.............................. নদী ও নারীর কাছে যাব
কোথায় যাব? শ্বাসের ভেতর কার জন্য হয় দীর্ঘ অপেক্ষা? সান্ত্বনা ভরদুপুরে এঁকে রাখে কাচের চাদর। সে কী
'নারীরূপাকার ছায়া' উদাস সময়! জিন্সপ্যান্ট বা জুতা একটি হলেই হলো; জানি না আমার চেহারার সাথে কোন কুর্তাটা
মানাবে ভালো; আয়নায় দেখি না মুখ কতদিন হলো! শার্ট পরা ছেড়েছি বছর দশেক হলো। এই যে বোতাম লাগানো আর
খোলা ভাল্লাগে না আমার। কোথায় যাব আজ? ভাবতে ভাবতে কোথাও যাওয়া হলো না। আজ নদী ও নারীর কাছে
যাব, তাদের কাছে গেলে মিলবে সান্ত্বনা


ঘামফুলের গতিবেগ
তোমাকে দেখা আর সম্যক উপলব্ধি করা—দুইটিই আজো অধরা। লুকিয়ে রাখছ কি ভয়, পুরো লোকলজ্জা, সে-প্রশ্ন রেখে
গেল কারা? এসব কথা কীভাবে বলি! আমি যে মজিয়াছি তাঁর একপলক ইজাজতের আশায়। কাজ শেষে পলকহীন শ্বাস
টেনে বাড়ি ফেরা মানেই ক্লান্তিভার ঠেলে ঘামফুলের গতিবেগ আগলে রাখা। একাকী বসতি তাই মনের উপর জাবর
কাটছে শ্রীনগর, খননপিপাসা; ইচ্ছেকথা তুমিও বুঝে নাও, ক্লান্তিহীন আমি আর এককাপ চা। অসম মনঘড়ি, আমাকে
সম্যক উপলব্ধি কোরো না আর। ক্লান্তদেহ মানছে না আর, মুক্তি দাও...মুক্তি দাও এবার


আঘাত
নাহ্ চোখের ভেতর আর বিশ্বস্ত থাকা গেল না। তবুও বন্ধচোখে আস্থা খুঁজি, খুঁজি সংশয়। হঠাৎ ছুটে-আসা কান্নারা
সতর্কভাব নিয়ে আশা জাগায়। বললাম—ধার দাও, যতটুকু চাও, ভালোথাকা আমার। না-হলে যত্নে-প্রযত্নে কান্নাদের প্রাণ
ফোটাও। তোমার নাম ধরে বাঁচি। তুমি জলফুল কি না কে জানে। না বললেই কি দূরে ঠেলে রাখা যায় দ্বিধা, দেয়ালঘেঁষা
বইপত্তর! পাশে দাঁড়ানোর নারী—ইচ্ছায় জাগে কি জাগে না ভালোবাসাটাসা


রিমোট-কন্ট্রোল
বাল্বের পাওয়ারটা শূন্যের ঘরে রেখে যখন ঘুমাতে যাই রিমোট-কন্ট্রোলহীনভাবে, স্মৃতিরা অন্ হয়ে যায়। মনে হয়, বুকের
ভেতর জ্বলছে হাজার ভোল্টের বাতিস্তম্ভ। চন্দ্রিমা রাতে আমার ছায়া আমাকে নিয়ে চলে, আমি একা-একা হারাতে চাই
ছায়াহীন রাতে। শোকোচ্ছ্বাসের ভেতর যে কান্না জমে, আমি তাদের ভালোবাসায় বশ করি, বসাই কোলেকাঁখে। স্ববেশে
আসা যত কথা...দীর্ঘশ্বাসেরও একটি ঘ্রাণ থাকে... দীর্ঘশ্বাসের ঘ্রাণ আর ঘরভর্তি অন্ধকার না-হলে ঘুমোতে পারি না। এই,
এই যে দিলাম টিপ রিমোট-কন্ট্রোল। বন্ধ হও, বন্ধ হও কান্না


বাইপাস-সার্জারি
আমাকে গ্রহণ করো স্বেচ্ছায়! কালো চশমাটা খুঁজে পাচ্ছি না আজ, তাকে পেলেই সকল আয়োজন। হতো আমাদের
কান্নারও ভোজ। কিছু হলো না আজ। কিছুই হলো না কাজের কাজ। তবুও জানি কান্নাকাটি করাটাই মনের
কারুকাজ। পাখি কি কান্নার ভাষা বোঝে? কেন যে অন্ধকার রাত্রি আমায় নিয়ে ঘুমোতে চায় না! খোলা জানালার ফাঁকে ফাঁকে
ঢলে পড়ে সিম্ফনি। অন্ধকার সিম্ফনি। যদি পারো করে নাও মনের বাইপাস-সার্জারি। কখনোই আমি কালো
চশমাটা পরিনি, সকল দৃশ্য যেন প্রাণহীন লাগে। হয়তো আমাকে পরে নেবে অন্ধকার সিম্ফনি, নিচ্ছি প্রস্তুতি তাই


আড়ালে থেকো না প্রিয় বেদনা
পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে দেহের খলবল ক্রমশ বাড়ছে। গতি- কৌতূহল নাচিয়ে তুলছে বাধা ও ভীতি, আমাকে তাতিয়ে
রাখছে সব অনুভূতি। প্রতিশ্রুতি আমাকে ধাক্কা দিলেই সব নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে অনুভূতির আঘাতে! গাছের ছায়া আর
খাড়া রোদের ভেতর জমিয়ে রাখি অশ্রুবিন্দু, ভয়ভীতি। আমার ভেতর আমাকেই চাষ করি যাহা কেউ জানিল না। আমার
ভেতর তোমাকেও পুষি। আড়ালে থেকো না প্রিয় বেদনা

 

পরের পাতা   সূচীপত্র 

মুহূর্তমন্দিরা - সৈয়দ আফসার