ব্রাত্য চিন্তায় যুক্তি বোধ


আচ্ছা, কেউ গত হলে আমরা কেন প্রার্থনা করি - ‘হে ঈশ্বর তাঁর আত্মা শান্তিতে বিশ্রাম করুন!' May his soul rest in peace ! আমার এই ব্যাপারে গুরুতর আপত্তি আছে। কেন এবং কি ভাবে আমরা একজনের আত্মার বিশ্রাম চাই! আত্মা তো এনার্জি। শক্তি। তার কি বিশ্রাম হয়!
 

একটু ভেঙ্গে বলি?
এই মহাবিশ্বের তিনটে অংশ আছে বলে আমরা জানি। স্বর্গ, মর্ত ও পাতাল।
আমার মনে হয়, মর্ত বা পৃথিবীটা কোথায় তাই নিয়ে কোনও বিবাদ নেই। কিন্তু প্রশ্ন হল - এই পৃথিবীটাই কি মর্তলোক? খুব গোলমেলে - তাই না? ধরে নেওয়া যাক এই পৃথিবীই মর্তলোক। পাতালের অস্তিত্ব নিয়েও বোধ হয় কোনও বিবাদ নেই। যা আমাদের নিচে, তাই পাতাল। কেউ যদি পাপকর্ম্ম করে বা খারাপ কাজ করে সে পাতালে যায় বা নরকে যায়। এই রকমই শুনে বা জেনে এসেছি ছোট বেলা থেকে। এখন প্রশ্ন হল - আমাদের নিচে কি আছে? মাটি, পাথর, জল, উর্জ্জা, আগুন এবং আর অনেক আকরিক খনিজ পদার্থ। তা'হলে দাঁড়াল, মাটির নিচে যত সব ভূমিজ ও খনিজ সমৃদ্ধি জমা আছে সেগুলো হল পাতালের আওতায় এবং নরকের অর্থনীতির স্তম্ভ। আর পাপ করলে বা খারাপ কাজ করলে সেই পাতাল সাম্রাজ্যের বাসিন্দা হতে হয়। এও মেনে নিলাম। কিন্তু পরিকল্পনা করে সজ্ঞানে পাপকর্ম করব সেই ক্ষমতা বা রুচিও নেই। তাহলে পাতালে যাওয়া হবেনা। অর্থাৎ ওই ধনীতম পাতালদেশের নরকপুরের বাসিন্দা হওয়া যাবেনা। কিন্তু আমাদের উপরে? আরও উপরে? সেখানে কি আছে? আমরা সবাই বিশ্বাস করতে ভালবাসি যে আমাদের উপরে এক নির্মল স্থান আছে যার নাম স্বর্গ, যেখানে মৃত্যুর পরে সব ভাল মানুষেরা যায় আর রম্ভা, মেনকা বা উর্বশীদের নাচ উপোভোগ করার সৌভাগ্য অর্জন করে। খ্রীষ্ট বা ইসলাম ধর্ম্মাবলম্বীরাও বিশ্বাস করে যে আমাদের উপরে স্বর্গ নামক এক 'সুখধাম' আছে। কিন্তু যীশু যখন তাঁর কবর থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন তখন কি ছিল সেই দৃশ্য? তাকে কি রাঈগর মর্টিস বলা হবে? মরে শুখিয়ে কাঠ! বেশ কেমন যেন শুস্কং কাষ্ঠং লাগছে - না? আর বিড়ম্বনা না বাড়িয়ে এগোন যাক। কিন্তু এখন সমস্যা হল কতটা উপরে গেলে স্বর্গের দেখা পাওয়া যাবে? ওষুধ বেচার কাজে আকাশপথে ভ্রমণ করতেই হয়। আমি একটা হেলথকেয়ার কোম্পানীর সাথে যুক্ত আছি, উপদেষ্টা হয়ে। যতটুকু জানি যে গড়ে ৩০,০০০ ফুট উঁচুতে ওড়ে ইন্ডিয়ান, ৩৫,০০০ ফুটের মাথায় জেট, ৪০,০০০ ফুটে এমিরেটস, ৪৫,০০০ ফুটে নর্থওয়েষ্ট এয়ার লাইনসের বিমানগুলো। এদের পাইলটেরা কি কেউ স্বর্গের খোঁজ পেয়েছেন আজ পর্যন্ত? না। এরা কেউই স্বর্গের খোঁজ পাননি আজ পর্যন্ত।


আচ্ছা এবার পক্ষী জগতে প্রবেশ করা যাক। সবচেয়ে উঁচুতে ওড়ে বোধ হয় বাজ পাখী। না কি চিল? পক্ষিবিশারদেরা কি কোনও চিহ্ন বা সূত্র পেয়েছেন পাখীদের আচার আচরণে যে তারা স্বর্গের সন্ধান পেয়েছে? তাদের গবেষণার মধ্যে কি পাখীদের গায়ে স্বর্গের সুগন্ধ পাওয়া যায়? না। সেরকম কোনও কিছু ঘটলে টি ভি চ্যানেল গুলো ২৪/৭ প্রচার চালাত। ইন্টারনেট তো গবেষণার গ উচ্চারণের শুরুতেই প্রচার চালাত কে আগে এই খবর তাদের সাইটে প্রকাশ করেছে - এই বলে!
তাহলে প্রশ্ন হল স্বর্গ কোথায়? ৪৫,০০০ ফুটের ওপরে? কই কল্পনা চাওলা বা তাঁর পুর্বসূরী বা উত্তরসূরীরা কেউ তো বলেননি যে তাঁরা স্বর্গ দেখেছেন! না। হাসির কথা নয় - স্বর্গ কোথায়? জানতে হবে। সে কি অন্য কোনও সৌরমন্ডলে বিরাজ করে? আর তা যদি সত্যিই থেকে থাকে তাহলে কোনও বিজ্ঞানী এত দিনে নিশ্চিত তার খোঁজ পেতেন! এত দিনে স্বর্গে পৌঁছবার এলগোরিদম ইন্টারনেটে ৯৯ ডলার দিয়ে কেনা যেত।


আচ্ছা ব্যাপারটা কি এরকম যে সব ধ্বনাত্মক জ্ঞান সাহিত্যে বা ধর্ম গ্রন্থে বা ছাপার অক্ষরে বেরিয়েছে সেগুলোকেই আমরা সর্বাত্মক জ্ঞান ও বিজ্ঞান বলে ধরে নিই আর তাই স্বর্গ খুঁজতে গিয়ে যত বিপত্তি? কিন্তু আমি বিপত্তি থেকে মুক্তি চাই। তাই আমার মত করে চিন্তা করতে শুরু করেছি। এটাকে পাগলামী ভাবলেও আমি থামছিনা। আমার ধারণা স্বর্গ বা মর্ত বলে কিছু নেই। আমরা এ’ব্যাপারে স্বামী বিবেকানন্দকে স্মরণ করব।

‘আসলে বস্তু, মন ও আত্মার মধ্যে মূলত কোন পার্থক্য নেই। বোধের বিভিন্ন স্তরে এদের অর্থ পালটায় আর আমরা এদের আলাদা করে ব্যাখ্যা করার ব্যর্থ চেষ্টা করে থাকি। এই বিশ্বকে আমরা আমাদের পঞ্চেন্দ্রিয় দিয়ে বুঝি বা বোঝার চেষ্টা করে থাকি। সৎ দেখে স্বর্গ আর অসৎ দেখে নরক। কিন্তু কোন নরক? যাক সে কথা। ঈশ্বরীয় মন ইশ্বরকে দেখে। স্বর্গ বা মর্ত বলে কিছু আছে কি? আমাদের মানে পশু সাম্রাজ্যের শরীর মাংসলজস্থী জল ও আত্মার সম্মিলিত অস্তিত্ব। ৭০ শতাংশ জল, স্নেহ, মাংস, শর্করা ও আরও অনেক খনিজ পদার্থ। ৩০ শতাংশ বৈদ্যুতিক ও বিদ্যুতীন সুইচ।


ধরে নেওয়া যাক এই রকম একটা ব্যাপার হলো আমাদের শরীর। এই দিয়ে আমাদের শরীর চলে। ঠিক যেমনটি একটি কারখানায় ঘটে। সেখানে উৎপাদন ঘটে যদি মেশিনের যন্ত্রাংশ সব ঠিক জায়গায় থাকে আর সুইচটা ঠিক মত অন করা যায়। এখন প্রশ্ন হল এই সুইচটা কি? সুইচটি হলো আত্মা। আত্মা হোল মহাবিশ্বের আলোক রশ্মীর দ্বারা আবিষ্ট ও তরঙ্গান্নিত, উর্জ্জাশক্তি। যে মুহূর্তে এই সমন্বিত শক্তি বস্তু শরীরকে স্পর্শ করে সেই মুহূর্ত থেকে আমাদের বস্তু-শরীর এই শক্তির দাসত্ব স্বীকার করে নেয়। শরীর কাজ করে। এখান থেকে উঠে ওখানে যায়। শরীর উৎপাদনশীল হয়ে ওঠে। আত্মার সৎ এবং অসৎ -দুই ভূমিকাই হতে পারে।
সদাত্মা নামক সুইচ শরীরকে পরিষ্কার ও পবিত্র রাখে। উৎপাদনশীল করে তোলে। একটা উদাহরণ দিই। কেউ ভাল গান গায় বা কেউ ভাল ছবি আঁকে বা কেউ খুব ভাল ক্রিকেট খেলে। এদের সবার সদাত্মা নামক সুইচ অন হয় আর তাই তারা ভাল ভাবে কাজটা করতে পারে। আবার কেউ পৃথিবী ধ্বংস করার পরিকল্পনা করে বা মানুষ খুন করার সুপারিশ নেয় বা দেয়। কিম্বা কেউ মনে করে প্রতিবেশীর স্ত্রী বেশী পারদর্শিনী নারী। এদের অসদাত্মা নামক সুইচ অন হয়। এদের শরীর উৎপাতশীল হয়ে ওঠে - প্রথমত তার চারপাশের পৃথিবীর জন্যে আর পরে তার নিজের জন্যেও। আত্মা নামক সুইচের প্রয়োগ কে কি ভাবে করবে তা নির্ভর করে তার পারিবারিক, সামাজিক শিক্ষা এবং তাৎক্ষনিক অবস্থানের ওপর।


আমরা মানুষ। মানুষ ভালবাসার উৎপাদন। তাই বেশির ভাগ মানুষই সদাত্মা নামক সুইচের বা বিবেকানন্দাত্মক সুইচের দাস। আমরা এই সুইচের কর্মকে শ্রদ্ধা করি, ভালবাসি, অনুসরণ করে থাকি। ব্যতিক্রম হল লাদেনাত্মক আত্মা বা অসদাত্মা। এই সুইচের সম্পর্কে আমাদের মতামত নিয়ে এখানে আলোচনা করছিনা। সেটা ছেড়ে রাখলাম প্রত্যেকটি সদাত্মানামক সুইচের দায়িত্ব জ্ঞানের ওপর। একটা পাথরের দিকে তাকিয়ে দেখা যাক। এর কি কোনও প্রাণ আছে? অবশ্যই আছে। কিন্তু এর ব্যবহারিক জীবন এত ধীর গতিতে চলে যে তা আমাদের চর্ম চক্ষুর নজরে পড়েনা। কিন্তু একজন রোগীর নজরে পড়ে। কুল্লুর কাছে মনিকরন বলে একটা জায়গা আছে যেখানে বসে সন্ত গুরু নানক ধয়ান করেছিলেন। সেই স্থানের পাথর জীবিত। তার মধ্যেকার তরঙ্গ অনুভব করা যায়। মাপা যায়। কিম্বা বারানসীর সঙ্কটমোচন মন্দিরের পাথর যা রোজ এক শস্য দানার আকারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাপা যায়। বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত। তাহলে পাথর যদি বস্তু হয় তবে মানব শরীরের মাংসলজস্থী জল ও বস্তুর সমতুল্য। এই পাথরের মধ্যেও এক সুইচ আছে যা তাকে চালনা করে থাকে। অমরনাথের শীবলিঙ্গ কি করে শ্রাবনী পূর্ণিমায় আকার পরিবর্তন করে? বেপথু হয়েছিল মন। এই একটু বেরিয়ে এল মন।
 

এবার ফেরা যাক স্বর্গ ও মর্ত প্রসঙ্গে। স্বর্গ ও মর্ত একই জায়গার দুই নাম। আমার তাই মনে হয়। স্বর্গ বলে কোনও আলাদা জায়গা নেই। গীতায় কি স্বর্গ বলে কোনও স্থানের উল্লেখ আছে? হ্যাঁ আছে। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে ভগবান কৃষ্ণ অর্জুনকে বলছেন - 'হয়তো বা প্রাপস্যসি স্বর্গং' - মানে স্বর্গ আছে। কিন্তু স্বর্গ কোথায় সেটা কি তিনি বলেছেন? সব ধর্মেই বলা আছে যে একবার যখন আত্মা শরীর ছেড়ে যায় - মানে মৃত্যুর পর - তখন শরীরকে বিনষ্ট করে দিতে হয়। হিন্দুরা পুড়িয়ে ফেলে, মুসলমান বা খ্রীষ্টানেরা পুঁতে ফেলে বা জরোয়াস্ট্রীয়ানেরা টাওয়ারের ওপর রেখে আসে। উদ্দেশ্য একটাই - বিনষ্ট করে দেয়া। উল্লেখ করা যেতে পারে - প্রাচীন কালে কবর দেওয়া হতো চুণাপাথর দিয়ে তৈরী বাক্সের মধ্যে। কারণ তাতে ঠিক ৪২ দিনের মধ্যে শরীর বিনষ্ট হয়ে যেত। দেহ পুরোপুরি বিলীন হয়ে যেত। আমাদের পূর্বজরা অনেক বেশি বিজ্ঞানমনস্ক ছিলেন। তাই না? কিন্তু তাতে কি আত্মার বিনষ্টিকরণ সম্ভব?  না। আত্মাকে বিনষ্ট করা যায়না।
আমরা আত্মা নামক সুইচটিকে ভুলে মেরে দিয়েছি। আর শরীর নিয়ে খুব ভাবি আমরা। আমরা শরীর নিয়ে কাঁদি মৃত্যুর পর! কিন্তু ফল কি? নাজিম হিকমতের কবিতায় পড়ি - বিংশ শতাব্দীতে যে কোনও শোকের আয়ু মাত্র এক বছর। বিশ্বাস হলোনা? মৃত্যুর পর-
প্রথম বছর - মৃতের ছবি ড্রয়িং রুমের দেয়ালে জ্বলজ্বল করে,
দ্বিতীয় বছর - ঝাপসা ছবি শোবার ঘরে আর
তৃতীয় বছর - ভাঙ্গা ফ্রেম অন্ধকার ভাঁড়ার ঘরে।
এরকমটাই হয় নাকি? কি ভাবছেন, পাঠক? এ হলো পাগলামীর কথা। এ কিন্তু কথার পাগলামী নয়। এখনও অনেক জটিলতা মস্তিষ্কে গজগজ করছে। এই আত্মা কে? কি হয় এর মৃত্যুর পর? সনাতন ধর্ম বা পরবর্তিতে আমরা যাকে হিন্দু ধর্ম বলি সেই ধর্ম এই ব্যাপারে কিছুটা এগিয়ে আছে। সনাতনী বিশ্বাস হলো আত্মা অবিনশ্বর। তাকে ধ্বংস করা যায়না। পুড়িয়ে দিয়েও না। (নৈনঁ ছিন্দন্তি, শস্ত্রাণি, নৈনঁ দহতি পাবকঃ)। আত্মাকে কাজ করে যেতে হয়। হবে। তাই মৃত্যুর পরেও আমরা একান্তে কথা বলি মৃতের সাথে। তার কাছ থেকে মানসিক শক্তি সঞ্চয় করি। আমি তো আজও আমার মা বাবার সাথে কথা বলি। দুজনেই গত হয়েছেন এক দশকের ওপর। তাঁদের কাছ থেকে নির্দেশ পেয়ে থাকি। আধুনিক সায়কিয়াট্রি একে বলবে 'হ্যালুসিনাশান' কিন্তু ওই সায়কিয়াট্রিস্ট ও এই নিয়মের ব্যতিক্রম নন। তিনি কি তাঁর মৃত পিতা-মাতা, আত্মীয় বা অনাত্মীয়দের সাথে কখনও একান্তে কথা বলেননি বা বলেননা? তিনিই জানেন। আবার ওই সদাত্মা নামক সুইচের কথা এসে যায়।


আত্মা মহাজাগতিক শক্তির এক অংশ। আসলে প্রত্যেকটি আত্মাকে তার জন্যে নির্দিষ্ট কাজগুলি করে যেতে হয়। আর যেই আত্মা তার জন্য নির্দিষ্ট কাজগুলি সম্পন্ন করে ফেলে তখনি মহাজাগতিক শক্তি বেরিয়ে আসে। আর এক অদৃশ্য এলকেমিস্ট- এর জাদু দন্ডের সাহায্যে সেই শক্তি আরেক মানব শরীরে প্রবেশ করে। এরকম হতেই থাকে বা চলতেই থাকে। অহরাত্র, চব্বিশ ঘন্টা আর তিনশ পঁয়ষট্টি দিন। কোথাও এতটুকু ফাঁক নেই। এটা ঠিক এক কনভেয়র বেলটের মত যা বহন করে চলেছে কোটি কোটি অনু যা নির্দিষ্ট হয়ে আছে প্রাণ পাবার জন্যে - হয়ত বা মানুষ হয়ে জন্ম হবার জন্য বা পশু বা শস্য বা কোনও কীট বা পতঙ্গ বা এক সুগন্ধী ফুল হবার জন্য বা পাথর। চলার পথে যেই মুহূর্তে সেই অনু আত্মার ছোঁয়া যে পায় সে প্রাণ পেয়ে জীবিত হয়ে ওঠে।

আত্মার বিশ্রাম? এত কাঁঠালের আমসত্ব খোঁজার চেষ্টা করার সামিল। কি অবাক করা কান্ড কারখানা - না? এলকেমিষ্ট টি কে? জানিনা। তবে আছে একজন। ব্যাপারটা কি খুব জটিল? না। মনের জানালা গুলোকে খুলে দিয়ে ভাবলে এই ব্যাপারটা খুব সোজা।
আসলে -


স্বর্গ আমার মায়ের দেয়া প্রাণ
স্বর্গ আমার আমন ধানের ঘ্রাণ
নরক আমার মনের মধ্যে পুষে রাখা মালিন্য
নরক আমার আতরগন্ধী লোক দেখানো কৌলিন্য
পাতাল আমার নীতিবোধের স্খলন
পাতাল আমার পশুত্ব শক্তির লালন
স্বর্গ হেথা স্বর্গ হোথা স্বর্গ ঘরে ঘরে
ভালবাস প্রাণশক্তিকে
-স্বর্গ স্বর্গ না করে।


পরিশেষে বলি। আমরা সবাই ঈশ্বরের সন্তান। অন্তরে আমরা খাঁটি ও নিখাঁদ। আমাদের মধ্যে পবিত্র মাটি, বায়ু, জল, ধাতু ও আগুন আছে। এসো আমরা তার প্রকৃত সমাদর করি আর নিজেকে উজাড় করে দিই এই মানব জন্মেই। পরজন্ম কি জানিনা। তবে যদি আবার মানুষ হয়ে জন্মাতে পারি, নিজেকে পূণ্যবান মনে করব। তাই, কেউ শরীর ছেড়ে চলে গেলে প্রার্থনা করি - হে ঈশ্বর ওঁর আত্মা শান্তিতে থাকুন আর বাকী কাজটুকু করে যান - ‘হে ঈশ্বর তাঁর আত্মা শান্তিতে বিশ্রাম করুন’ নয়!

 

সুপ্রতীক অরূপ

মুম্বাই

অক্টোবর ১৭, ২০০৬

গবেষণা -অরুন  কুমার বিশ্বাস

হায়দ্রাবাদ