমাকে গভীর অন্তঃচোখের আলোতে
কষ্ট পেয়েছ ভাজা মৌরী ও লালা মিশ্রিত অপকৃতির ভিন্ন ভিন্ন রন্ধনে
সয়েছ কত-দেখেছ শত ভিন্ন চাটুকারী ও সাহুকারী বিপন্ন বিচ্ছুরণে

ভাষাহীনা তুমি ছিলে মোর সনে
শব্দমলের বন ছিল বনের মনে
একা একা খুঁজেছি তোমারে প্রতি রবিবার
শ্বাসরুদ্ধ তুমি নীরবে চেয়েছ প্রতিকার

এ কোন জ্যোতিচ্ছটা তোমার সিক্ত চোখের কোণে , তোমার হাসিতে!
এ কোন সুর বাজে দীর্ঘ অযতনে নীরব মোহন বাঁশীঁতে!
এ তুমি কোন সুধাপান করালে-আশায় মাতালে
আজ তুমি মোরে এ কোন অমৃত ধারায় স্নানিলে
দাঁড়িয়ে চলে থেমে বসে তুমি আছড়ে পড়েছ নব আলোক সঙ্গমে
আজ নতুন শুরু, আজ মিলন মেলায়, মিশে যায় কর্ম আর পারঙ্গমে
প্রাণ বলে বাচঁবো, মোরে বলে মরার বাড়া
তোমের সঙ্গ ছাড়ি দেব এমনই লক্ষীছাড়া!
লক্ষীছাড়া কথাটি তোমার মুখে ভারী মিষ্টি
আবার শুরু-আবার যাত্রা-আবার সৃষ্টি।

তাতক্ষণিকা লেখা হয়ে গেল
প্রকাশিত হলো নতুন আলো
নব আলোকে বাংলা পড় , বলো ও লেখ
মায়ের ভাষাকে আরো ভালবাসতে শেখ
এসো সবাই এসো এই নব আলোকের বাংলা মঞ্চে
বাংলায় লিখি,পড়ি, বলি-সুর তাল লয় ও ছন্দে
নব আলোকে বাংলা এগোবে নবরূপে নব আনন্দে।

৩১ শে অগাস্ট, ২০০৭
মুম্বাই

 

   
 

 

পাঠক পরিষদের কথা

 

প্রকাশের জন্য প্রদত্ত পান্ডুলিপি পড়ে মতামত দেওয়ার জন্য সম্পাদক কর্তৃক নিযুক্ত হয়েছেন দু'সদস্যের পাঠক পরিষদ। প্রদত্ত পান্ডুলিপিটি পাঠক পরিষদের অন্তত একজন সদস্যের মতে প্রকাশযোগ্য বিবেচিত হলে তা সম্পাদকের দপ্তরে পাঠানো হবে। সম্পাদক তার গ্রহণযোগ্যতা বিচার করবেন।

সাহিত্য কি?

সাহিত্য এমন একটি পেশা যেখানে ভাষা এবং সমাজ বিজ্ঞানের বিদ্যালব্ধ জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও অনুশীলন ব্যবহৃত হয় মানবাত্মার সামগ্রিক কল্যাণ সাধণের জন্য। এই কর্ম পদ্ধতি বিবিধ পন্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে বিবিধ প্রযুক্তির মাধ্যমে বিচারান্তে পরিশীলিত এবং পরিশুদ্ধ হয়। একজন ভাষাবিজ্ঞানী এবং একজন সাহিত্যিকের মধ্যে মূল পার্থক্য হলো একজন আবিষ্কার করেন , অন্যজন তা ব্যবহার করেন। দুজনের মধ্যে একটা নীরব সহযোগীতা থাকে - তার অবর্তমানে ভাষার অধঃগতি প্রাপ্তি হয়।

সাহিত্যে কলুষ নিরোধ বলতে কি বোঝায়?

খাবার জলে যেমন ধাতু প্রাবল্য অনভিপ্রেত সাহিত্যে সেরকম ভাষা ও বিষের অপব্যবহার অনাকাঙ্খিত। খাবার জলে অসংখ্য কলুষ পদার্থের আধিক্য যেমন খাবার জলকে ব্যবহারের অনুপযুক্ত করে তোলে সেরকম স্থুল ভাষা এবং অশালীন বিষয়ও সাহিত্যকে বিষাক্ত করে তোলে। প্রসঙ্গত প্রশ্ন আসে বিষাক্ততার সংজ্ঞার্থ কি? এই বিশ্বে এমন কি আছে যা বিষ নয়? বিষাক্ততা আসলে মাত্রা নির্ভর। এই মাত্রা নির্ণীত হয় জনস্বাস্থ্যের নিরিখে ও সচেতন জনমতের বিচারে। অনুরূপভাবে সাহিত্যে শালীনতা নির্ণীত হয় একটি মাত্রার সাপেক্ষে। এই মাত্রার বিচারক অবশ্যই নির্ম্মল হৃদয় পাঠক।

সাহিত্যে পেশাদারিত্ব

পেশা এমন একটি পদস্থান যেখানে অন্ততপক্ষে কলা অথবা বিজ্ঞানে প্রাগ্রসর শিক্ষা আবশ্যক। যেখানে কায়িক নয় বরং মানসিক শ্রমই প্রয়োজনীয়। এই সংজ্ঞা, পেশার তালিকা থেকে বর্জন করেছে ক্রীড়াবিদ, পুলিশ, দমকল কর্মী, রাজনীতিবিদ, অভিনেতা এবং সৈন্যদের। পেশাদারিত্ব হতে পারে বিদ্যালব্ধ বা অন্যথা অর্জিত। বিদ্যালব্ধ পেশাদারিত্ব তালিকাভুক্ত করেছে চিকিৎসা, আইন এবং ধর্মতত্ত্ব। ১৭০৯ সন অব্দি সাহিত্য পেশাদারিত্বের মর্যদা না পেলেও অষ্টাদশ শতাব্দীতে প্রথম এ মর্যাদা মেলে। সাহিত্য , শিক্ষকতা, এবং এঞ্জিনিয়ারিং বিদ্যালব্ধ পেশা না হলেও পেশা।
তবে সত্যিকার পেশাদার হওয়া একটি পেশায় নিয়োজিত থাকাই শুধু নয়। সত্যিকার পেশাদার তারাই যারা শিক্ষালব্ধ কলা অনুশীলন করেন জনসেবার তাগিদে।

সত্যিকার পেশাকে সংজ্ঞাবদ্ধ করা যেতে পারে সাতটি বৈশিষ্ট্য দিয়েঃ

১। পেশাগত সিদ্ধান্ত রচিত হবে সেইসব সাধারণ বিধি , তত্ত্ব অথবা প্রস্তাবনার মাধ্যমে যা একটি নির্দিষ্ট বিবেচনাধীন ঘটনা নির্ভর নয়।
২। পেশাগত সিদ্ধান্ত সূচিত করবে পেশাদারের একটিই নির্দিষ্ট মন্ডলের জ্ঞান, যে অঙ্গনে ঐ ব্যক্তি পারদর্শী। একজন পেশাদার তার নিজের পেশায়ই শুধু পারদর্শী এবং তিনি সব বিষয়ে পারদর্শী নন।
৩। পৃষ্ঠপোষকবৃন্দের সাথে পেশাদারের সম্বন্ধ উদ্দেশ্যমূলক এবং তা বিশেষ কোন আবেগ নির্ভর নয়।
৪। জন্মসূত্র, বর্ণ,ধর্ম, লিঙ্গ, বয়স অথবা সমিতির সদস্যপদ নির্বিশেষে একজন পেশাদার তার মর্যাদা এবং তার আর্থিক পুরস্কার অর্জন করবেন তার পারদর্শিতার মাধ্যমে।
৫। একজন পেশাদারের সিদ্ধান্ত অনুমিত হবে তার পৃষ্ঠপোষকবৃন্দের প্রতিনিধি স্বরূপ এবং তা হতে হবে নিঃস্বার্থ।
৬। একজন পেশাদার সম্বন্ধ স্থাপন করেন পেশাদারবৃন্দের সমিতির সঙ্গে। তিনি সেইসব সহকর্মীদের কর্তৃত্ব বা নির্দেশ তখনই গ্রহন করবেন যখন তার ভুলের কারণে সঠিক ভাবে কর্ম সম্পাদনে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।
৭। একজন পেশাদার তিনিই যে তার খরিদ্দারের (সাহিত্যের ক্ষেত্রে পাঠক) অথবা পৃষ্ঠপোষকবৃন্দের ভাল মন্দ বোঝেন তাদের নিজেদের থেকেও বেশী।

সাহিত্যে প্রতিষেধ

সাহিত্যে প্রতিষেধ অতএব প্রধানত সুস্থ চিন্তা এবং ব্যবহার নির্ভর। নিরাপদ, রুচিসম্মত গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ পাঠকের হাতে পৌঁছে দেয়া জরুরী। একজন সত্যিকার সাহিত্যিক তার লেখার পাঠযোগ্যতা সম্বন্ধে ধারণা রাখেন একজন পাঠকের চেয়ে বেশী। পাঠের অযোগ্য লেখা পাঠক পড়ছে বলেই লেখক লিখতে পারেন না। কারণ তা হবে পাঠককে বিভ্রান্ত করা। জেনেশুনে অন্যায় করা । স্বার্থপরতা করা। লেখক পাঠকের থেকে এক পা’ আগেই চলবেন কারণ সাহিত্যের দ্বারা লোকশিক্ষা হয়, সমাজ বিবর্তন হয় আর হয় সুস্থ মনোরঞ্জন।
 

চঞ্চল চৌধুরী
অক্ষাংশ: ৩০.৪৩৮০৫৬৯৪৫৮      দ্রাঘিমা:-৮৪.২৮০৮৩০৩৮৩৩
৩১শে অগাস্ট,২০০৭

***

 

সময়ের সাথে সাথে সভ্যতার বিবর্তন ঘটে আর রূপান্তর ঘটে প্রকাশের অর্থাৎ ভাষার। মনের ভাবপ্রকাশের মাধ্যম হলো ভাষা। সুতরাং ভাষার বিবর্তন বলতে বুঝতে হবে ভাব প্রকাশেরও বিবর্তন যা কালক্রমে নিয়ে এসেছে জটিল থেকে সহজ সাবলীল প্রকাশভঙ্গীর উপস্থাপন। ভাষার ব্যবহার যত সাবলীল, তা মানুষের কাছে ততই গ্রহনযোগ্য। এই সাবলীলতার ব্যাপ্তি ঘটে তখনই যখন ভাষার শব্দভান্ডার হয়ে উঠে সমৃদ্ধশালী। শব্দভান্ডারের প্রসার বিস্তৃত হয় যদি কিনা একটি ভাষা তার উৎপত্তি সময়কালের গন্ডী পেরিয়ে নতুন রূপ লাভ করে। বিদ্যাসাগর, সঞ্জীবচন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্র থেকে রবীন্দ্রনাথ হয়ে নজরুল, জসীমুদ্দিন বা শরৎচন্দ্রের হাত ধরে কল্লোল যুগের পরিশোধনাগার থেকে যে ভাষা আমরা পেয়েছি তা আরও সাবলীল ও সহজবোধ্য হয়েছে। এর জন্য প্রয়োজন হয় একটি ভাষার সাথে অপর একটি ভাষার আদান প্রদান। তার মানে এই নয় যে নিজের ভাষার শব্দসমূহ বাদ দিয়ে শুধু অপর ভাষার শব্দসমূহকে স্বাগত জানানো। বরং অন্য একটি সমৃদ্ধ ভাষার শব্দগুলো বা তার শব্দার্থ বা সেই ভাষার ভাবার্থ প্রয়োগের কৌশলগুলো নিজের ভাষায় অন্তর্ভুক্ত করে নিজস্ব ভাষায় বহুমাত্রিক শব্দশৈলীর উপস্থাপন ঘটানো। যে এতে যত বেশী পারঙ্গম হবেন, তার ভাষাও হবে তত শ্রুতিমধুর। আর এই শ্রুতিমধুরতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন নিজ ভাষার ওপর যথাযথ জ্ঞান, পাশাপাশি

অন্য ভাষাকে জানা এবং তা থেকে সুন্দরতম শব্দ ও ভাবার্থ প্রয়োগের কৌশলগত জ্ঞান লব্ধ করা। ফরাসী, জার্মান, রুশ বা যেকোন ভাষায় যদি বাংলা সাহিত্যের চর্চাকে ব্যাপকভাবে তুলে ধরা যায়, তাহলে দেখা যাবে বাংলাভাষার ছন্দময় শব্দশৈলীর প্রয়োগ উক্ত বিদেশী ভাষাগুলোকে আকৃষ্ট করেছে। কালক্রমে ঐসকল ভাষার মাঝেও বাংলা লেখনীর স্টাইল খুঁজে পাওয়া যাবে। ঠিক উলটোটিও ঘটতে পারে বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে। এমনিতেই বাঙ্গলা ভাষা বিভিন্ন ভাষার প্রভাবধ্বনীত্বে উর্বর।

ভাষার বিবর্তন অপ্রতিরোধ্য। সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে ভাষার অনুশীলন সময়ের প্রয়োজনে হয় অপরিহার্য। অনুশীলনে যদি ছেদ পড়ে তখন আবির্ভাব ঘটে স্থবিরতার। সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিকাশে স্থবিরতা ভাষার গতিশীলতাকে রুদ্ধ করে দেয়। সে কারণেই আজ সবিনয়ে এই আশাই ব্যক্ত করি যেন, স্থবিরতার দোষে আড়ষ্ট না হয়ে ভাষার ব্যবহারে পরিশীলিত ও সংবেদনশীল হয়ে সবাই নিদ্রোত্থিত হয়ে ওঠে। সবাই হোক ভাষা চর্চায় শক্তিশালী, শব্দের খেলায় সমৃদ্ধশালী, অধিক গতিময়, তারও চেয়ে অধিক ছন্দময়।
 

শুভলগ্না শোয়ারা
অক্ষাংশ: ৫০.৯৪৩০০০৭৯৩৫     দ্রাঘিমা: ৬.৯৫৮৪১৯৭৯৯৮১
৩১ শে অগাস্ট, ২০০৭
 

***


এবারের প্রকাশনা

কবিতা

রজত জয়ন্তী

যৌবনের ময়দানে পা রাখতে না রাখতেই
নজর কেড়ে ছিল তার আজানু লম্বিত বেণি
কি করি আর না করি
সকাল বিকেল মরি
ভাল বেসে ছিল প্রথম দরশনেই
উজাড় করে দিয়ে ছিল প্রথম মিলনেই
সবুজ দ্বীপের কালো আখিঁ
মন বলত গাও পাখি
আকাশ কে গায়ে মাখি
ভাবি আর বসে থাকি
প্রাণ বলে হেসে বাঁচি
এই বলে লম্বা বেণি হল সাথী
পঁচিশ বছর পর আজ ও সে সুন্দর
নেই সে লম্বা বেণি আছে তার কদর
এখন আমরা ভাল বন্ধু ও সাথী
এক সাথে গাই নতুন প্রভাতী

 

 

যাবে?

যাবে? চলে যাবে?
একটা ছড়া বলি শোন
এটা তুমি শোননি কখনও
দাঁড়াও একটু, না হয় পা চালিয়েই যাবে
তুমি যাবে, তো কে তোমায় থামাবে
তুমি তো জেদের বাসা
তুমি এক না পাওয়া ভালবাসা
এমন ছড়া শোনোনি কখনও
নামতা পড়া জীবনের হেঁসেলে
এর নেই কোনও মানে
নৃত্য ছিল একদিন তোমার সাধনা
আজ নৃত্য তোমার স্বপ্নেও আসেনা

 

 

গল্প


মিকুর উনিশে সেপ্টেম্বর


আজ উনিশে সেপ্টেম্বর। আজ আমাদের বিয়ের ষোল বছর পূর্ণ হলো। ষোড়শী কিশোরী হলো এই বিয়ে! আমাদের বিছানার পাশের লম্বা আয়নাটাতে আমার দ্রুত পালটাতে থাকা অভিব্যক্তির frame by frame ছবি গুলো আমি দেখতে পেলাম। আমি শকুন্তলা। কাজলের প্রেম। কাজলের কাছে আমি খুব প্রয়োজনীয় ও দামী হয়ে ওঠার চেষ্টা করিনি কখনও। কাজল আমাকে প্রায়ই বলত যে ও আমাকে কেন ভালবাসে। আমি যেন, শুনতে পেলাম কি পেলাম না এমন ভাব করতাম কিন্তু কান আমার খাড়া থাকত, একটা কথাও যেন বাদ না পড়ে। আর মন থাকত কাজলের কাছে বাঁধা।

 

 

সম্পৃক্তি


জীবনের গাড়ী চলছিল বেশ। ঝগড়া ছাড়াই দাম্পত্য সুখ। দুজনে মিলে যেত একসাথে সুখবৃষ্টিতে ভিজে। দীপা বলত - ডাকাত একটা। ওদের মধ্যে একটা কেমিস্ট্রী আছে। দীপা যে ঠিক এই জায়গায় চলে যাবে সেটা বিকাশ বোঝেনি। ওর কল্পনার বাইরে দীপা ওকে এত বড় ধাক্কা দিতে পারল? বিকাশ ভেবে চলে। দীপা অন্য কারও প্রেমে পড়েছে বলেও মানতে রাজী নয় বিকাশ। সারাদিন দীপার ঘরের দিকেই মন। অফিসেও দীপা কোনও বাড়তি সময় দেয়না। দীপা পুরোপুরি ঘরোয়া এক কেরিয়ার উওম্যান। দীপা কেন এমন করছে!


 

 

রম্য রচনা

সংরক্ষণ

সংরক্ষণের কথা বলতে গিয়ে অনেক কিছু মনের মধ্যে ঘুরপাক খায়। একটু অন্য রকমের কথা বলি।
চার রকমের দু পেয়ে জীব আছে যারা সবাই কোন না কোন ভাবে জীবন টাকে চালিয়ে নিয়ে যায় যত দূর পারে। এর মধ্যে আমি ও আছি। আমাদের সবাই এই চারের এক। এই চার কারা? এরা হ
লো,  সব্জি বা ভেজিটেবল,  ধাতু বা মিনারেল
 জন্তু বা এনিম্যাল,  মানুষ বা হিউম্যান।
ব্যাখ্যা দেবার আগে একটু বলি যে আমরা যারা সংরক্ষণ নিয়ে আজ দেশে কি চলছে তার একটু ও খবর রাখি তারা এই লেখনীর সত্বাধীকারীর সংগে মীমাংসার মনোভাব নিয়েই এই লেখা পড়বেন...
 

 

প্রবন্ধ

 

ব্রাত্য চিন্তায় যুক্তিবোধ

আচ্ছা, কেউ গত হলে আমরা কেন প্রার্থনা করি - ‘হে ঈশ্বর তাঁর আত্মা শান্তিতে বিশ্রাম করুন!' May his soul rest in peace ! আমার এই ব্যাপারে গুরুতর আপত্তি আছে। কেন এবং কি ভাবে আমরা একজনের আত্মার বিশ্রাম চাই! আত্মা তো এনার্জি। শক্তি। তার কি বিশ্রাম হয়! আত্মা মহাজাগতিক শক্তির এক অংশ। আসলে প্রত্যেকটি আত্মাকে তার জন্যে নির্দিষ্ট কাজগুলি করে যেতে হয়। আর যেই আত্মা তার জন্য নির্দিষ্ট কাজগুলি সম্পন্ন করে ফেলে তখনি মহাজাগতিক শক্তি বেরিয়ে আসে। আর এক অদৃশ্য এলকেমিস্ট- এর জাদু দন্ডের সাহায্যে সেই শক্তি আরেক মানব শরীরে প্রবেশ করে। এরকম হতেই থাকে বা চলতেই থাকে। অহরাত্র, চব্বিশ ঘন্টা আর তিনশ পঁয়ষট্টি দিন। কোথাও এতটুকু ফাঁক নেই। এটা ঠিক এক কনভেয়র বেলটের মত যা বহন করে চলেছে কোটি কোটি অনু যা নির্দিষ্ট হয়ে আছে প্রাণ পাবার জন্যে - হয়ত বা মানুষ হয়ে জন্ম হবার জন্য বা পশু বা শস্য বা কোনও কীট বা পতঙ্গ বা এক সুগন্ধী ফুল হবার জন্য বা পাথর। চলার পথে যেই মুহূর্তে সেই অনু আত্মার ছোঁয়া যে পায় সে প্রাণ পেয়ে জীবিত হয়ে ওঠে।

 

স্বদেহ মনের ঘরে প্রেমের বাসা

এক গোলোক ধাঁধা। প্রেম দেহে না মনে? আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় এই আলোচনা যেন শুধু এক সময়ের অপব্যয়। আবার এই ধন্ধে পড়েনি এমন নারী বা পুরুষ খুঁজে পাওয়া যাবে কি? অশরীরী আত্মার সাথে প্রেম করে জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন কেউ, এমনটা রোজ শোনা যায় না। ঘটলেও তা তাৎক্ষণিক সেটা এক গভীর অবসেষন। ইংরেজী Lust কথাটার মানে কি? লাস্যকাম। লাস্যকাম কথাটা লিঙ্গ বিহীন Love, Lust এর সংগে Love-এর অবস্থানগত ও সময়গত পার্থক্য আছে। দু’টোকে গুলিয়ে ফেললে চলবেনা। প্রেম চিরন্তন আর লাস্যকাম ক্ষণস্থায়ী। লাস্যকাম যদি বীজ হয় প্রেম তবে অঙ্কুরিত চারাগাছ বা আরও পরে প্রেমের মহীরুহ। এটা উপলব্ধি। তর্কের সামগ্রী নয়। প্রেম দেহের বাগানে পোঁতা সেই ফুলের চারা যার সুগন্ধ মনের ভেতর এক পাকাপাকি জায়গা করে নেয় দীর্ঘ পথ দেহের বাগানে একসাথে ঘোরাফেরা করার পরে। এই হল প্রেম। আবারও বলি এই লেখা তর্কের সামগ্রী নয়, নিতান্তই ব্যক্তিগত উপলব্ধি।
 

     

 

অরূপ সাহিত্য সংকলন-১

সাহিত্য পত্র (নির্মীয়মাণ)