মৃত্যুর মতো
প্রতিধ্বনি, তুমিতো
তোমার জন্য তেমন কবিতা লেখা হয়ে উঠলো না। অথচ তোমার পায়ের কাছে আমার থরে থরে কবিতা থাকার কথা ছিল। না, আমার কবিতা এখনো তোমার যোগ্য হয়ে উঠতে পারেনি। এ কথা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, তোমার যোগ্য উপমা খুঁজে পাইনা বলেই। বরং আমার বিভিন্ন কবিতায় তুমিই উপমান হও। তোমাকে কোন কিছুর মতো মনে হয় না। সব সৌন্দর্যকেই তোমার মতো মনে হয়। সেবার পাতা ঝরার শব্দের মধ্যে বারবার তোমার চোখের পাপড়ির কথা মনে হচ্ছিল। আমি তোমাকে সর্বত্র দেখি। আমার শ্রুতি সীমার মধ্যে সমস্ত শব্দেই তুমি ধ্বনিত হও। কী করে আমি তোমাকে উপমায়িত করবো বলো? তাই তোমাকে নিয়ে তেমন কবিতা লেখা হয়ে ওঠে নি। যে দু'একটা লিখেছি তাতে মন ভরেনি। তোমার যথাযোগ্য হয়নি।
তাই দীর্ঘদিন পর আজ আবার তোমার জন্য কবিতা লিখতে যেয়ে কবিতা লেখার নামে একা একা বিব্রত হচ্ছি। তোমার জন্য কবিতা লেখার অনভ্যস্থতা পেয়ে বসেছে। তাই কবিতা নয়।
আস কিচ্ছুক্ষণ আলাপচারিতায় মগ্ন হই:
-কী করছো এখন?
-কিছুনা। অপেক্ষা করছি।
-কিসের?
-তোমার কবিতার
-কবিতার পাটতো আপাতত স্থগিত হলো
-সেতো চিরকালই থাকে
-তবে?
-তাও অপেক্ষা করি।
-কেন কর?
-তোমার কবিতার জন্য অপেক্ষা করতেও ভালো লাগে যে
-কিন্তু আমার কবিতা তো কোন দিন পাবেনা তুমি
-জানি
-তবে?
-পবোনা জেনেই তো অপেক্ষা করতে আরো বেশী ভালো লাগে। এ অপেক্ষা মৃত্যুর মতো টানে।
নাহ! আলাপটা জমছে না। আচ্ছা অন্য ভাবে চেষ্টা করে দেখি:
আমি ভিজে চলছি। বৃষ্টির ধারায় ভিজে চলছে কবি।
তোমাকে কবিতার অপেক্ষায় রাখা তোমার কবি।
বিশ্বাস করো আজ কোন বৃষ্টি নামেনি। তবু আমি এক অলৌকিক বৃষ্টির ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। শুধু তোমার কথা যখন ভাবি, তখন এ বৃষ্টি নামে। আমি ভিজে যাই। শীতে কাঁপন ধরে। হাত-পা অসার হয়ে আসে। নীল হয়ে উঠি। কাঁপতে কাঁপতে শুয়ে পড়ি সৃষ্টিময় সড়কে। তবু ভিজি। এমন নয় যে আশেপাশে কোথাও আশ্রয় নেই। আছে। তবু ভিজে চলি। যদি জিগ্গেস করো কেন? তবে বলবো, ঐ বৃষ্টি আমাকে মৃত্যুর মতো ডাকে, উপেক্ষা করা যায় না। তোমার জন্য আমি তীব্র খরার মধ্যেও বৃষ্টির ঝিরঝির শব্দ শুনতে পাই।