....................... রূপ খেয়ে নিদ্রা যাই
মন ফুরফুরে তাই, রূপ দেখে, রূপ ছুঁয়ে নিদ্রা যাই। নিদ্রা এত অধিক যেন ইচ্ছাকে ভাবায়। সম্পর্ক, তুমি কৌশলে দাঁড়াও,
দেখবে দ্বিধাদ্বন্দ্বগুলো কিছুই জিজ্ঞেস করে না। তুমি থাকো অন্যত্র; অন্যত্র ঘুমাও। ওহ্! বিধি, তুমি কি জানো, তোমার
সরলতার ব্যাখ্যা আমি কীভাবে সাজাই! কাছে পেলে কিছুই বলব না, চুপচাপ জড়িয়ে র'বো, দূরে থাকো তাই জোছনা
দেখে দেহতৃষ্ণা মিটাই, অনুভবফুল গোপন ইচ্ছায় তোমাকে ছুঁই


কামনাপাতা
না-ছুঁলে পাথর হয়ে ওঠে হাতের রেখা, রূপ খুলে গোপন করো অচিন তালু; লক্ষ করো, দেখো, কার চোখে গাঢ় হয়ে
দাঁড়ায় রাত-পোহাবার আলো, কার বুক চিরে এসে তুমি দেহ বেয়ে যাও! অচিন মায়া! যে পোড়ায়নি পাতালে নীরব রেখায়
তার বশে কাঁপছি, কাঁপছি কিশোরবেলা, হৃদয় ভুলবার আগে চোখ খোলো, বুক খোলো, খোলো দেড়হাত-
মোড়ানো নিষেধটানা। সুদূরে আছো, তনুমনে আছো, জল খুলে ধরো কামনাপাতা। শেষরাত্রি গ্রহণ করো, এসো দেখি
কতটা জ্বালায়, কতটা উড়ায়, উড়াল হাওয়া। আমাকে ভাবায়নি কেউ, উড়াল হাওয়ায় তোমার যাওয়া-আসা


কেন এত বেঁচে থাকা
বেদনার সাথে অকারণেই সম্পর্ক ভালো। স্বপ্ন, তুমি বেদনার হাত ধরে বেঁচে থাকো আর সীমিত আকারে অভিমানী হও
ঠোঁটে। তবুও ডাক্তারের কাছে যাওয়া-আসা ক্লান্তিকর, অস্বস্তি লাগে। শোনা গেল, বেদনার বয়স বাড়ছে। চেপে
রাখি।কাউকে কিছুই হয় না বলা। শুধু জিজ্ঞাসা, এ-ই যা; মরার পর কি কবিতা লেখা যায়? কে শোনে কার কথা!
শেষাবধি বেড়ে চলে ঋণের বোঝা;আমাদের গড় আয়ু আর গড় উচ্চতা, এই নিয়ে বেঁচে থাকা...এই নিয়ে বেঁচে থাকা...


ফেরা
একটাই পথ ছিল ফেরার, আমি হাঁটছি ত্বরাত্বরি—এভাবেফিরে যাওয়া! দুপুর খাড়া হয়ে থাকবে তো? পায়ের
নিচে পাথর; পাথরভরে আমার দাঁড়িয়ে থাকা।তুমি গান গাও, আমি মুগ্ধ হই; আর যা যা বলার নিচুস্বরে বলো, আমি
চুপচাপ থাকি; ভেঙে পড়ুক বুকের গোপন অহংকার। আমি জড়িয়ে থাকি গানের পাশাপাশি


হারানো সিম্ফনি
ঘর থেকে বেরোবার আগে দরজায় দাঁড়াই। মায়ের শেখানো দোয়া পাঠ করতে করতে প্রথমে ডান পা বাড়াই।
দরজার অহংকার দেখি। দরজার অহংকার দেখা, সে-ও এক খেলা। সামনে পিঁপড়ার হেঁটে যাওয়া দেখতে-দেখতে মনে
পড়ে এলিয়ট আর আঁজলায় খেলে যাওয়া জলের কথা। এলিয়ট বলেছেন, মধ্যবয়সে পৌঁছে কবিদের সামনে তিনটি
রাস্তা খোলা থাকে—'১. লেখা বন্ধ করা, ২. পুরনো লেখার আঙ্গিকগত উৎকর্ষসাধন, ৩. সম্পূর্ণ নতুনভাবে লেখা।' যদি
ষাট বছর বাঁচি, এখন আমি মধ্যবয়সের ভেতর হাঁটছি, তবে কি বন্ধ করে দেবো ভালোবাসার গানগুলোর শরীর মেলে
ধরা! নাকি নতুন করে বাঁধব কোনো গান এই অবহেলায়? হায়, মধ্যবয়স! তারচে ভালো কবিতা ছেড়ে দিয়ে শচীনকর্তার
গান শোনা ঋত্বিকের ছবি দেখা, জীবনানন্দের অন্ধকার কবিতার ভেতর নিজেকে খোঁজা

 পরের পাতা      সূচীপত্র 

মুহূর্তমন্দিরা - সৈয়দ আফসার