আমি তোমাদের কথা ভাবছি
প্রতিধ্বনি, তুমিতো
শিলাবৃষ্টি স্নাত আজ এই চৈত্রের রোদে জ্বলজ্বলে অতসী কাঁচের মতো
আমার স্মৃতিরা তিরতির করে ধেয়ে আসছে
একে একে
আমার ছাব্বিশ বছরের গর্বিত গ্রীবা লক্ষ্য করে;
আর স্মৃতির রোদে চৈত্রের রোদে নিজেরই শরীরের উদ্গত ঘাম
শুকোতে শুকোতে আমি তোমাদের কথা ভাবি----
তোমরা যারা পৃথিবী নামক আমাদের এই আশ্চর্য গ্রহের
বিভিন্ন অক্ষরেখা দ্রাঘিমারেখা ধরে হৃদয়ের রক্ত-বেদনার্ত অঞ্চলে
গড়ে তুলেছ স্বদেশ তোমাদের- আমাদের-
বাংলার আবহমান চৈত্র-রোদের উষ্ণতা ছুঁয়ে হে প্রবাস বন্ধুরা আমার,
ধানশালিখের স্মৃতি বুকে নিয়ে তোমরা যারা
ম্যানহার্টনের রাস্তায় হাঁট একা একা
অথবা লন্ডন ব্রীজ দিয়ে দাঁড়িয়ে
সেক্সপীয়রীয় সনেটের বদলে
যাদের মনে পড়ে যায় প্রমত্ত পদ্মার বুকে
নিঃসঙ্গ মাঝির নীল দারিয়ার গান
এবং তোমরা যারা তীব্র তুষার ঝড়ে
ভেড়ার লোমের পোষাক পরেও
ভুলতে পারোনি মাঘের শীতের তীব্র কাঁপন;
তোমরা যারা মাঘের কুয়াশা খোঁজ,
খোঁজ হেমন্তের ন্যাড়া মাঠে খেলা গোল্লাছুটের দুরন্ত বিকেল ...
তোমরা যারা পৃথিবী নামক এই আশ্চর্য গ্রহের বিভিন্ন অঞ্চলে
বয়ে বেড়াচ্ছো এক একটি স্বদেশ;
আমি জানি, তোমাদের হৃদয়ের জমিনে
এক একটি বাংলাদেশ লালসবুজ রঙে জেগে উঠছে ধীরে ধীরে;
তোমাদের সেই উষ্ণ বেদনা নামে তোমাদেরই ফেলে আসা
চৈত্রের করকরে রৌদ্রের আশ্বাসে আসন্ন বৈশাখের বৈশ্বিক
আগমনের দিকে তাকিয়ে শিলাবৃষ্টি ধোয়া
ঘাঁসে কার্পেটে বসে মৌন উল্লাসে আজ
হে প্রবাস বন্ধুরা আমার, আমি তোমাদের কথাই ভাবছি।