আমার হাত হাত রাখ সময়

 

আমার হাতে হাত রাখো সময়।

মঞ্চের আড়ালে
সুনিপুন কারুকাজে দক্ষ কালো পর্দায়
লেগে থাকা দৈনন্দিনতা
অনার্য-দ্রাবিড়-আর্য রক্তের ধারা
আমার হাতে মেশে
নীল আকাঙ্খা
শৈবালের কত বিচ্চুরণ;

পৃথিবীর আহাত শিশু, প্রাচীন মদের
আসন্ন সন্ধ্যা; এইখানে নির্বাসিত
ভৌগলিক সীমানা। সোনালী
ফ্রেমের চশমা অথবা
ঘুঁড়ির দুরন্ততার মুখোমুখি
ক্লান্ত নাটাই
সময়কে ধরে রাখে চৈতালী হাঁস

মঞ্চের পেছনে মুখোশ খুলে
অপেক্ষায় ক্রীড়ানক
বিদায় জানায়
কবেকার দুঃখ;
দীর্ঘ দুপুর একটি নিদ্রার জন্যে প্রতীক্ষা
কিশোরের কেটে যায়
আগন্তুক বাতাসের শিমুল তুলোর গন্ধে গন্ধে

অদেখা চিত্রকলা
কাম আর কবিতার সহবাস
বৈদেহী বিচিত্রা শোনায় অনন্য প্রহসন।
রাত্রির নিবিড় বিন্যাসে নিঝুম পেঁচার
দৃষ্টি খোঁজে পতঙ্গের স্পন্দণ!
অনাঘ্রাতা কুমারীর ঊর্মী স্তন
সূর্যের মতো জ্বলে; শিউলী তলায় জমে থাকে
বেহিসেবী যৌবন; শিশির সিনান-;
অনাপোষী হিংসায় অর্ধেক পৃথিবী
ইতিহাস সমেত অতীত;
অবিনীত
অদৃশ্য পুরুষ
সুনিপুন মোড়কে গচ্ছিত রাখে
ক্লেদ, হাসি ঝরঝর...

গ্রাম্য বধূর কোমরে বিছানো বিছা
পাশে, কাশ বনের হুংকারে
বেহুদা বিশ্বাসীর
সম্ভ্রমহীনতা; তেলাপোকার
পায়ের তলায় সমস্ত পৃথিবী
গোলাকার;

প্রেমিকা প্রপঞ্চক
অশালীন বাতাস দক্ষিণের উৎসে
কোন উত্তরে আছে লেখা
উদাস উদাস!
পায়ের কাছে বসে বিনীত ভিক্ষায় মগ্ন
সুশীল পুরুষ; পৌরুষ অন্তঃপুরে জমা আছে
অর্বাচীন মনুর ইঙ্গীতে
নারী আর পাপ সমার্থক বিন্যাসে

সমবেত জনতার কাছে অতীতের
বিকৃত উপস্থিতি; ধর্ষকের
কাছে হায় ক্ষমতায়িত ধর্ষিতার সন্ধির প্রস্তাব!
যোনী পথে অনুভূতিহীন বিদ্রোহ

বিদ্রোহী---
চাঁদ সওদাগর, বেহুলা আর ভেলার কাছে
নপুংশক লক্ষিন্দর অথচ আরাধ্য;
ভয়ানক মনসা, উলঙ্গ কালী
পবিত্র, ঐশী, কেতাবে লেখা একমাত্র সত্য;
অথচ ইতিহাস জানায়
কী গৌরব আমাদের পিছু পিছু
চলেছে মধ্যবেলা কাল পর্যন্ত;
বিষাক্ত বিশ্বাসের কাছে ধর্ষিত একবিংশ শতাব্দি
শরীরময় অজস্র ক্ষত নিয়ে সপ্রশ্ন দৃষ্টি
সময়ের কাছে-;

নিরুপায় সময় বিপন্ন বর্ণমালার মতোন
স্বর্নালী অতীত বুকে নিয়ে
বসে আছে জমাট জানলার পাশে নিঝুম!

 

০৮.০৩.০৮

 

 

 

 

 

ক্যালেন্ডার

২০০৪
পুরুষ একবার ভালোবেসেছিল নারীকে, তারপর চলে গিয়েছিল ভাগাড়ে
নারী সেই দৃশ্য অংকিত করেছিল সর্বগ্রাসী শরীরের বিভিন্ন প্রদেশে।
 

২০০৫ (প্রথমার্ধ)
দেবালয় থেকে পাপের যাত্রা শুরু; মানুষ সেই অলৌকিকের উত্তরাধিকার হয়ে
বেঁচে থাকতে চায়। আর পশু প্রজাতিরা পাপহীন বেঁচে থাকে নিজস্ব মহিমায়
 

২০০৫(শেষার্ধ)
অধিত বিদ্যায় মানুষ হয়ে ওঠে মানুষের রুপান্তর। যাকে নিয়ে উন্মত্ত হয়
পবিত্র সরাব, আর কোন বিকারে নেই তিনি। তিনি আছেন, ছিলেন;
 

২০০৬
কারো চোখে প্রেম মানে নারীর প্রনয়; কারো চোখে প্রেম মানে
পুরুষের সচিত্র আলিঙ্গন; আর কারো চোখে প্রেম মানে বিক্ষত হৃদয়
 

২০০৭(মধ্যবর্তি)
নতজানু হতে যদি হয়, বুদ্ধের কাছে হবো; ঈশ্বরহীন দ্ব্যর্থ মন্ত্রে
তিনি মঙ্গলময়। অন্যরা সব লোভ আর ভয়ের ইস্তেহার বয়ে নিয়ে যায়
 

২০০৮ (প্রথমার্ধ)
আমরা প্রথমে জেনেছি শীতার্ত কুয়াশার ঘ্রাঁন ছুঁয়ে জেগে উঠছে আমাদের
ভালোবাসার বসত; তারপর বিস্ময়, অবশেষে ডুবে গেছি জলপাইর গহীনে
 

২০০৮(চলতি)
পুস্তকের ইশারায় বাণিজ্যের চরিত্র ঠিক হয়; পুস্তকের ইশারায়
বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। পুস্তকের ইশারায় পুঁজি বাজরে ধস;

 

১৩.১০.০৮