নব আলোকে বাংলা
উত্তরাধিকার। অঙ্গীকার। দূরদৃষ্টি।
Humaira Haroon, Suprateek
Aroop Ghosh, Nauba Aloke Bangla
সম্পাদক
সুপ্রতীক অরূপ ঘোষ
পাঠক পরিষদঃ শুভলগ্না শোয়ারা, চঞ্চল চৌধুরী
এবারের
প্রকাশনা
কবিতা
মনবনে আমাদের কবিতা...
মনবনে আমার কবিতাখানি...
আমার লাবণ্য আমার বনানী
অমিত রায়ের লাবণ্য ছিল
আমারও এক লাবণ্য আছে
শেষের কবিতা থেকে এই দু’হাজার দ’শে
কোন আশায় আজও মন প্রেম করে
যন্ত্র সভ্যতায় প্রেম হয়ে যায় আজও বন্যার সাথে!
আমার লাবণ্য সে
না কি সে আপন আবর্তে এক স্বাভিমানী ললনা
আমার প্রেমিকা সে
না কি সে নিজের অন্তঃস্থলে শুকসারী
কে জানে ... |
বাতাস বুঝেনি ডানা
একটা পুষ্পিত
স্বপ্ন দ্যাখে
বাতাসেরও সাধ জাগে আকাশ ছুঁয়ে দাঁড়াই-।
স্বপ্নকাঠামো স্থির রেখে জমে যায়
চোখের সবটুকু নীল
মাথা উঁচু করা মুহূর্তে মনে পড়ে
গন্তব্যের ফেলে-আসা দীর্ঘশ্বাস
মৃত্যু হলে মেঘ, ভুলে যাই অপঘাত, পাঠ করি দ্বন্দ্বের
নিরল সন্তরণ?
তখনও রূপ ছেড়ে দাঁড়ায়নি অন্ধকার
তখনও রূপ বুঝে ওঠেনি
আলো...
|
|
শিকড় থেকে দূরে
তুমি শিকড়
থেকে সামান্য দুরে আছো ঘুমহীন।
তোমার চোখে রক্ত আছে কালো, পুঁজ আছে নীল,
পোড়াক্ষতের মতো বেদনা আছে, তাই
ভালোবাসার স্তব্ধ জ্বলন বুঝো না।
পাহাড়ে হ্রদ ছিল গোপন, হ্রদের ছিল ঢেউ
ঢেউয়ের কৃত্রিম ডাক মেঘ জানে, রোদ জানে
তুমি জানো না।
তুমি শিকড় থেকে
সামান্য দূরে... |
সোমবার
একদিন কোথা থেকে জানালা ভেঙ্গে
সেই কালো মেঘ আছড়ে পড়ল...
ভেঙ্গে পড়ল অঝোর ধারে... বৃষ্টি...
বৃষ্টির নাম ছিল .....ক্যানসার
কালো বৃষ্টিতে সেই ভেজা চেহারা মায়ের
সব সাদা হয়ে গেল...পরে রইলাম
আমরা... রীতা আর সম্রীতা...
|
গাছ
আপাদমস্তক আমি বৃষ্টি-পরিবাহী
তুমি শৈলচূড়া-মেঘ
পরিচলন বায়ুর অপেক্ষায় ঝুলে আছো থির
উঠোনে উঠেছে ঝড়-ধুলোর কুজ্জটিকা
মেঘছায়া প্রবাহিত চাতকের ধ্যানে
তাক করে আছি দৃষ্টি, দ্বিধাযুক্ত দেহ
কৃপা করো যদি ওগো সহমর্মী মেঘ
প্রস্তুত রেখেছি আমার ধমনী ও শিরা
অঙ্গ ভরে নেবো তোমার স্পর্শবিদ্যুৎ
ভালো তো লাগে না আর এই
গ্রীষ্মভার...
|
|
প্রণোদনা
মার খেয়ে খেয়ে মুমূর্ষ মুখের
রেখা-অনুরেখা
ফুটিয়ে তুলছি ইজেলে-তুলিতে
আর কিছু গুমরানো গান
অবিকল অনুবাদ করি ঘোরগ্রস্ত রাত্রিদিন
আমার আঙুল থেকে বিকিরিত অতি নীল আলো
লীন হয়ে অস্তসূর্য পটভূমিকায়
তৈরী করে যে-বর্ণলিবিভা
নদীর আবহ মেখে গৃহগামী জুটিদের
মুখে...
|
অধ্যাস
দিবাগত দহনান্তে উপবিষ্ট
কৃষ্ণদ্বৈপায়ন
মৃদু মৃদু নথ আর নোলকের চিত্র অঙ্কনের ইচ্ছা বক্ষে-
বুকেরও মাঝারে মনে, মনে মনে
মিতিনের মুখ থেকে উৎসারিত এলাচির ঘ্রাণ
তপোবন অধিকৃত করে নিলে ধ্যান টলে ওঠে
অবদমনের অর্গল খুলে ফেলি এই মাতোয়ালা রাত্তিরে
জেগে ওঠে সান্দ্রমন্দ্র শ্রাবণ নির্ঝর
গাছের গতরে ছিল এত প্রতারনা
বুঝি নাই আগে
নোখপটে ভাসে তার আবছা শরীর
শরমের শতস্থান খুলে খুলে পড়ি এই নিগৃঢ় নিরলে
বিমূর্ত ব্যঞ্জনা কিছু টুকে রাখি ধুতুরা-অধ্যায়ে
আদতে অধীত সবি অরূপ অধ্যাস
সর্ব বাজি ধরে খেলি পাশা কোন শকূনির শাপে |
সংলাপ ৭
বিজ্ঞাপিত করি বিমল প্রস্তাবনায় নিগূঢ়ের অতলান্তে আমার
হারানিয়া গান; সে তো লাবণ্যের সংস্পর্শে তলানির সঙ্গীত
চৈতন্য জাগরিত হলে দেখি বড় বেশি একা, পশ্চাতে নিপুণ
এ হস্ত রিক্ত, ব্যাকুলিত
জানি যায় পাতা হস্ত দুরন্ত ওইখানে ঐশ্বর্য্যে যে আমাকে
ভুলায় সংস্রবে তার এ হৃদয় হরষে পাপড়ি মেলে সে অঢেল
প্রজ্ঞাবান...
.........................................................
|
........................................................... |
প্রবাসীর ব্যথা
আজকে সকাল থেকেই
কেন জানিনা আমার বুকের ভিতরটা কেবল হু হু করছে,
খালি মনে পড়ছে-
সেই ছেলেবেলার দোলের মেলা
সীমাহারা সেই মাঠ
যেখানে একটা ছোট্ট ছেলে সারাদিন শুধু খেলে বেড়াত,
তোমার সেই শীতল গাছে হাওয়া
আমার সেই চেনা মাটির গান সব
সবকিছু...
...................................................................... |
খোলা চিঠি
উন্মত্ততা কালান্তরে পেয়ে গেলে ভাষা
রোধের সাম্পান ভিড়ে মন যমুনায়, আগে না
জানি নচেৎ বধিরের ভূমিকায় হতো বাতচিঃ
অভিমানে যাবে সে বালক ... আমি জ্বলিনি
কামনা-জলে
আর প্রাপ্তি ঘটে অন্য কিছু অন্য সুরায় সে
পঙ্খি মন-মনিয়া, ওই সুদূরের টান বাজে
বেহালায় এমনি বিড়ম্বনা সখা বড় দুখ্
মনে স্রোতস্বিনী জলে ভেসে যাবে যত
ভেলা অধমের লাশ হবে লখিন্দর
ধারাবাহিক গল্প
*
রবিবারের রং কি?
শুভময়ের সুখের
ট্রেন ভুতের কিলে লাইনচ্যুত হয়ে গেলো। খাদের পাশে চাঁদের
ডাকে ফিরে এলো সে কোলকাতায়, ঘুরে দাড়ালেও ক্ষতি কিছু ছিল
না তবু ফিরে এলো একাকী অনুরাধার আয় আয় ডাকে। ভেন্যু:
কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, ঝোপের ছায়ায় খোলা মাঠের ঘাস।
দীর্ঘতম পাঁচটি বছর পর এই দেখা হওয়া। শুভময় তাকিয়ে থাকে
অনুরাধার চোখে চোখ রেখে। ফুরিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে না এই
মুহূর্ত। কিছু শুনতে চায় না, যেতে চায় না কোথাও। শুধু
তাকিয়ে থাকতে ভালো লাগে অনুরাধার দুচোখ থেকে বেরিয়ে আসা
সাংঘাতিক সুন্দর বিপজ্জনক এক জোছনার দিকে। শুভময়ের কোনো
বক্তব্য নেই, অনুরাধার কিছু বলার আছে...
*
পৃথিবীলোক
হিমিকা,
----পৃথিবীটাকে আমরা বাসযোগ্য করতে চেয়েছিলাম। অন্যদের কথা
জানি না, তুই তো চেয়েছিলি। তুই যাকে বলতিস স্বপ্নের আবাস।
ভাবছিস হলো না? কোন কিছুই কারো জন্যে থেমে থাকে না হিমিকা!
জানি আর কেউ যাবে না, তবে স্বপ্ন যারা দেখে সেই স্বপ্ন
স্বার্থক করার দায়ও তাদের ওপরেই বর্তায়। তাই কেউ না গেলেও
আমাকে যেতে হবে সেখানে । প্রায়শ্চিত্তের এর চেয়ে উত্তম পন্থা
আর কিছু খুঁজে পাইনি। ভালো থাকিস, ভালোবাসা নিস, হৃদয়ের সকল
ভালোবাসা তোর জন্যে। তুই না চাইলেও তোরই জন্যে...
*
*
একাধিক একা
ঝুমাকে কথা দিয়ে
এসেছিলাম পুরীতে এসে প্রথম লেখা কবিতা সঙ্গে দিয়ে চিঠি লিখব।
কবিতাও লেখা হচ্ছে না, তাই চিঠিও না। আমি চিরকালের আলসে। এখানে
এসে যেন আলসেমীটা বেড়ে গেছে। ঝড়ের মত সমুদ্রের হাওয়ায় কেবল
ছুটীর গন্ধ।প্রথম দু-দেখার দেখে নিয়েছি। দেখে নিয়েছি বলা ভুল,
আমার সঙ্গীরা দেখে নিয়েছে। আমি কেবল বিছানায় গড়িয়ে কাটাচ্ছি।
বয়ে এনেছি খান তিনেক শারদীয়া সংখ্যা। একটাও ছুঁইয়ে দেখা হয়নি।
ঝুমাকে এতদিন দেখতে পারছি না বলে একটা মনঃকষ্টও আছে।
অনেকটা সময় হোটেলের ঝোলানো
বারান্দায় ডেক চেয়ারে বসে থাকি। নিস্পলক তাকিয়ে থাকি সমুদ্রের
দিকে। ঢেউ গুনি। গুলিয়ে গেলে আবার প্রথম থেকে গুনি...
*
*
সুখের
লাগিয়া
আমাদের
মায়ের সুখের সংসার এক উন্মত্ত দৈত্যের মুগুরের আঘাতে চুরমার
হয়ে গেল। আমরা চিরকালের জন্য অন্ধকারে নিক্ষিপ্ত হলাম। আমার
বাবা সংসারের সবটুকু আলো , সবটুকু আনন্দ সঙ্গে করে নিয়ে গেলেন।
আমাদের বাড়ি শূন্য, আমাদের ঘর শূন্য। এত আত্মীয়স্বজন শুভার্থীর
মাঝে আমরা যেন এক নির্জন দ্বীপের বাসিন্দা। আমার তো বোঝার বয়স
ছিল না। তবুও মনে হট তিনি আবার আসবেন; রোজ বিকেলে যেমন আসতেন।
আমার ভাই বুঝেও বিশ্বাস করতে চাইতেন না। তিনি ভাবতেন একদিন না
একদিন তিনি আসবেন। না এসে কি পারেন? কত দিন তিনি আমাদের ছেড়ে
থাকবেন? কিন্তু তিনি কোনদিন আর একটিবারের জন্যও এলেন না...
প্রবন্ধ
নারীকুলে রাধারমণ
নারীদের বিষয়ে মনু বলেছেন: পিতা রক্ষতি কৌমারে ভর্ত্তা রক্ষতি
যৌবনে/রক্ষতি স্থবিরে পুত্রা স্ত্রী স্বাতন্ত্র্য মর্হতি॥ (নবম
অধ্যায় শ্লোক ৩)... অর্থাৎ কুমারী অবস্থায় পিতা রক্ষা করবে,
যৌবনে রক্ষা করবে স্বামী,
বার্ধক্যে রক্ষা করবে পুত্র,
স্ত্রীদের কখনোই স্বাতন্ত্র্য দেওয়া যাবে না। মনুর শ্লোকগুলির
রচনাকাল-নির্ণয়ের দুরূহতা স্বীকার করেও পণ্ডিত মানে অনুমান
করছেন,
এগুলোর বিকাশ ঘটেছে খ্রিষ্টপূর্ব ২০০ থেকে ২০০ খ্রিস্টাব্দ
পর্যন্ত। এরপর কয়েকটি শতক চলে গেল। রাধারমণ
যখন তার গানে এই
শ্লোক নিয়ে আসবেন তখনও কি মনুশ্লোক-উক্ত এই ধারণার পরিবর্তন
হয়েছে?
...
*
*
অনন্তের সন্ধানে এক বিভোর ধ্যানী কবি
ষাট দশকে মহাদেব সাহার অভিষেক গীতল প্রেমের কবিতা রচনার মধ্য
দিয়ে। তিনি রচনা করেছেন সমাজ ও মানুষের রূপান্তর বিষয়ে তার
নিজস্ব উপলব্ধি। সমকালীন ঘটনাবলী,
স্মৃতি,
আনন্দ-বিষাদ ও কাতরতার প্রতিধ্বনি তার কবিতায় অনুরণিত
হয় নিজস্ব কণ্ঠ স্বরেঃ
মা আমাকে বলেছিলো- যেখানেই থাকিস তুই
বাড়ি আসবি পয়লা বোশেখে। পয়লা বোশেখ ভালো দিন
এদিন ঘরের ছেলে বাইরে থাকতে নেই কভু,
বছরের এই একটি দিনে
আমি সিদ্ধিদাতা গণেশের পায়ে দিই
ফুলজল,
কে বলবে কী করে কার বছর কাটবে
বন্যা,
ঝড় কিংবা অগ্নিকান্ড কতো কি ঘটতে পারে,
তোরতো কথাই নেই...
*
*
যাদের
রক্তে মুক্ত এ দেশ
*
*
এবারের কবিতা ই-বুক
উড়াল হাওয়া
স্বপ্ন ও আশায় মানুষ বাঁচে। আপন মহিমা ও সৃজনশীলতায় শ্রেষ্ঠ
সময়কে ধারণ করে। নিজস্ব সত্তা ও চেতনাবোধ ক্রিয়া শীল হতে হতে
সারাক্ষণ স্নেহ-কোমল-আত্মায় ঘুরে। আত্মজিজ্ঞাসা, সীমাবদ্ধতা,
আত্মপ্রেরণা, উদ্দেশ্যহীন হলেও আশারা ফুর্তি করে। মানুষ তাঁর
নিজস্ব ধ্যান-ধারণা, দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কি ভাবে?… নাকি প্রতিটি
মুহূর্ত তাঁকে প্ররোচিত করে সার্বিক সময়ের অভিজ্ঞতা ঘিরে
মানুষ এ প্রকৃতির অংশ। পৃথিবীর সকল আরোহণ, গ্রহণ, বর্জন, গঠন,
প্রকাশ ও প্রতিফলন মোহের দিকে টানে। মানুষের চিন্তা সারাক্ষণই
আধুনিক, ইচ্ছা প্রস্তুতি পর্বের মতো আশা বুনে। জীবন প্রবাহের
প্রতিটি স্পর্শানুভব সে লিখে রাখতে চায় নিজস্ব চিন্তাশৈলী ও
অভিজ্ঞতায়। সন্দেহ নেই প্রতিটি মানুষ তাঁর মনের ভেতর রোমান্টিক
কবি; সে রোমান্টিকতার ভেতর নিজেকে তরঙ্গের মতো ভাসায় কল্পনার
স্বপ্নপাহাড় সাজায়। ভাবি— বেঁচে থাকার প্রতিটি মুহূর্ত কবিতার
মতো; কবিতাই পারে যাপিত জীবন বদলাতে...
*
*
*
*
আর্কাইভ
Best view
with Microsoft Internet Explorer font download link
http://omicronlab.com/download/fonts/SolaimanLipi_20-04-07.ttf |