............................. | শব্দ ছায়ার নিচে সে যদি রোদ কুড়ায় তবে সেলাইকলের টানাটানা শব্দও বাদ যাবে কেন কলঘরের একটানা শব্দও কুড়াক নৈঃশব্দ্য জানে না সোনামুখী সুইয়ের ছিদ্রকথা— সুতোহীন দীর্ঘশ্বাসে যতটা থেকে যায় ওড়াই শুকনো পালক জ্বররুগণতা... সেও যদি উড়তে পারে বালুচরে না-হেঁটেও চোখের ভেতর জেগে উঠবে চর—তারপর নিঃশ্বাসের মশলাঘ্রাণে লোভ বাড়ে কলকব্জা-হাড়ে দগ্ধ পাঁজর জুড়ে পাবে হাসি, চুম্বনের *** পাঁজরের হাড়ে অন্যান্য প্রসঙ্গ মনে না-রাখাই ভালো শুধু মেনে নিলেই হয়, যা দেখছে চোখ দেড় ক্রোশ দূরে শিকারির ছুঁড়ে ফেলা তির! এরচেয়ে বেশি কিছু বলার নেই সবই জানো তুমি হৃদয়শিকারি! তুমি হয়তো বদলাবে না কথা, আপন মনে যদি তা-ই হয় তবে আমি গোপনে লুকাতে যাব না আর তোমার পাঁজরের হাড়ে *** তামা-কাসা তুমি জানলে না পিতলের বাটি...ভাতের সরা শরীর খুলেছে ঘামে—তুমি খুলে আছো ব্যথা সারাতে কাঁটাচামচের ফাঁকে-ফাঁকে অ্যালুমিনিয়াম তুমি কি জেনেছ কিছু—জলকলসি, পরিপূর্ণ ঘড়া জলের ভেতর রুয়ে যাও স্মৃতি, তামা-কাসা *** শাদা জামা প্রতিদিন জামায় লেগে থাকে রোদ মুচকি হাসে বালুর কণা যখন বুকে বিনাশর্তে ঢোকে তোমার দৃষ্টিভঙ্গি, মনেই থাকে না— দীর্ঘশ্বাস ছুঁতে আস্থা কার দুটি পা... তারচে ভালো যদি শরীর খুলে হাঁটি রোদ শুষে নেবে হৃদয়; পুরনো কামনা *** |
অদৃশ্য না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর! তুমি কি জানো, শোকপাখি আর স্মৃতিফুলের ঘ্রাণে শুঁকে নেবার কোলাহল? অস্ফুট থাকার প্রথম কৌশল? যে-হাতে ছড়াচ্ছে মলা-ঢেলা আঁশটে গন্ধ : অন্যহাতে থেমে গেছে একান্ত জিজ্ঞাসা—বিব্রতবোধ অসংখ্য ক্ষতে অদৃশ্য ছুঁলে কেঁপে ওঠে ভূমি— তমালের ডাল দুর্ভোগ শেষে তুমি ভেজা হাতে মরা জল সে-হাতে সবই সমাধান; কড়কড়ে পাউন্ডের ঘ্রাণ দীর্ঘশ্বাস বুকে চাপি দেয়ালে পিঠ ঘেঁষে অনর্গল গাই গান তোমরা দু-চোখ ভরে তাকাও; জলে মুখ লুকাও; এত জল এত এত মুখ রেখে, তাকে যে ঠকানো গেল না রসানো জলে *** লাটিম লাটিম ঘুরে ঘুরে চূড়ান্ত যাত্রায় মাটি চিরে ব্যথাচিহ্ন খোঁজে লোকালয় ছেড়ে লোহার দুঃখ কে খোঁজে বলো কাঠের অপেক্ষা ছিলে পাশে তবু নির্ণয় করতে পারিনি কেন লোহা মাটি খোঁড়ে লাটিম কেন ঘুরে দাঁড়ায় লক্ষ প্ররোচনায় দেখো কী সুন্দর লোহা-মাটির স্পর্শে ছুটে যাচ্ছে ঘূর্ণিলাটিম দশআঙুলের ইশারায় *** শাদা পাথর শাদা পাথর সেও বোকা, কারো হাত ধরে সেও মূল্যবান সম্পদ হয়ে শৌখিন মানুষের ড্রয়িংরুমে সেজেগুজে বসে থাকে কাচের দেরাজে বালিমাটির সাথে মিলেমিশে পায়ে পায়ে হাঁটে— হাঁটাহাঁটি করে, বাহ! ইটের পর গাঁথা ইট সারি বেঁধে চলে আর রড-সিমেন্টের কথা পুরোপুরি আধুনিক শেষ দেখা এ-রকম হবে : যেমন নীরবে দাঁড়িয়ে থাকা দেয়ালে দেয়ালে আর ওই নিমন্ত্রণের দিনে তোমারও সংস্কার হবে গোপনে যেমন ইট-বালু-সিমেন্টে শাদা পাথরগুলোকে পাহারা দিচ্ছে সমগোত্রীয় জেনে *** |
মুহূর্তমন্দিরা - সৈয়দ আফসার