Best view with Microsoft Internet Explorer
font download link
http://omicronlab.com/download/fonts/SolaimanLipi_20-04-07.ttf
সর্বকালের সেরা ১০০ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার
ভাষান্তরঃ খান মুহাম্মদ
গ্রাফিক্সঃ ইন্টারনেট
মহাবিশ্ব এক সীমাহীন সমুদ্র। জ্ঞান যদি তার মাঝে ছড়িয়ে
ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য দ্বীপ হয় তাহলে মানুষ হিসেবে আমাদের কাজ হচ্ছে দ্বীপগুলো দখল করা। সবগুলো দ্বীপ কখনই দখল করা সম্ভব নয়, কারণ দ্বীপের সংখ্যা অসীম। কিন্তু, প্রতি প্রজন্মে আমরা দখলকৃত দ্বীপের সংখ্যা একটি একটি করে বাড়াতে পারি। এভাবে বাড়তেই থাকবে। জ্ঞানের দ্বীপ দখলের হাতিয়ার হল বিজ্ঞান। অনেক প্রজন্ম পেরিয়ে এসেছি আমরা। ফেলে আসা সব কিছু আমাদের সবাইকেই তাড়া করে বেড়ায়। কারণ আমরা প্রত্যেকে বৃহত্তর মানব জীবনের একেকটি ক্ষুদ্র অংশ যাপন করছি। আমরা সবাই এক। আমরা এমন অনেক কিছু আবিষ্কার করেছি যার কথা ভেবেই নিজেরাই বিস্মিত হয়ে পড়ি। আমাদের সেই সব আবিষ্কারের কথা বলতে চাচ্ছি।অসংখ্য আবিষ্কারের মাঝ থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথা সেরা ১০০ টি আবিষ্কারের কথা বলব এখানেঃ সর্বকালের সেরা ১০০ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার। আবিষ্কারগুলোকে আটটি শ্রেণী বা বিষয়ে পৃথক পৃথক করে সাজানো হয়েছে।
যেমনঃ
এই আবিষ্কারের মূল ইংরেজি তালিকা করেছে “সায়েন্স চ্যানেল”। শ্রেণীকরণও তাদের করা।
চিকিৎসাবিজ্ঞান (১৩টি)
Andreas Vesalius |
০১. মানব অঙ্গব্যবচ্ছেদবিদ্যা (১৫৩৮) Andreas Vesalius মানুষের লাশ ব্যবচ্ছেদ করে মানব অঙ্গব্যবচ্ছেদবিদ্যার (অ্যানাটমি) অনেক তথ্য প্রকাশ করেন এবং পূর্বতন ভুল ধারণার অপনোদন করেন। তিনি মনে করতেন, চিকিৎসার জন্য অঙ্গব্যবচ্ছেদবিদ্যা খুবই জরুরি। এজন্যই তিনি নিজে লাশ ব্যবচ্ছেদ করতেন যা সে যুগে একেবারে বিরল ছিল। ব্যবচ্ছেদের মাধ্যমে তিনি রক্ত সংবহন তন্ত্র ও স্নায়ু তন্ত্রের যে ছবি তৈরী করেছিলেন তা ছাত্রদের পড়ানোর কাজে ব্যবহার করতেন। এগুলো এতই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে যে একে অবিকৃত রাখার জন্য তিনি প্রকাশ করতে বাধ্য হন। ১৫৪৩ সালে De Humani Corporis Fabrica বইটি প্রকাশ করেন, এর মাধ্যমেই অঙ্গব্যবচ্ছেদবিদ্যার যাত্রা শুরু হয়।
|
০২. রক্ত সংবহন (১৬২৮) উইলিয়াম হার্ভে আবিষ্কার করেন যে রক্ত সমগ্র দেহে প্রবাহিত হয় এবং তিনিই হৃৎপিণ্ডকে রক্ত পাম্প করার যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ১৬২৮ সালে তার বিখ্যাত গ্রন্থ “Anatomical Essay on the Motion of the Heart and Blood in Animals” প্রকাশিত হয়। এই বই আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।
|
|
|
|
০৪. অনুভূতিনাশক (১৮৪২ - ১৮৪৬) বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, বেশ কিছু রাসায়নিক পদার্থ অনুভূতিনাশক (অ্যানিসথিশিয়া) হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। এর মাধ্যমে কোন ব্যথা না দিয়ে অস্ত্রোপচার করা সম্ভব। প্রথম দিকে অর্থাৎ উনবিংশ শতকে অনুভূতিনাশক হিসেবে নাইট্রাস অক্সাইড এবং সালফিউরিক ইথার ব্যবহৃত হতো। মূলত দাঁতের চিকিৎসকরা এগুলো ব্যবহার করতেন। |
|
০৫. এক্স-রশ্মি (১৮৯৫) ভিলহেল্ম কনরাড রন্টগেন ক্যাথোড রশ্মি বিকিরণ নিয়ে পরীক্ষা করার সময় দূর্ঘটনাবশত এক্স-রশ্মি আবিষ্কার করে ফেলেন। তিনি দেখতে পান, এই রশ্মি ক্যাথোড রশ্মি নলের চারদিকে রাখা কালো কাগজ ভেদ করে যাচ্ছে এবং পাশের একটি টেবিলে প্রতিপ্রভার সৃষ্টি করছে। তার আবিষ্কার চিকিৎসাবিজ্ঞান ও পদার্থবিজ্ঞানে বিপ্লবের সৃষ্টি করে। এর জন্য তিনি প্রথম নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।
|
|
|
|
০৭. ভিটামিন (১৯০০-এর দশক) Frederick Hopkins এবং অন্যান্যরা আবিষ্কার করেন, কিছু নির্দিষ্ট পুষ্টি উপাদানের ঘাটতির কারণে কিছু রোগের সৃষ্টি হয়। এই পুষ্টি উপাদানগুলোকেই পরবর্তীতে ভিটামিন বলা হয়। গবেষণাগারের প্রাণীদের বিভিন্ন খাদ্য খাওয়ানোর মাধ্যমে তিনি বুঝতে পারেন, এই উপাদানগুলো স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যক।
|
|
|
০৮. পেনিসিলিন (১৯২০-এর দশক থেকে ১৯৩০-এর দশক) আলেকজান্ডার ফ্লেমিং পেনিসিলিন আবিষ্কার করেন। এরপর হাওয়ার্ড ফ্লোরি এবং Ernst Boris Chain তা পৃথক করে বিশুদ্ধ করেন। এভাবে প্রথম অ্যান্টিবায়োটিক তৈরী হয়। ফ্লেমিংয়ের আবিষ্কারটি ছিল এক প্রকার দুর্ঘটনা। কাঙ্ক্ষিত ফল না পেয়ে তিনি কিছু ব্যাক্টেরিয়া নমুনা একটি পেট্রি ডিশে গবেষণাগারের এক কোণে ফেলে রেখেছিলেন। হঠাৎ লক্ষ্য করেন, গজিয়ে উঠা ছাতা একটি ব্যাক্টেরিয়া মেরে ফেলেছে। ফ্লেমিং তৎক্ষণাৎ ছাতার নমুনাটি আলাদা করেন, এর নাম ছিল পেনিসিলিয়াম নোটেটাম। পরবর্তীতে নিয়মতান্ত্রিক পরীক্ষার মাধ্যমে ফ্লোরি ও Chain এ থেকে পেনিসিলিন তৈরী করেন যা ব্যাক্টেরিয়াজনিত অনেক রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।
|
০৯. সালফা ড্রাগ (১৯৩০-এর দশক) Gerhard Domagk আবিষ্কার করেন, প্রোন্টোসিল নামক এক ধরণের কমলা-লাল রঞ্জক সাধারণ ব্যাক্টেরিয়া স্ট্রেপটোকক্কি ঘটিত ক্ষত নিরাময় করতে পারে। এই আবিষ্কার “কেমোথেরাপিউটিক ড্রাগ” (বিস্ময় ঔষধ) বিশেষত সালফা ড্রাগ সংশ্লেষণের দুয়ার খুলে দেয়।
|
|
|
|
১১. ইনসুলিন (১৯২০-এর দশক) ফ্রেডেরিক বেন্টিং ও তার সহকর্মীরা ইনসুলিন নামক হরমোন আবিষ্কার করেন। এই হরমোন ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার পরিমাণ ভারসাম্যপূর্ণ রেখে তাদের স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করতে সাহায্য করে। ইনসুলিন আবিষ্কারের পূর্বে ডায়াবেটিস মানে ছিল একটি ধীর ও নিশ্চিত মৃত্যু।
|
|
|
১২. অনকোজিন (১৯৭৫) হ্যারল্ড ভারমাস এবং মাইবেল বিশপ অনকোজিন আবিষ্কার করেন। এই সাধারণ জিন প্রতিটি কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে, কিন্তু পরিব্যক্তি ঘটলে বা পরিমাণে অতিরিক্ত বেশী হয়ে গেলে এরাই ক্যান্সার কোষের সৃষ্টি করে। ক্যান্সর কোষ এমন ধরণের কোষ যারা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বেড়ে চলে। ভারমাস ও বিশপ লক্ষ্য করেন, বাইরের কোন বস্তুর আক্রমণে ক্যান্সার কোষের সৃষ্টি হয় না। কিন্তু, পরিবেশের বিষাক্ততা এবং বিকিরণ বা ধূয়ার কারণে এ ধরণের পরিব্যক্তি ঘটতে পারে যা ক্যান্সার কোষ সৃষ্টিকে উসকে দেয়।
|
১৩. মানব রিট্রোভাইরাস এইচআইভি (১৯৮০-এর দশক) রবার্ট গ্যালো এবং Luc Montagnier পৃথক পৃথকভাবে একটি নতুন রিট্রোভাইরাস আবিষ্কার করেন, পরবর্তীতে যার নাম রাখা হয় এইচআইভি (হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস)। তারা এইড্স (অ্যাকুয়ার্ড ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি সিনড্রম) রোগের কারণ হিসেবে এই আইরাসকেই চিহ্নিত করেন।
|
|