অধ্যাস

জাহেদ আহমদ

দিবাগত দহনান্তে উপবিষ্ট কৃষ্ণদ্বৈপায়ন
মৃদু মৃদু নথ আর নোলকের চিত্র অঙ্কনের ইচ্ছা বক্ষে-
বুকেরও মাঝারে মনে, মনে মনে
মিতিনের মুখ থেকে উৎসারিত এলাচির ঘ্রাণ
তপোবন অধিকৃত করে নিলে ধ্যান টলে ওঠে
অবদমনের অর্গল খুলে ফেলি এই মাতোয়ালা রাত্তিরে
জেগে ওঠে সান্দ্রমন্দ্র শ্রাবণনির্ঝর
গাছের গতরে ছিল এত প্রতারনা
বুঝি নাই আগে
নোখপটে ভাসে তার আবছা শরীর
শরমের শতস্থান খুলে খুলে পড়ি এই নিগৃঢ় নিরলে
বিমূর্ত ব্যঞ্জনা কিছু টুকে রাখি ধুতুরা-অধ্যায়ে
আদতে অধীত সবি অরূপ অধ্যাস
সর্ব বাজি ধরে খেলি পাশা কোন শকূনির শাপে

 

গাছ

জাহেদ আহমদ

আপাদমস্তক আমি বৃষ্টি-পরিবাহী
তুমি শৈলচূড়া-মেঘ
পরিচলন বায়ুর অপেক্ষায় ঝুলে আছো থির
উঠোনে উঠেছে ঝড়-ধুলোর কুজ্জটিকা
মেঘছায়া প্রবাহিত চাতকের ধ্যানে
তাক করে আছি দৃষ্টি, দ্বিধাযুক্ত দেহ
কৃপা করো যদি ওগো সহমর্মী মেঘ
প্রস্তুত রেখেছি আমার ধমনী ও শিরা
অঙ্গ ভরে নেবো তোমার স্পর্শবিদ্যুৎ
ভালো তো লাগে না আর এই গ্রীষ্মভার...
অচিরেই ঘটে গেলে বাষ্পীভবন
তোমার নৈকট্য ছুঁতে পাব অনায়াসে
সেই সম্ভাবনা দেখে গাছ তাই কাঠ হচ্ছে ক্রমে

প্রণোদনা

জাহেদ আহমদ

মার খেয়ে খেয়ে মুমূর্ষ মুখের রেখা-অনুরেখা
ফুটিয়ে তুলছি ইজেলে-তুলিতে
আর কিছু গুমরানো গান
অবিকল অনুবাদ করি ঘোরগ্রস্ত রাত্রিদিন
আমার আঙুল থেকে বিকিরিত অতিনীল আলো
লীন হয়ে অস্তসূর্য পটভূমিকায়
তৈরী করে যে-বর্ণলিবিভা
নদীর আবহ মেখে গৃহগামী জুটিদের মুখে
দ্যাখো তার সান্ধ্য সম্মোহন
প্রহৃতের বুকোত্থিত দীর্ঘশ্বাস ছুঁয়ে
আর্দ্রচোখে তুলে দিই সান্ত্বনাসম্ভব কিছু সুর
প্রত্যেকের তৃতীয় প্রচ্ছদ জুড়ে শুন্যস্থানটুকু
ভরিয়ে তোলবার ভার আমার
মেণ্ডেলের বংশসূত্র ঘেঁটে দ্যাখো খুঁজে পাও কি-না
কোথা হতে আসে এই গুপ্ত প্রণোদনা