.................. তৃপ্তিজাত
যেতে চাই, কিন্তু যাব কই? যাব বলে কোথাও যাওয়া হয় না। ভাস্কর, তারচে তুমি বলো, তৃপ্তি যেন কিসে? কার দখলে
ঠায় দাঁড়াও, মেশাও পিপাসু উত্তরাধিকার। অলস এই আমি, স্বপ্নঘাত গোপন রেখে বসে আছি। আর দেখছি কীভাবে তুমি
পড়ো বর্ণে ও ছায়ায়।শর্টকাট দৃষ্টি ফেলে যন্ত্রণা নিয়ে যাব স্বগৃহে।রহস্যময় দুপুরও দাঁড়ায় চৌরাস্তায়। এবার বলো, হাওয়ার
জোরে আর কত বসে থাকা; কথা না-বলে কত অপেক্ষা স্তব্ধতার ভেতর খুন হবার মন্ত্রে শেখো, বুক খুলে দেখো, তৃপ্তিজাত
ফলের মিষ্টতা


নিদ্রাপোশাক
প্রতি ভোরে সূর্যটা চুমু খায় পৃথিবীর ঠোঁটে। ইচ্ছে হয় সূর্যকে টেনে আনি; তুলে রাখি শোবার ঘরে;যেন
অন্ধকার লালন হয় চোখে; ধীরে-ধীরে সরোদ চোখ হাসে। এই রোদে যদি আমার অর্ধেক হাড় খুলে ফেলা যেত, যদি
অর্ধেক হাড় ছুঁড়ে ফেলা যেত শকুনের ঠোঁটে! আমার ধারণা থেকে জেগে উঠছে ব্যথা, নিদ্রাপোশাক। দেহের ভার থেকে
দশগুণ বেশি ব্যথার ভার! পৃথিবী কি জানে ছায়ার ওজনটা ঠিক কত? ছায়াহীনভাবে হাটতে পারি না বলে দূরে হাঁটি;
দূরপথে হাঁটলে স্বস্তি পাই পৃথিবী কি জানে, ছায়াভরে আমিও দাঁড়িয়ে আছি!


আমি ও দেয়াল
বিজ্ঞানীর ভাষায় পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব ঠিক যেন কত? যতই হউক, পূর্ণদৃষ্টি থেকে বেশি নয়। কারণ
পূর্ণদৃষ্টি দিয়ে পৃথিবী থেকে সূর্যকে দেখা, আর জোড়াচোখে সৌন্দর্য উপভোগ করে বুঝলাম, দৃষ্টির দূরত্ব থেকে
সূর্যের দূরত্ব কয়েক কোটি ভাগ কম। হেলানো দেয়াল আনন্দ দেয়! হেলানো দেয়ালে প্রায়ই ঘটে চোখাচোখি। সে আর
আমি সটান দাঁড়াই, দাঁড়িয়ে দেখি আমাদের প্রস্তুতি। আমার সাথে রোদও হেলে চুপিচুপি দাঁড়ায়, ভাবি দৃষ্টির ভেতর কখন
যে আমিও দেয়াল হয়ে যাই


একটুকরো মোম
আমার ভয় স্ট্রবরিছায়ায় লুকাতে পারে না বলেই পথে- বেপথে ঘুরেও যথেষ্ট ক্ষমতাবান হয়। গুপ্তসূত্র মেনে আমাকে গ্রহণ
করতে চায় স্ট্রবরিহৃদয়; কিছু ছল কিছু লোভ ছিল ঘোষপাড়ায়...সময় আমাকে ধার নিয়ে চলে—পুরো অধিগ্রহণ বলতে
যা বোঝায়। ভয়, আজ তবে চলো—একসাথে গভীরে যাই জ্বলন্ত মোমের ফোঁটায়। ভয় বেশ নিরুদ্বেগ; লাবণ্য খুঁড়লেই
ঘ্রাণ স্ট্রবরিভাঁজে। আমাকে গ্রহণ করো স্ট্রবরিহৃদয়!


মর্মদাহ
নীরবে দাঁড়ালাম, চোখ ঘুরিয়ে চারপাশ দেখে সতর্কতায় তার চোখের ঐশ্বর্য খুলে ফেললাম; চোখের অবস্থান
ঠিক কোথায় শেষ হবে কে জানে! চারচোখে অপরাধবোধ জমতে জমতে শ্বাসকষ্ট বাড়ে, চোখের জলও ম্রিয়মাণ, আমি
কাঁদি না মর্মদাহে


এসো তবে নেমে যাই শ্রাবণে
আমার ক্লান্তিরা ঝরে গেলেই মুক্তি পাবো কি না কে জানে। পালাবদল যদি হয় তো হউক; একটু একটু করে নেমে
পড়ুক পুরনো বাঞ্ছায়; না-হলে কি-বা ক্ষতি এ-রাত্তির? এসো তবে নেমে যাই শ্রাবণে, জলপতি ডালে। আমাদের
পাশাপাশি খাড়া হতে শিখুক মনোযোগহীন কথাবার্তা। ক্লান্তি না-আসা নীল ব্যথা যদি আমাকে তুলে নেয় কৌটায়,
প্রবাহিত হয় বাঁকানো হাওয়া। বোকাসোকা অসুখটা এমনিই সেরে যেত, থাকত না কুমারী আর্তনাদ। ক্লান্তি আসা না-আসা
অন্তরালে জীবন চলছে। এসো চুপিচুপি মিশে যাই ছায়ায়, গাছের নিচে


পরের পাতা  সূচীপত্র

মুহূর্তমন্দিরা - সৈয়দ আফসার