প্রার্থনা

 

একটি বাসন্তী চুম্বন তোমার ঠোঁটের কাছে প্রার্থনার মতো বসে আছে
খুব নিরিবিলি; ধ্যানী নয়, ঋষি নয়,-;
কবি,
নতজানু হয়ে আছে প্রার্থনার কাছে;


১২.০৪.০৮

 

তোমার সঙ্গ ভালো লেগেছিল বলে অমাবস্যার নিবিড় অন্ধকারও
মধুকূপী ঘাঁসের ডগার শিশিরের মতোন
শিহরন জাগিয়েছিল

 

 

 

শিরোনামহীন

 

স্তব্ধ অন্ধকারে তুমি উন্মুক্ত হলে........
আমার কি লাভ বলো।

 

৪.০২.০৮

 

 

 

 

তুমিই সবুজ আছো বলে

 

ধূসর হতে চলেছে সমস্ত কিছু; নাকি সবই ঠিক আছে- আমার দৃষ্টি,
দর্শণেন্দ্রিয় দুর্বল হয়ে যাচ্ছে; আজকাল আর পার্থক্য করতে পারি না-
ব্যর্থতা আমার, না আমাতে ব্যর্থতা? সকালের মতো সবই তো
নিয়মিত, নিবিড়; হাসিহাসি মুখ নিয়ে সন্তান যায় মাঠে
ফেরে ধুলোমাখা গায়, হাসিটি তখনও চলমান; যদি কোন বিষাদ থাকে
সে তার পাহাড় প্রমাণ হোম-ওয়র্ক! তোমাকে কখনোই হয়নি মনে সুখী;
কখনও সুখী হয়েছো কি শরীরে? ক্ষুধায়? তৃষ্ণায়? প্রেমে?
হয়তো অনেক আগেই হয়েছি পরিত্যক্ত তোমার যাবতীয় চাহিদার কাছে
হয়তো কখনোই ছিলাম না পরিতৃপ্তিতে; ধূসরতার গান তবে আমাকেই
মানায়। আমি কি ছিলাম কবে হ্যামেলিনের বংশী-বাদক?
তলানিতে গিয়েছে ঠেকে স্মরণের স্তর; কোন্ বীর্যপাতে তোমাকে
করেছি ভ্রুনবতী- মনে আছে? -নেই তো স্মরণ; নিজের অক্ষমতায় ক্ষমা চেয়েছি
রাতের কোন্ কোন্ প্রহরে, এখনও তুমি সন্তান কোলে বলে দিতে পারো;
তুমিই সবুজ আছো বলে -স্তনে আর সুঘ্রানে- আমার ধূসরতা বড় বেশি চোখে
লাগে তোমার- কটু মনে হয়;

 

১১.০৮.০৮

 

 

 


 

 

 

 

অবসন্নতার গান

 

আমার একটা কবিতা কী করে যে অমর হয়ে গ্যালো;
দুই শব্দের মধ্যবর্তি নৈঃশব্দের মতো
আমার এই বিচ্ছিন্ন কবিতাটি দীর্ঘকাল অপেক্ষমান
থেকে অবশেষে ...

বিকেলগুলো বরাবরই বিষন্ন মনে হয়
মাটির দেবীর কাছে কখনোই ইচ্ছে করে নি প্রার্থনা জানাতে
বরং মানবীকেই যথার্থ দেবী বলে মনে হয়
দিনরাত নতজানু হয়ে সৌন্দর্য প্রার্থনা করি; পদানত
স্বপ্নগুলো আবার উঠে আসে সময়কে উপেক্ষা করে
বিশুদ্ধ ইচ্ছেরা মৃত্যুহীন আত্মার মতোন
হাহাকার করে চলে খাঁ খাঁ দুপুরের মতো মগজের পরিধি জুড়ে;

প্রসব বেদনারত নক্ষত্রের কাছে বার্তা পাঠাই; কোন উত্তর আসে না
আসে ধূলি ঝড়; ঘটে উল্কাপাত।
অনার্যের প্রার্থনায়
মহামারি হয়ে দেখা দ্যায় ঈর্ষা-কাতর অমাবস্যা।
সমস্ত বিহ্বলতা ঝেড়ে স্তবব্ধতার কাছে নতজানু হয়ে
থাকে নিদাঘ চিৎকার। নারীর কাছে স্বর্গের মোহ
খুব বেশি কিছু নয়। অপ্সরিরা আছে কিন্তু...;

প্রতিদিন বাজার যাওয়ায় কোন অলৌকিক সৌন্দর্য থাকে না
শিশুর হাতের ছুরিও মনে হয় অপার্থিব ঝিলিক; কবিতার স্তবকগুলো
ফিরে আসে; ফিরে আসে সন্ধ্যার নির্জনতা ধীর অথচ দীপ্ত পদক্ষেপে;
কবিতা লেখা অবিরাম চলে, পঙ্ক্তিতে পঙ্ক্তিতে চলে
জ্যামিতিক উপাখ্যান; যাবতীয় সুরাসুর এসে আজকাল
বসে থাকে কবিতার খাতায়। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায়
(মুলত স্মৃতির প্রতারনায়) কত যে কবিতা
আজাকাল প্রসব ঘরেই নিহত হয়; প্রিয় কবিতার পঙ্ক্তিমালা ভুলে গ্যালে প'র
সঙ্গমেও অনিচ্ছুক হয় কামার্ত হরিণ।

বেহিসাবের দীর্ঘ ছায়ায় ঢেকে যায় সমস্ত আকাশ; বড় অথচ
তীক্ষ্ণ নখের আঙুলগুলো মেঘমালার সৌন্দর্য ফুঁড়ে বের করে আনে
অনাকাঙ্খিত অপ্রস্তুত বর্ষাকাল। ঘিনঘিনে কাদায় ভরে উঠে
মানবিক উঠোন; বাদুরের মুখ থেকে নিঃসৃত স্বরের মতোন
গান ধরে রাত্রি-প্রেমিক সুধী জলসায়।
বুদ্ধির দোকানির রমরমা ব্যবসা এখন; ভরে উঠে তাঁর নিটোল ক্যাশ বাক্স
পাড়ার মোড়ে ঝিমুতে থাকা দর্জিরও শুনি ইদানিং
ব্যস্ততা বেড়েছে খুব; প্রেমিকের প্রবঞ্চনায়
দিশেহারা প্রেমিকার মোবাইলেও দেখি ব্যস্ততার ঝড়;
ব্যস্ত আমলারা, পিঁপড়েরা, শেয়ালেরা, অবসরপ্রাপ্ত জেনারেলেরা,
মহাখুসিতে আরও ব্যস্ত দেখি রাষ্ট্রিয় গর্ধভের পাল। প্রাগৈতিহাসিক গুহা থেকে
উঠে আসা দীর্ঘদিনের জমাট ব্যর্থতা শহরে বিচরন করে কত সাবলিল

হিজল গাছে ঘুম ভাঙ্গা পাখির বিরক্তি
জানলার পাশের বিশাল শুণ্যতা- সাধের বাসক গাছটি
আর নেই- জলের গন্ধ মাখানো বাতাসের লুটোপুটি; শ্যওলা জমা
টেবিলে মুখোমুখি কবিতা আর কবি। ভ্রান্তীর অবয়বে
আবার উন্মাদ হয় প্রজন্মলব্ধ অরণ্যচারী;
এইসব আহুত অনাহুত আবিষ্কারে মধ্যে আমার
কবিতাটি কী করে যে অমরতার কাছে প্রিয় হয়ে উঠলো
ঠিক বুঝতে পারছি না। দীর্ঘকাল আমিওতো
নৈঃশব্দের মধ্যে ছিলাম ডুব দিয়ে অপেমান অবসন্নতায়;

 

১৩.০৮.০৮

 

খন্ডকালিন কবিতা

 

হাহাকার


কতটা নিরব থাকলে তবে স্তব্ধতার কাছে যাওয়া যায়?
আর কতটুকু নিবর থাকতে হবে- হে আমার বিষন্ন
সুন্দর? জনতার তীব্র হাহাকার, সভ্যতার অশ্লীল চিৎকার
সঙ্গমে অতৃপ্ত নারীর ব্যর্থ শীৎকার, কোকীলের কান্নার
কোলাহলে ঢেকে যাওয়া পৃথিবী; যে রাত্তিরে
ঝরাতো তরল জ্যোছনা অনর্গল
সে রাত্রি জুড়ে আজ কেবল জনতার যন্ত্রনা কাতর চিৎকার।
 


দৃশ্যপট


ধোঁয়ার ভেতরে ভেতরে হেঁটে যায় সারি সারি গুবরে পোকার
সাঁজোয়া; ভ্যানের হেড লাইটের আলোয় ধরা পরে
পলাতক শেয়াল; সকালের সব রঙ চুরি করে নিয়ে গ্যাছে
একটি কালো রঙ এর পায়রা। শান্তির অন্বেষনে একদল উট
বমির মতোন গলা থেকে ঢেলে ফেলে দ্যায় অনেক দিনের জমানো জল;
দেখি সবকিছুই উল্টো দেশের উল্টো রাজার মতোন
 


বিষন্নতার শেষবিবৃতি


আজ শেষ দিন। বিষন্নতার আজ শেষ দিন। কাল থেকে যাত্রা শুরু
নিরন্তর দুখের দিকে; বিপর্যস্ততার দিকে; অনিশ্চয়তার দিকে
ধ্বংসের দিকে। আমাকে আলিঙ্গন করো হে বিগত দিন আমার
শেষবারের মতোন-জন্মাবধি ছিলাম তোমার সাথে- হৃৎপিন্ড
মিলাই; না, আজ আমার কোন অনুশোচনা নেই
ক্ষোভ নেই তিরস্কার নেই নিজের প্রতি। এই রকম দিন
ঠিক এই দিনের অপেক্ষাতেইতো ছিলাম অ্যাতো দিন। প্রেমে আর
আশ্লেষে আমাকে গ্রহন করো হে অনিশ্চি আগামি;
 


এই বর্তমান


অ্যাতো বিষাদ; ভুলের মাসুলগুলো দিতে দিতে। আর কি বোলবো,
স্বপ্ন দেখে দেখে চোখ খুইয়ে ফেলেছি; চোখের যে দোষ দেবো
সে উপায়ও নেই। আত্ম বঞ্চনায় ভুগি। এই ছিলো। এই নেই।
এই আমি। এই বর্তমান। এই-ই বর্তমান আমার।
 


সময়


আমরা সময়কে উচ্চারণ করে চলেছি ক্ষোভে,
ঘৃনায়, হতাশায়...
সময় আমাদের নিয়ে চলেছে কোথায়
আমরাই জানি; আমরাই সময়ের নির্ধারিত বিধাতা;
 


হে সময়, -হে সুমন


হে সময়, -হে সুমন,-
বিবর্তনে তুমিও বিবর্তিত;
আসন্ন কালের কাছে পরাজিত এক
তুমি ধুসর বিলুপ্ত লেখা; তোমার
মধ্যে বর্তমান হোক আগামির
অপ্রস্তাবতি ইঙগিত;

 

২০.০৮.০৮

 

 

 

 

 

পাপ থেকে ফিরে

 

পাপ থেকে ফিরে এসে উত্তপ্ত লাভায় হাত ধুয়ে নিলেই হয়; গ্লানীর কোন ভয় থাকে না আর। সব মুছে যায়; লাভার আগুনে সব বষ্পীভুত হয়ে যায়। তাই কব্জিতে সবসময় ভিসুভিয়সের দৃশ্য ধরে রাখা জরুরী।

কখন কে পালায়, কে ফিরে আসে অনির্ধারিত নির্বাসন থেকে, অথবা কে প্রস্তুত হচ্ছে চুল ছেড়ে ভর দুপুরে রাস্তায় নামবার, বোঝা মুশকিল। যারা বোঝে, বোঝেন, প্রাত্যহিক পরিবর্তনে অপটু হয়ে। আমরা যারা নির্দয়াল, তারা নারীর কাছে জীবন বাজি রেখে অনায়াসে আত্মহত্যায় অনুপ্রাণিত হতে পারি। এবং অবলীলায় নারীকে সর্বস্ব জ্ঞানে সময়-কোষ্ঠীর প্রবাহমানতাকে অস্বীকার করতে পারি। শিশুরা পাপ মুক্ত হতে পারেনা (কারন তারা এইসব হিসাবনিকাশে নেই), কিশোরের দিন কাটে বিহ্বলতার কাছে নতিস্বীকার করে; আর যুবকেরা অদৃশ্য আততায়ীর মুখ দেখে বেঘোরে ঘুমায়; শুধু প্রথম প্রহরে শেয়ালের পায়চারি অশুভ ইঙগিত বহন করে বিধায় বৃদ্ধেরা সব জেগে থাকে অসুস্থতার নিশ্চিত অজুহাতে।

পাপেও আজকাল ক্ষয়ীষ্ণুতার ব্যাধি, তাই বৃদ্ধদের নিদ্রায় গমন ভীষণ দারকার!

 

৩১.০৭.০৮

 


 


 

 

 

জেব্রা দাগের ভিন্ন প্রান্তে; থেমে থাকো

 

ভূমি থেকে জেগে উঠে ক্ষমার মতো হে আর্দ্র
চোখ, ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থকো;
দলছুট দাঁড় কাকের
ডানায় এখনো ক্লান্তি নামেনি;
সড়কের ধারে নির্মতারা
এইমাত্র বিছিয়ে গেলো দু'রঙা কার্পেট
তার ভিন্ন প্রান্তে বৃত্তের মতো জেগে ওঠো চর

বিজ্ঞ আবহাওয়াবিদগন আজ এ শহরে বিপদ সংকেত ঘোষণা
করার জোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন- তোমার দিকে
গত শতকের শেষার্ধে নির্মিত একটি রাডার তাক করার আছে
তুমি আহ্লাদিত মুখ খানি আরেকটু মানবিক করো
চরের জমিনে এক্ষুনি বৃষ্টি নামতে পারে; থেমে থাকো

নতুবা সিগ্যনাল না দেখা একটি ক্লান্ত কাক
ভূলক্রমে অতিক্রম করে যাবে জেব্রা দাগের এই প্রান্ত!

 

৩০.০৮.০৮

 

 

 

 

 

বৃক্ষ ও শস্যের গান

 

ফিরে আসে আর্দ্র ঘ্রান:

(আমাদের বৈকুন্ঠবিলাস কালো চরে
যে সবুজের সমারোহে মত্ত ছিলো
তারই শব্দ শুনি সংলাপের মতো)

নিটোল বনানীতে আগুন লেগেছে
কীটেরা সুখী নয় তাই
বাতাসে মিছিলের সাথে পতঙ্গের বিভ্রাট;
আঁধার এই আর্দ্র-উষ্ণ পৃথিবীর স্তনে
তুমি ম্লান কুয়াশার দিন গুনো না;

আমাদের মিলিত প্রেমে
আমাদের মিলিত শ্রমে
আমাদের মিলিত ঘ্রানে
আঙুরের বাগানে প্রসব উৎসব নামে
বেদনার বহ্নুৎসব পেছনে ফেলে
হে আঁধার তাকে তুমি ম্লান করো না;

আমার চরের জমিনে কখনও পুস্প ফোটেনি
তাই শস্যের গন্ধেই আমাদের সুখ
আর্দ্র দিনে আমরা সকলেই সমবেত স্বরে
বৃক্ষ আর শস্যের জন্য প্রার্থনা সঙ্গীত গাই:

 

২৫.০৮.০৮

 

নিদ্রাযাপন

 

দূরবর্তী রূমে তোমার সমূল অবয়ব;
পৃথিবী তার কৌলীণ্যতায় মুগ্ধ;

কাঁচের বয়ামে সেই মুগ্ধতাবোধ
ওড়াওড়ি করে; পার্শ
¦বর্তী জারে
পরবর্তি লিঙ্গের বেড়াল ভাবে:
এখানেই শেষ নয়; মনে রেখো,
কোন খেলারই চুড়ান্ত সমাপ্তি ঘটেনা;


নিকটবর্তী কক্ষে তোমার স্বভাবজাত শরীর- ঘ্রানের দূরত্বে;
তার ঠিক মাঝখানে শীতল কাঁচের দেওয়াল; আমার
শিয়রের কাছে পৃথিবীর পূর্নাঙ্গ মানচিত্র
পায়ের কাছে স্বদেশ; উভয়ের বুকে
পেরেক বিঁধে নিদ্রাযাপন উপভোগ্যই বটে;

নিদ্রায়োজন শেষ হলে পর নিদ্রিত চোখ
পরম মুগ্ধতায় দেখে চলে কাঁচের বয়ামে
উড়ন্ত পাখনার শব্দে তোমারও নিদ্রাযাপন!

 

০৫.০৮.০৮

 

'মেঘদূতম্' পড়ে

 

*

আষাঢ়ে নিবন্ধ মন শ্রাবণ সমান হুতাশে
মেঘদূত লাগি কাঁদিছে;
কহ কালিদাস, কোন বৈরাগীর মন সিঞ্চিত ব্যাথা
তোমার কাব্যে বাজিছে?
*
উজ্জয়নীপুরে পর্ব্বত সমান জমা আছে কামনা
সেই প্রেম লাগি ডুকরি কাঁদিছে কামুক যক্ষের বাসনা ।
*
'তন্বীশ্যামাশিখিরদশনা...' এই তব প্রেয়সীর রূপ
জান কি, আমারও আছে প্রেয়সী
বিচ্ছেদ রাত্রির অনন্ত নিশ্চুপ!

 

২৯.০৬.০৮

 

 

 

 

 

বৃত্তায়ন

 

কাঁঠাল পাতার গন্ধে এ শহর
শ্রেনী সংগ্রামের আন্দোলন তোলে

আমি দেখি, নখ, ঊরু, স্তন
নাভীমুলের অনেক বিপ্লবী
মরে মরে বেঁচে ওঠে
সামাজিক সনির্বন্ধে...

আর কত কত বিপ্লবী
নারীতে অনারাধ্য থাকে

তারপর পর বেঁচে থাকার
লড়াই করতে করতে
মুছে যায় সামাজিক
ইস্তেহারে অস্বীকৃত সব...

যে শহর পত্র পল্লবে সব ইতিহাস লেখে
মানুষের পোষাকে সে শহরে
চতুষ্পদের আধিপত্যের দিন আজ;

কবি, তুমিও নিসংশয় নও এই নাগরিক বৃত্তায়নে

২২.০৭.০৮

 

 

অভিযোজন

 

মুলতঃ পৃথিবীকে দশদিকে ঘিরে রাখাই উদ্দেশ্য; পৃথিবীর নিয়মানুক্রমিক
ব্যবস্থাকে সহায় করে যে অশ্ব ছুটে যায় মধ্যদিনের আলো ভেঙ্গে
তাকে আমি আলোতে দেখিনি কোন দিন। কিছু অন্ধকারগ্রস্থ মানুষের ঘোরলাগা
সংলাপে আমি তাকে লাফাতে দেখেছি শুধু; দেখেছি তার অলীক খুরের প্রমত্ততা
বাস্তবিক মানুষকে কীভাবে গ্রাস করে চলছে নিয়ত। ফলশ্রুতিতে মানুষ প্রায়োগীক
বিদ্যাকে অবমুল্যায়ন করে কী এক প্রশান্তির দিকে ঝুঁকছে- ভাবছে-
কোন খানে এক দেশ আছে, সেখানে একজন বৃদ্ধাও নেই,
অসংখ্য রুপসীর যোনীপথ অপেক্ষায় আছে পুণ্যবান পুরুষের (কিছু যুবক
আর অধিকাংশই প্রমত্ত বৃদ্ধ) প্রোথিত ইচ্ছাকে চরিতার্থ করার লক্ষ্যে।
সেই দেশে আরও আছে নয়নাভিরাম লিপ্সা, আছেন মানুষের বিভিন্ন
মাঙ্গলিক আয়োজনের লোকগত কেন্দ্রবিন্দুতা-;- ভাবি- এটা এক রকম
অভিযোজন। সেই অভিযোজন প্রক্রিয়ায় মানুষ নামক নশ্বর বাস্তবতা
অলীক অশ্বের পৃষ্ঠে চড়ে চলে যেত চায় অন্ধকারজীর্ণ আলোর আশ্বাসে।

 

৩১.১০.০৮

 

( বহুদিন আগে লেখা, তখনও কবিতার চোখ ফোঁটেনি )