............................... |
................................................................................................................................ যে-বিষে ধ্বংস অনিবার্য দীর্ঘরাত্রি জেগে থাকি দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার আশায়। আশায় আশায় ফেরি করি আবেগি ইতিহাস। তোমার শ্বাসের ভেতর মিশে যেতে যেতে হৃদপোড়া বিষে কেবলই অবগাহন করে উঠি। কেন যে হারানো মুদ্রার মতো সরে দাঁড়াও আর নতুন জামার ঘ্রাণ হয়ে লেগে থাকো অস্তিত্বময়! হারানো মুদ্রা, ঘ্রাণ...এইসব খুঁজে খুঁজে অবশেষে আমিও পোড়াব সকল অনিবার্য। অপেক্ষায় নয়, দীর্ঘরাত্রি জেগে থাকি দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার আশায়। যে-বিষে ধ্বংস অনিবার্য আমার, তা কি তোমাকেও পোড়ায়? ফেয়ারি পর্ব বালিশ থেকে মাথা তোরো-চৌদ্দ ইঞ্চি দূরে ঘুমিয়ে আছে। এই ব্যবধান কীভাবে হলো, ঘুম থেকে জেগে তা-ই ভাবছি। একটি লুপ্ত স্বপ্ন দেখার কথা ছিল ভোরে। কিন্তু তা হল না। কেন হলো না? কেউ দায় স্বীকার করেনি, নিজেও জানি না। ফলে সদ্যফোটা সূর্যফুল দেখে ভিজে যাচ্ছে ভোরের ছায়াহীন বন। কার দায় বেশি ছিল তুমিই বলো এখন ঘূর্ণি গ্র্যাভিটেশন! সমুদ্রসৈকতে একদিন সমুদ্রপাড় ঘেঁষে হাঁটছ; ভাবছ, স্বপ্নহীনতা কাকে বলে? বলছ, সব অনুভূতি অন্যরকম লাগে। বাতাস, তুমি কি জানো— পায়ের আওয়াজে ঘুঙুরও কীভাবে হাঁটে? চুল তোমাকে নিয়ে একসাথে ওড়ে, চুলগুলো কীভাবে জড়িয়েমড়িয়ে যাচ্ছে নাকমুখচোখে, দু-একটা ঢুকছে দাঁতের ফাঁকে। অথচ কথা ছিল একসাথে ঘুরে বেড়াব, হাতে হাত রেখে ফিরব মর্মরিত হাওয়ার তাড়া খেয়ে। সমুদ্রস্নান শেষে তুমি সৈকতের কাছে দাঁড়ালেও সমুদ্রের বুকের অজানা দুঃখগুলো দেখতে পারবে না; সব দুঃখ বুকচাপা দিয়ে তার অনাদি-অনন্তকাল বেঁচে থাকার স্বার্থকতা। আর, সমুদ্রবুকে কতজন ফেলে গেছে তাদের স্মৃতি-স্বপ্ন, হাসি-কান্না, হয়তো জানো কিংবা জানো না—সেই একদিন সমুদ্রস্নান শেষে আর দেখা হলো না পা ও পথ সে এসেছে কাল। আজ চলে যাবে। সুখে-দুঃখে টের পাই আসা-যাওয়াই চিরন্তন। তবে পথ যেন কেমন কেমন...পায়ে পায়ে হাঁটছে ধুলো। ধুলোপায়ের ছাপগুলো কী আটকাবে পথ? পায়ের শব্দ বাজছে কানে। আমার চোখ দৌড়াচ্ছে জোড়াপায়ে। ভালো থেকো পথ। হয়ত আবার আমাদের দেখা হবে তৃষ্ণার্ত আমিও এসেছি সবার কাছাকাছি। আনন্দে কারা-কারা হাসবেন, হাসুন! বলুন, কী কী আয়োজন করবেন? পেছন থেকে একজন বললেন : সবই হবে, আগে বসুন! বসে চুপচাপ ভাবছি সকল আয়োজন এক-রকম হয় না, এক-রকম দেখিনি আজও মানুষের চেহারা, চরিত্র, মন। জলের তৃষ্ণা বাড়ছে কী সাঁঝের? সাঁতার খুলে আমি নামছি না জলে। তিনি বলছেনঃ নামুন তৃষ্ণার্ত, জলে! |
মুহূর্তমন্দিরা - সৈয়দ আফসার